একটা পাউরুটি আর দুধের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হত জোকোভিচকে! আকাশ ছুঁয়ে অতীতের দিনগুলো মনে পড়ছে চ্যাম্পিয়নের

#মেলবোর্ন: মেলবোর্ন পার্কে গ্রিক তারকা সিৎসীপাসকে হারিয়ে সোজা গ্যালারিতে উঠে গিয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচ। সেখানে নিজের টিম এবং বাড়ির লোককে জড়িয়ে ধরে সেলিব্রেট করার পর ফিরে এলেন কোর্টে। তারপর প্রায় দু মিনিট মুখ চেপে কান্না। টিভিতে যারা খেলাটা দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন ২২ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের পর সার্বিয়ান তারকার আবেগ।

ম্যাচ শেষে জোকোভিচ জানিয়েছেন ইতিহাস তৈরি করে তার মনে পড়ে যাচ্ছিল ছোটবেলার কষ্টের দিনগুলো। একটা পাউরুটি এবং দুধের জন্য কয়েক ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হত। সঙ্গে থাকতেন দাদু। সেই দুধ এবং পাউরুটি না পেলে খাওয়াই হত না। তখন ভাবতেও পারেননি এই জায়গায় পৌঁছতে পারবেন। কিন্তু স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি বড় টেনিস খেলোয়াড় হওয়ার।

প্রথমদিকে তার খেলায় ফিনিশিং ছিল না। নিজেকে তৈরি করেছেন ধাপে ধাপে। এখন টেনিস ইতিহাসের অন্যতম কমপ্লিট তারকা জোকার। ভারতের সোমদেব বর্মনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নোভাক জানিয়েছেন হয়তো ছোটবেলার ওই কষ্টের দিনগুলো দেখার কারণেই মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে গিয়েছিলেন। তখন থেকেই চরিত্র তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

তবে শুধু কোর্টের চ্যাম্পিয়ন নন তিনি। তার ফাউন্ডেশন সারা পৃথিবী জুড়ে বহু মানুষকে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে তার স্ত্রী ইয়েলেনা একটা ভূমিকা পালন করে থাকেন। নোভাক মনে করেন সার্বিয়ার মত যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে উঠে এসে এই জায়গায় পৌঁছানো হয়তো কঠিন ছিল। কিন্তু পরিবারের মোটিভেশন এবং দেশের মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসার জন্য সেটা সম্ভব হয়েছে তার।

তাই যখন তার নিজের দেশে বন্যা হয় অথবা অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গলে আগুন লাগে, যখন গরিব বাচ্চা টেনিস খেলোয়াড় টাকার অভাবে সরঞ্জাম কিনতে পারেন না তখন তিনি এগিয়ে আসেন। ঈশ্বর তাকে প্রচুর টাকা দিয়েছেন। কিন্তু সবাই তার মত ভাগ্য নিয়ে আসে না। নোভাক জোকোভিচ মনে করেন পরিস্থিতি যে রকমই হোক লড়াই ছাড়া উচিত নয়।

তার দেশ সার্বিয়ায় টেনিসের ইতিহাস খুব একটা গর্ব করার মতো নয়। তাই তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতি তার উপদেশ কোথা থেকে আসছ, কিছু আসে যায় না। শুধু নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে। আর নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি শিখেছেন সাফল্যে সবাই পাশে থাকে। তাই সফল হতেই হবে।

তার জন্য রাত, দিন, ঝড়, জল কোনও বাধা হতে পারে না। এটাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মূল মন্ত্র। একটা দুটো সাফল্য পেয়ে মাথা ঘুরে গেলে হবে না। এমন কিছু করে যেতে হবে যেটা পৃথিবীতে আগে কেউ করেনি। এটাই চ্যাম্পিয়ন নোভাক জোকোভিচের সাফল্যের রেসিপি।