পাঁচমিশালি Bengali New Year: পয়লা বৈশাখেই কেন হালখাতা করা হয়? এর মানেটাই বা কী? লুকিয়ে রয়েছে অজানা এক গল্প Gallery April 8, 2024 Bangla Digital Desk সামনেই পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে গোটা বাংলা। শুরু হবে বাংলা ১৪৩০ সাল। চৈত্র সংক্রান্তির পরের পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে নতুন বছর শুরু হয়। বাংলার ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রথম দিনটাকে হালখাতা হিসেবেও পালন করে থাকেন। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে হালখাতা। কিন্তু ব্যবসার খাতার নাম ‘হালখাতা’ কেন? শুধু হিসেবের খাতা হালনগদ করার আনুষ্ঠানিকতাই নয়, পয়লা বৈশাখে ব্যবসায়ীরা আয়োজন করেন হালখাতা। দোকানপাটে থাকে পরিপাটি সাজ। ফুল, মালা দিয়ে সাজিয়ে এ দিন দোকানে দোকানে গণেশের পুজো করা হয়। নতুন খাতার প্রথম পাতায় নতুন কিছুর সূচনার প্রতীক হিসেবে স্বস্তিক এঁকে শুরু হয় নতুন বছরের হিসেব নিকেশ। মানুষ একসময়ে ছিল যাযাবর। লাঙলের ব্যবহার শেখার পর, মানুষ এক জায়গায় স্থায়ী বসবাস শুরু করল। সেখানেই চাষ করে ফসল ফলাল। আর এই ফসলের বিনিময়ে অন্য জিনিস নেওয়া অর্থাৎ বিনিময় প্রথার মধ্যে দিয়ে চলতে লাগল তাদের জীবনধারা।একজনের দায়িত্ব ছিল, এই বিনিময়ের কাজটি করার। এখান থেকেই শুরু হল দোকানদারির চল। দ্রব্য-বিনিময়ের হিসেব রাখা শুরু হল খাতায়, আর সেই খাতার নাম হল ‘হালখাতা’। ৩৬৫ দিন, অর্থাৎ একবছর পার হওয়ার পর, হিসেব-নিকেশ শেষ করে, পুরনো খাতা বন্ধ করে, নতুন খাতা খোলার দিন হিসেবে বাছা হল পয়লা বৈশাখকে। ফলে, পয়লা বৈশাখের উৎসবের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে হালখাতার কোনও সম্পর্ক নেই। কাকতালীয় ভাবে দিনদুটো এক হয়ে গিয়েছে। অনেকে দাবি করেন, ‘হাল’ শব্দটি নাকী সংস্কৃত ও ফরাসি-দুটো ভাষা থেকেই এসেছে। সংস্কৃতে ‘হল’ শব্দের মানে লাঙল, তা থেকে বাংলায় ‘হাল’ এসেছে। ফরাসি থেকে আসা ‘হাল’ শব্দটির অর্থ নতুন। কিন্তু এর সঙ্গে ইতিহাস ঠিক কিভাবে জড়িয়ে? পুরনো কলকাতায় ইংরেজি নববর্ষের উৎসব উপলক্ষে বেশ ঘটা হত। কবি ইশ্বচন্দ্র গুপ্ত ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে লিখছেন, “খৃস্ট মতে নববর্ষ অতি মনোহর। প্রেমাননন্দে পরিপূর্ণ যত শ্বেত নর।/ চারু পরিচ্ছদযুক্ত রম্য কলেবর। নানা দ্রব্যে সুশোভিত অট্টালিকা ঘর।” তবে সে সময় বাংলা নববর্ষকে নিয়ে এই প্রেমের উৎসব বা আনন্দ কিন্তু দেখা যাত না। বাঙালিরা খুবই সাদা মাটা ভাবে কয়েকটি পুজো করত। চড়ক পার্ব্বন’ নকশায় বাংলা নববর্ষের কথায় লেখা হয়েছে, ” ইংরেজরা নিউ ইয়ারে বড় আমোফ করেন। আগামীকে দাড়াগুয়া পান দিয়ে বরণ করে নেনে। আর বাঙালিরা বছরটা সজনে খাড়া চিবিয়ে ঢাকের বাদ্দি আর রাস্তার ধুলো দিয়ে পুরানকে বিদায় দেন। কেবল কলসি উচ্ছূর্গ কর্তারা আর নতুন খাতাওয়ালারাই নতুন বছরকে মনে রাখেন।” স্বভাবতই এই লেখনি থেকে বোঝা যায় হালখাতার কথাই বলা হচ্ছে। তবে সে সময় যে নববর্ষ উৎযাপনে তেমন তোড়জোর ছিল না, তাও স্পষ্ট।