ISRO প্রধান এস সোমনাথকে পুরস্কারে ভূষিত করল পিসি চন্দ্র গ্রুপ

PC Chandra Group Award Ceremony: ৮৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস, চন্দ্রযান-৩ মিশনের নায়ক ISRO প্রধান বিজ্ঞানী এস সোমনাথকে পুরস্কারে ভূষিত করল পিসি চন্দ্র গ্রুপ

কলকাতা: সম্প্রতি পিসি চন্দ্র গ্রুপের বার্ষিক জাতীয় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। একত্রিশতম বর্ষে পড়ল এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এই বছরের পিসি চন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. এস সোমনাথ।
ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশনের পিছনে বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর  অমিতাভ চন্দ্র, পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর উদয় কুমার চন্দ্র, পিসি চন্দ্র গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী এ.কে চন্দ্র, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী শ্রী সোমনাথ এস এবং পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের ডিরেক্টর উদীপ্ত চন্দ্র এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা।
ডঃ এস সোমনাথ একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী (এপেক্স গ্রেড) এবং ইসরো-এর মহাকাশ বিভাগের চেয়ারম্যান। তাঁর ৩৮ বছরের কর্মজীবনে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এই মহাকাশবিজ্ঞানী। সোমনাথ চন্দ্রায়ন লঞ্চ এর সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞের ভূমিকা পালন করেছেন। সচিব হিসাবে, তিনি জাতীয় মহাকাশ নীতির পরিচালনা করেছিলেন। ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে  প্রথম সৌরযান আদিত্য এল-১ মিশনের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং সাফল্য অর্জন করেন। তাঁর নেতৃত্বে দুটি নতুন উৎক্ষেপণ যান – স্মল স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল এবং টেস্ট ভেহিকল ভারতে চালু করা হয়েছিল এবং মিশনগুলি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল।
এস সোমনাথের নেতৃত্বে পুনঃব্যবহারযোগ্য লঞ্চ ভেহিক্যালের সফল অবতরণ পরীক্ষাটি ভারতের জন্য নিঃসন্দেহে আরেকটি বড় মাইলস্টোন ছিল। এই পুনঃপ্রবেশকৃত উইংড বডির স্বায়ত্তশাসিত অবতরণ প্রদর্শন বিশ্বের খুব কম দেশই সম্পন্ন করেছে।
২০১৮ সালের গোড়া থেকেই বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের পরিচালক, এবং ইসরো -এর প্রধান হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন সোমনাথ।  তাঁর নেতৃত্ব ভিএসএসসি প্যাড অ্যাবর্ট টেস্ট অর্থাৎ প্যাট, জিএসএলভি এম কে-৩ / চন্দ্রায়ন ৩  এর উৎক্ষেপণের মতোই উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
এর আগে লিকুইড প্রপালশন সিস্টেম সেন্টার-এর পরিচালক ছিলেন এই মহাকাশবিজ্ঞানী।  যেখানে তিনি সিএ ২০ ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন এবং সি২৫ এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার তত্ত্বাবধানে জিএসএলভি এমকে-৩ ডি-১ ফ্লাইটে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করানো হয়েছিল। তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ভারতের অ্যারোনটিক্যাল সোসাইটি, অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস, ইন্ডিয়ার ফেলো এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ অ্যাস্ট্রোনটিক্স এর একজন সদস্য  ছিলেন এস সোমনাথ।
পিসি চন্দ্র গ্রুপ ১৯৯৩ সাল থেকে এই বিশেষ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করে চলেছে। পিসি চন্দ্র গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত পূর্ণচন্দ্র চন্দ্রর স্মৃতিতে এই বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান হয়ে আসছে গত ত্রিশ বছর ধরে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতী ব্যক্তিত্বদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে মান্না দে (১৯৯৩) এর পরে প্রফেসর ইউ আর রাও (১৯৯৪), শ্রী সুনীল এম গাভাস্কার (১৯৯৫), শ্রীমতি পি.টি.  উষা (২০০৪), শ্রী মৃণাল সেন (২০০৪), গুলজার সাব (১৯৯৭), ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেব (২০০২), শ্রীমতি  অঞ্জু ববি জর্জ (২০০৭), শ্রী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (২০১১), শ্রীমতি হেমা মালিনী (২০১৩), পণ্ডিত হরি প্রসাদ চৌরাসিয়া (২০১৪), ড. কে. রাধাকৃষ্ণান (২০১৫), গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দ (২০১৬), নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী  (২০১৭), ড. দেবী শেঠি (২০১৯), শ্রী কপিল দেব (২০২১), ওস্তাদ আমজাদ আলী খান (২০২২), ম্যারি কম (২০২৩)।
 উক্ত অনুষ্ঠানে পি.সি.  চন্দ্র জুয়েলার্স-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, শ্রী অমিতাভ চন্দ্র বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠাতা পিতা প্রয়াত শ্রী পূর্ণ চন্দ্র চন্দ্রের স্মরণে আমাদের বার্ষিক পুরষ্কার অনুষ্ঠান পালন করে থাকি। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রবীণ এবং বহুমুখী কিংবদন্তিদের সম্মান করার সুযোগ পেয়ে থাকি আমরা।  এই বছর আমরা অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি ভারতের একজন সেরা বিজ্ঞানীকে অভিনন্দন জানাতে পেরে।  ডক্টর, এস সোমনাথ ভারতের মহাকাশ অভিযানকে গৌরবের শিখরে নিয়ে গিয়েছেন। আমরা নিশ্চিত যে ইসরো তার তত্ত্বাবধানে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাবে।  আমার আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা সকল উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও যাঁরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন।’