বানেশ্বর: দীপবলির আলোর উৎসব মানেই চারিপাশে আলোর রোশনাই। এই দিনে একটা সময় চারিপাশে শুধুই ঝলমল করত মাটির সাবেকি প্রদীপের আলো।
তবে সেই সময় আজ পাল্টেছে অনেকটাই। আধুনিকতার যুগে চাহিদা পাল্টেছে সাধারণ মানুষের। তাইতো সেই চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করতে হচ্ছে মৃৎশিল্পীদের।
তাইতো এই শিল্পীদেরও পাল্টাতে হয়েছে নিজেদের কাজের ধরণ। বর্তমানে বেশিরভাগ বাড়িতেই দীপাবলির দিনে ঝলমল করে বৈদ্যুতিক আলো। তবে নিয়ম রক্ষার্থে কিছু প্রদীপ জ্বালানো হয় আজও। সেই প্রদীপ গুলি বেশিরভাগ হয় আকর্ষণীয় সুন্দর ডিজাইনিং প্রদীপ।
জেলা কোচবিহারের বানেশ্বর এলাকার এক মৃৎ শিল্পী নিখিল পাল। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে দীপাবলির আগে প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বছর ৬৫-এর এই শিল্পী দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত।
বর্তমানের পরিস্থিতির সম্পর্কে মৃৎশিল্পী নিখিল পাল জানান, আনুমানিক কুড়ি বছর বয়স থেকে এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন। ধীরে ধীরে মানুষের চাহিদার পরিবর্তন দেখছেন। একটা সময় মানুষ সাবেকি মাটির প্রদীপ বেশি ব্যবহার করত। তবে বর্তমান সময়ে মানুষের চাহিদা পাল্টেছে অনেকটাই। এখন মানুষ সাবেকি প্রদীপের বদলে ডিজাইনিং প্রদীপ বেশি ব্যবহার করে।
তিনি আরও জানান, অস্তিত্ব রক্ষার জন্য তাঁকেও বর্তমানে এই প্রদীপ তৈরি করতে হচ্ছে। দিন শেষে কিছুটা আয়ের মুখ দেখার জন্য। সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে।
এলাকার আরেক নতুন মৃৎশিল্পী নারায়ণ পাল জানান, পাঁচ বছর যাবৎ এই পেশায় কাজ করছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে প্রদীপের চাহিদা কমেছে অনেকটাই। দীর্ঘ সময়ের এই পেশার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষকে তিনি দেখেছেন কাজ ছাড়তে। বর্তমান সময়ে খুব একটা বেশি পরিমাণে এই প্রদীপের চাহিদা থাকে না বাজারে। তবুও সাবেকি প্রদীপের চাইতে এই ডিজাইনিং প্রদীপ গুলি বেশি দামে বিক্রি হয়। তাই কিছুটা আয়ের মুখ দেখেন তাঁরা।
দীপাবলির আলোর উৎসবে মাটির প্রদীপের জায়গা অনেকটাই দখল করেছে বৈদ্যুতিক আলো। তবুও আজও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এই মৃৎশিল্পীরা। সময় ও মানুষের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেদের কাজের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন এঁরা। তাইতো বর্তমান সময়ে সাবেকি মাটির প্রদীপের চাইতে ডিজাইনিং প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এই শিল্পীরা।
Sarthak Pandit