পেঁচা 

স্কুলের বকুল গাছে ‘ওরা’ কারা! ছাত্র-শিক্ষকরা মিলে যা করেছেন, মন ভাল হবে শুনলে

পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার এক স্কুলের মধ্যে দেখা মিলল বেশ কয়েকটি পেঁচার। পাখিদের সুবিধার জন্য এই স্কুলে যা করা হয়েছে, দেখলে অবাক হবেন আপনিও।

পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের একটি স্কুল। জানলে অবাক হবেন,  তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এই স্কুলে আস্থানা বেঁধেছে এই পেঁচার দল। তাদের সুবিধার ও সুরক্ষার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে স্কুল কতৃপক্ষও। পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের এই স্কুলের নাম মাঝিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়।

জানা গিয়েছে, প্রায় তিন বছর আগে এই স্কুলেরই আবাসিক হোস্টেলের মধ্যে বাসা বাঁধে এই পেঁচাগুলি। পরবর্তীকালে স্কুলের মধ্যেই একটি বকুল গাছে আশ্রয় নেয় তারা।

আরও পড়ুন- কুকুরের আতঙ্কে উড়েছে ঘুম! দুদিনে ২৫ জন আক্রান্ত উত্তরপাড়ায়…

তার পর থেকেই সেখানেই রয়েছে পেঁচাগুলি। এই প্রসঙ্গে মাঝিগ্রাম বিশ্বেস্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “বিদ্যালয়ের পরিবেশ যাতে নির্মল করে তোলা যায় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করেছি। আমরা এই বকুল গাছটা খুব সুন্দর ভাবে বাঁধিয়েছিলাম। তিন বছর ধরে লক্ষ্য করি বিদ্যালয়ের যে আবাসিক হোস্টেল আছে সেখানে বেশ কিছু পেঁচা বসবাস করছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা মিলে ঠিক করেছিলাম ওদের কোনও রকম ক্ষতি বা বিরক্ত করব না। সেই থেকেই ওরা বিদ্যালয়ের মধ্যেই আছে। কিন্তু এবছর লক্ষ্য করলাম, বকুল গাছেই ওরা বসবাস করছে। এটা আমাদের দেখে খুবই ভাল লাগছে। অনেকেই এই পেঁচা দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন।”

জানলে আরও অবাক হবেন, কেবলমাত্র পেঁচাগুলির জন্যই নয়, সার্বিকভাবেই পাখিদের জন্য এই স্কুল পদক্ষেপ নিয়েছে। উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্দিকে সবুজের সমারোহ রীতিমতো নজরকাড়া। এই স্কুলটির মধ্যে রয়েছে একাধিক খণ্ডবন।

সেই খন্ডবনের একাধিক গাছে স্কুলের তরফে হাড়ি বাধা হয়েছে পাখিদের সুবিধার্থে। যার জেরে পেঁচাদের পাশাপাশি একাধিক পাখির বাসস্থান হয়ে উঠেছে মাঝিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়।

আরও পড়ুন- গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত! প্রতিবাদে যা করল হনুমানের দল! চাঞ্চল্যকর ঘটনা গোঘাটে

এই প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আরও জানান, ‘শুধু পেঁচাদের লক্ষ্য রাখা হয়েছে তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ধরনের পাখি যাতে বসবাস করতে পারে সে কারণে সম্পূর্ণ বিদ্যালয় জুড়ে বিভিন্ন গাছে হাড়ি টাঙানো রয়েছে। এমনকী আমাদের বিদ্যালয়ের তরফ থেকে পায়রাদের থাকার জন্যেও ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তাদের নির্দিষ্ট সময়ে খেতেও দেওয়া হয়।” স্কুলের চতুর্দিকে একদিকে যেমন সবুজের সমারোহ, ঠিক তেমনই রয়েছে মন ভাল করা পাখিদের ডাক। শহরের কোলাহল থেকে বেশ কিছুটা দূরে মফস্বল লাগোয়া এলাকায় অবস্থিত মাঝিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সার্বিক এই রূপ দেখলে ভাল লাগবে যে কোনও মানুষের।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী