লাইফস্টাইল Parenting Tips: প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তানের মধ্যে বয়সের ‘তফাৎ’ কত হওয়া উচিত…? ব্যবধান ‘কত’ হলে ‘পারফেক্ট’ জানেন? এখনই উত্তর জানা মাস্ট! Gallery October 4, 2024 Bangla Digital Desk সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনার ধারণাও বদলে যাচ্ছে। মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘরে বাইরে সাফল্যের চরম উচ্চতা ছুঁয়ে চলেছে। তাই তাঁরা আজ আর ঘরবন্দি নন। বরং স্বামীর কাঁধে কাঁধ রেখেই চলেন প্রায় প্রত্যেক স্ত্রী। তাই ঘরে ঘরে এখন স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই চাকরি করা খুবই সাধারণ ব্যাপার। বিশেষ করে মেট্রোপলিটন শহরে এমন পরিস্থিতি বেশি দেখা যায়। যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়েই চাকরি করেন, পরিবার পরিকল্পনা এবং কেরিয়ারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। স্বামী-স্ত্রীর ব্যস্ত পেশাগত জীবনের কারণে সমাজের অনেক প্রতিষ্ঠিত বিষয়ই আজকাল বদলে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলি ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয়ই হতে পারে। কিন্তু, আজ আমরা আপনাদের সঙ্গে পরিবার সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিষয় সংক্রান্ত একটি ছোট্ট প্রশ্ন নিয়ে এই প্রতিবেদনে আলোচনা করছি। প্রশ্ন হল আমরা যদি নিজেদের পরিবার পরিকল্পনা করি, তাহলে দুই সন্তানের বয়সের ‘আদর্শ’ ব্যবধান কত হওয়া উচিত? আসলে কেরিয়ার গড়ার তাগিদে আজকের তরুণেরা বেশি বয়সে বিয়ে করে আবার বেশি বয়সে সংসার পরিকল্পনা করছেন। ‘৩০ প্লাস’ বয়সে পিতামাতা হওয়া একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময় একজন ব্যক্তি তাঁর কর্মজীবনে অগ্রগতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। এমন পরিস্থিতিতে, জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে, দম্পতিরা অনেক সময় একটি সন্তানকে দত্তক নেন কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানের পরিকল্পনা স্থগিত রাখেন। আর তারপরে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় তাঁরা কর্মজীবনে স্থায়ী হওয়ার পরে দ্বিতীয় সন্তানের পরিকল্পনা করতে চান। অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে সন্তান লাভের জন্য পরিকল্পনা করেন তাঁরা। আজ আমরা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞের সঠিক পরামর্শ ঠিক কী তা জেনে নেব এই প্রতিবেদনে। একটি নিখুঁত পরিবার পরিকল্পনা কী? প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তানের বয়সের ব্যবধান কত হওয়া উচিত? কখন আপনার অভিভাবক হওয়া উচিত যাতে আপনি আপনার পেশাগত জীবনে কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হন? এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়ে আমরা নিউজ 18 -এর তরফে কথা বলেছি সি কে বিড়লা হাসপাতালের সিনিয়র গাইনোকোলজিস্ট ডাঃ অরুণা কালরার সঙ্গে। চিকিৎসা বিজ্ঞান ও সমাজে বলা হয় দুই সন্তানের বয়সের মধ্যে অন্তত তিন বছরের ব্যবধান থাকতে হবে। ভারত সরকার তার অনেক পরিকল্পনায় একজন মহিলার সুস্থ মা হওয়ার জন্য দুই সন্তানের বয়সের মধ্যে অন্তত তিন বছরের ব্যবধানের কথা বলে। তবে এইটাই যে লক্ষ্মণ রেখা, তা কিন্তু নয়। সময় বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে মানুষের চিন্তাধারা। অগ্রাধিকার পরিবর্তন হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রশ্ন হল সব দিক বজায় রেখে, শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রেখে ঠিক কত বছরের মধ্যে আপনার সম্পূর্ণ পরিবার পরিকল্পনা সম্পন্ন করা উচিত? এ বিষয়ে স্পষ্ট করা হলে ডাঃ অরুণা কালরা বলেন, একজন নারীকে সুস্থ মা হতে হলে তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে অন্তত দুই বছরের ব্যবধান থাকতে হবে। তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও নিয়ম নেই। তিনি আরও বলেন, একজন নারীকে গর্ভাবস্থায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তারপর শিশুর জন্মের পর তাঁকে খাওয়ানো, দেখভাল এবং যত্ন নেওয়ার জন্যও অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। এমতাবস্থায়, ডাঃ অরুণা কালরা বলেন, “নতুন মায়ের সেরে উঠতে কিছুটা সময় লাগে। দ্বিতীয়ত, নারীর শারীরিক অবস্থাও দেখতে হবে। বুকের দুধ খাওয়ানোর কারণে নারীর শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। সুষম খাবারের পাশাপাশি তাঁকে এই সময় সাধারণত অনেক সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে, একজন ডাক্তার হিসাবে, আমরা প্রথম এবং দ্বিতীয় গর্ভাবস্থার মধ্যে কমপক্ষে দুই বছরের ব্যবধানের পরামর্শ দিই।” অন্যদিকে, বর্তমানে অনেক দম্পতি আছেন যারা অল্প সময়ে তাদের সম্পূর্ণ পরিবার পরিকল্পনা করতে চান। তাদের কেরিয়ারে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকে। সেক্ষেত্রে তাঁরা দুটি সন্তান বা যমজ সন্তান নিতে চান এবং এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে পর পর তাদের বড় করতে চান। এর ফলে একটা সুবিধা এই যে শিশু দুটিকে একসঙ্গে বড় করা হয়ে যায়। তাদের তাতে খরচ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হবে। আবার দুই সন্তানের মধ্যে একটা ভাল বন্ধন তৈরি হবে। তারা ভাইবোনের চেয়ে একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠবে বেশি করে। আসলে পরিবর্তিত জীবন চর্যায় এই উভয় পরিস্থিতিই স্ব স্ব দিক থেকে সঠিক। তাই এই প্রসঙ্গে ডঃ অরুণা বলেন, প্রত্যেক মা-বাবাকে নিজেদেরই বেছে নিতে হবে তাঁরা কী চান। তিনি আরও বলেন, আপনি যদি সুস্থ থাকেন। আপনি যদি সুষম খাবার খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি গ্রহণ করেন তবে আপনি সন্তান ধরণের সময়ের এই ব্যবধান কিছুটা কমাতেই পারেন। ডক্টর অরুণার মতে, অনেক গবেষণায় এও বলা হয়েছে যে দুটি শিশুর মধ্যে ২৭ থেকে ৩২ মাসের ব্যবধান তাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। এর ফলে মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ডক্টর অরুণা আরও বলেন, দুই শিশুর বয়সের ব্যবধান যত কম হবে, তাদের মধ্যে মারামারি-ঝগড়া তত বেশি হবে। তবে, তারা এর পাশাপাশি বড় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধাও পায়। তারা একে অপরের খুব কাছাকাছি থাকে। একইসঙ্গে তাদের মধ্যে অনেক ইতিবাচক সামাজিক দক্ষতা গড়ে ওঠে যার ফল সুদূরপ্রসারী।