একটা সময় অবসরকালীন বিনিয়োগ বলতে পিপিএফ বা ইপিএফ-ই বোঝাত। তারপর ২০০৯ সালে আমজনতার জন্য চালু হল এনপিএস। এর সঙ্গেই বদলে গেল পুরো দৃশ্যপট।ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম বা এনপিএস: এনপিএস সরকার সমর্থিত পেনশন স্কিম। অবসর গ্রহণের পর আয়ের নিরাপত্তা দেওয়াই স্কিমের লক্ষ্য। এনপিএসের মাধ্যমে ইক্যুইটি, সরকারি বন্ড এবং সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যায়। আয়কর আইনের ধারা ৮০সি এবং ৮০সিসিডি-এর অধীনে কর সুবিধাও মেলে।পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিপিএফ: পিপিএফ হল সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বিকল্প। ১৫ বছরের লক ইন পিরিয়ড থাকে। মেয়াদ শেষে মেলে নিশ্চিত রিটার্ন। ধারা ৮০সি-র অধীনে করছাড় পাওয়া যায়। যাইহোক, পঞ্চম বছরের পর পিপিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে আংশিক প্রত্যাহারের সুবিধা পাওয়া যায়।এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফ: ইপিএফে কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়েই প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অবদান রাখেন। অবসরের পর সুদ সমেত সেই টাকা হাতে পান কর্মী। তবে শিক্ষা, বাড়ি তৈরি, চিকিৎসার মতো জরুরী পরিস্থিতিতে টাকা তোলার অনুমতি দেওয়া হয়। ইপিএফে বিনিয়োগ ধারা ৮০-সির অধীনে ট্যাক্স ডিডাকশনের যোগ্য।ইতিহাস: পিপিএফ এবং ইপিএফ বহু পুরনো বিনিয়োগ বিকল্প। নিরাপত্তা, নিশ্চিত রিটার্নের গ্যারান্টি এবং পরিচিতি রয়েছে। এনপিএস নতুন, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।রিটার্ন: এখানেই ইপিএফ এবং পিপিএফের চেয়ে অনেক এগিয়ে এনপিএস। ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা যায়। ফলে পিপিএফ এবং ইপিএফের সুদের হারের তুলনায় দীর্ঘমেয়াদে অনেক বেশি রিটার্ন দেয়।পারফরম্যান্স: পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, গত ১৫ বছরে পিপিএফ এবং ইপিএফের পারফরম্যান্সকে ছাপিয়ে গিয়েছে এনপিএস (২৫ শতাংশ ইক্যুইটি বরাদ্দ সহ)।ইক্যুইটি বিনিয়োগে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কমে যায়। ইক্যুইটি বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত রিটার্ন মুদ্রাস্ফীতিকে হারাতে পারে এবং অবসরকালীন বৃহত্তর কর্পাস তৈরিতে সাহায্য করে। তাহলে কী এনপিএস সবচেয়ে লাভজনক? এককথায় এর উত্তর হয় না।পিপিএফ এবং ইপিএফে এমন কিছু সুবিধা রয়েছে যা এনপিএসে নেই। যেমন পিপিএফে গ্যারান্টিযুক্ত রিটার্ন মেলে। ট্যাক্স সুবিধা পাওয়া যায়। আংশিক প্রত্যাহারের বিকল্পও রয়েছে। আবার ইপিএফে কর্মচারীর বেতন থেকেই অবদান কেটে নেওয়া হয়। গ্যারান্টিযুক্ত রিটার্ন এবং ট্যাক্স সুবিধাও মেলে।