প্যারিস: ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তারপরেও অংশ নিয়েছেন অলিম্পিক্সে। এমনই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ব। মহিলাদের ফেন্সিংয়ের প্রথম ম্যাচে বিশ্বের ১০ নম্বর এলিজাবেথ টারটাভোস্কিকে পরাজিত করেন মিশরীয় নাদা হাফেজ। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার জিওন হাউংয়ের কাছে হেরে যান। তারপরই একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নিজের গর্ভাবস্থার খবর জানান নাদা।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ফেন্সিংয়ের মতো খেলায় অংশগ্রহণ! নাদার পোস্টের পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে ক্রীড়ামহলে। অনেকেই তাঁর লড়াকু মানসিকতার প্রশংসা করেছেন। ফেন্সিংয়ের প্রতি তাঁর আবেগের কথা ঘুরছে ক্রীড়াপ্রেমীদের মুখে মুখে। প্রথম ম্যাচে টারটাকোভস্কির বিরুদ্ধে ১৫-১৩ ব্যবধানে জিতেছিলেন নাদা। রাউন্ড অফ ১৬-এ জিওন হাউংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ হারলেও তাঁর আগ্রাসী মনোভাব নজর কেড়েছে দর্শকদের।
View this post on Instagram
ইনস্টাগ্রামে নাদা হাফেজ লিখেছেন, “পোডিয়ামে কী দেখছেন? দু’জন খেলোয়াড়? ওঁরা আসলে তিনজন। আমি, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আর এখনও পৃথিবীর মুখ না দেখা আমার ছোট্ট সন্তান। চ্যালেঞ্জগুলো আমি আর আমার অনাগত সন্তান, দু’জনেই সমানভাবে মোকাবিলা করেছি। শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, “গর্ভাবস্থা রোলারকোস্টারের মতো। সবসময় কঠিন। জীবন ও খেলার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার লড়াইটাও সহজ নয়। কিন্তু এটা জরুরী। আমি এই পোস্ট লিখছি ১৬ রাউন্ডে আমার জায়গা নিশ্চিত করতে। আমি গর্বিত।’’
স্বামীর কাছ থেকে সবরকম সমর্থন পেয়েছেন নাদা। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মুক্তকন্ঠে সে কথা স্বীকার করেছেন তিনি। নাদা লিখেছেন, “আমার স্বামী @ibrahimihab11 সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। আমি ভাগ্যবান। পরিবারও সমর্থন করেছে। তাঁদের আস্থা এবং বিশ্বাসে ভর দিয়েই এতদূর আসতে পেরেছি। এবারের অলিম্পিক্স আমার কাছে একটু আলাদা। তিনবারের অলিম্পিয়ান এবার ছোট অলিম্পিয়ানকে বয়ে নিয়ে এসেছে।’’ নাদা ২০২৬ রিও অলিম্পিক্স এবং ২০২১ টোকিও অলিম্পিক্সেও মিশরের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। আসলে অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়া প্রত্যেক ক্রীড়াবিদের স্বপ্ন। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না কেউই। নাদাও তাই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই নেমে পড়েছেন মাঠে। ম্যাচ জিতেছেন, হেরেছেন। কিন্তু তাঁর হার না মানা মনোভাবকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা বিশ্ব।