সেই সাইকেল

North 24 Parganas News: ২৮ বছর ধরে দেখা ছোট্ট মেয়েটার এমন করুণ পরিণতি! কাকার মনে ভাসছে অন্য কোলাজ

উত্তর ২৪ পরগনা: ২৮ বছর ধরে তিনি কর্মরত স্কুলের ড্রেস তৈরির কারখানায়। ছোটবেলায় সাইকেলের সামনের রডে বসিয়ে স্কুলের ব্যাগ নিজের কাধে নিয়েই নার্সারি স্কুলে পৌঁছে দিতেন ছোট্ট মেয়েটিকে। মালিকের মেয়ে হলেও, ছোট থেকেই গড়ে ওঠে পারিবারিক সম্পর্ক। ছিল না কোনও বায়না, ছোট থেকেই শান্ত স্বভাবের সেই মেয়েটি যে বড় হয়ে আজ গোটা দেশ তাঁকে এভাবে চিনবে তা হয়ত কল্পনাতেও আনতে পারেননি আরজিকর কাণ্ডে নির্যাতিতার বাড়িতে কাজ করা পেশায় দর্জি এই কর্মী।

সম্পর্কে কাকা হলেও ছোটবেলা থেকেই সকলের ডাক শুনে তাঁকেও দাদাই ডাকতেন নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসক। তাঁর মুখে কখনই ম্যাডাম ডাক পছন্দ ছিল না চিকিৎসক তরুণীর, তাই নাম ধরে ডাকার কথাই বার বার বলত। কারণ ছোটবেলা থেকেই তাঁকে বড় হতে দেখেছে সম্পর্কের দাদা ডাকা ওই দর্জি কর্মী। এখনও তিনি সোদপুরে আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতা তরুণীর বাড়ির নীচের তলায় বিভিন্ন স্কুলের ড্রেস তৈরির কাজ করেন। নির্যাতিতার বাবার এই ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরেই কাজের সুবাদে, দিনের বেশিরভাগ সময়েই এই বাড়িতে কাটে তাঁর। খবরটা শুনে কিছুতেই যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না তাঁর। ছুটে গিয়েছিলেন আরজি করে।

আরও পড়ুন: লটারিতে ১ কোটি টাকা জিতলে ‘ট্যাক্স’ দিতে হয় কত…? ঘরে আনবেন ‘কত’ টাকা? চমকে যাবেন শুনলে!

ছোটবেলা থেকে দেখা মেয়েই হয়ে উঠেছিল পারিবারিক ডাক্তারও। এমন নৃশংস ঘটনার কথা শুনে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবার ব্যবসার সেই কর্মীর পরিবারের সকলেই। শুধু তিনিই নন, প্রথম চিকিৎসক হিসেবে স্বীকৃতি মেলার পর এক প্রতিবেশী ওষুধের দোকান চালু করায়, তাঁর বাড়িতে গিয়ে চেম্বার করার আবেদন জানান পাড়ার তরুণী চিকিৎসককে। তাতে রাজি হয়েই নিয়মিত নির্যাতিতা রোগী দেখা শুরু করেন বাড়ির কাছের এই মেডিক্যাল ক্লিনিকে। রোগী থাকলেই একবার ফোন করলেই হাজির হয়ে যেতেন দ্রুত। এখনও সেদিনের কথা ভাবলে চোখের কোণে চলে আসে জল। জানালেন প্রতিবেশী মেডিক্যাল ক্লিনিকের মালিক গোবিন্দ মালাকার।
শারীরিক সমস্যা থাকায় প্রতিবাদে অংশ নিতে না পারলেও মানসিকভাবে নির্যাতিতা পরিবারের পাশে থেকেই প্রতিবাদে শামিল তিনিও। এরকমটা হওয়ার কথা ছিল না আক্ষেপ প্রতিবেশী এই প্রবীণের গলাতেও। ঘটনার দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও আজও যেন পাড়ার সেই চিকিৎসক তরুণীকে ভুলতে পারছেন না কেউই। পরিবারের পাশাপাশি তাই বিচারের দাবিতে সরব সকলে।

Rudra Narayan Roy