বাড়ির কর্তা বেরতেই খপ করে তুলে নিয়ে গেল সিবিআই

‘ঘর ভাড়া নেব, একটু বাইরে আসবেন’, বাড়ির কর্তা বেরতেই গ্রেফতার করে নিয়ে গেল সিবিআই, এলাকায় শোরগোল !

প্রতাপগড়, উত্তর প্রদেশ: “সাহাব, আছেন না কি?” সন্ধ্যা বেলায় বাড়ির বাইরে হাঁকডাক। কিছুটা বিরক্তই হলেন লখনউ সিনিয়র পোস্টাল সুপারিনটেনডেন্টের স্টেনো রাঘবেন্দ্র ওঝা। ‘কে’, বলে জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দিলেন তিনি। বাইরে একদল লোক দাঁড়িয়ে, “সাহাব, ঘড় ভাড়া নেব, একটা ব্যবস্থা করে দিন।” ‘দাঁড়ান, দাঁড়ান’ বলে গায়ে জামা চড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন রাঘবেন্দ্র।

বাইরে তখন অনেক লোক। স্যুট, বুট পরে দাঁড়িয়ে। “আপনিই রাঘবেন্দ্র ওঝা?” ‘হ্যাঁ, বলুন’, নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁদের সামনে দাঁড়ালেন রাঘবেন্দ্র। সঙ্গে সঙ্গে লোকগুলোর মুখচোখ পাল্টে গেল। একজন এগিয়ে গিয়ে খপ করে রাঘবেন্দ্রর কলার ধরে বলে উঠলেন, “ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট।” এমন কাণ্ড যে ঘটতে পারে স্বপ্নেও ভাবেননি রাঘবেন্দ্র, হকচকিয়ে গিয়েছেন তিনি। বাড়ির লোকেরার কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কিছুক্ষণ পর সম্বিত ফিরতেই, রে-রে করে উঠলেন তাঁরা। “ব্যাপারটা কী? কে আপনারা?” একজন এগিয়ে এসে পরিচয়পত্র দেখালেন। লখনউ সিবিআই।

আরও পড়ুন– বন্ধুর বাড়ির বিয়েতে গিয়ে নিজের বিয়ের সম্বন্ধ হয়েছিল পাকা; সেই কাহিনিই শোনালেন ‘Fabulous Lives Vs Bollywood Wives’-এর শালিনী পাসি

উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ের সেনানি নগরের বাসিন্দা রাঘবেন্দ্র ওঝা। পেশায় লখনউ সিনিয়র পোস্টাল সুপারিনটেনডেন্টের স্টেনো। শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ চারটি গাড়িতে প্রায় এক ডজন সিবিআই অফিসার পৌঁছন সেনানি নগরে। প্রথমে রাঘবেন্দ্রর প্রতিবেশীদের কাছে বাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে কি না খোঁজখবর নেন। তারপর পৌঁছন রাঘবেন্দ্রর বাড়িতে। ঘর ভাড়া নেওয়ার অছিলায় তাঁকে বাড়ির বাইরে টেনে আনেন। তারপর গ্রেফতার। এই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। অভিযোগ, রেইডের আগে স্থানীয় থানাকেও জানায়নি সিবিআই।

আরও পড়ুন– ঐশ্বর্য-অভিষেকের সংসারে ভাঙনের জল্পনা তুঙ্গে; এরই মাঝে নিজেদের রোকা প্রসঙ্গে এক অজানা সত্য সামনে আনলেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী

চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতারি বলে সন্দেহ: প্রতাপগড়ে সিবিআই দল প্রথমে মোহনগঞ্জ এলাকা থেকে অনিল কুমারকে আটক করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর লখনউ সিনিয়র পোস্টাল সুপারিনটেনডেন্টের স্টেনো রাঘবেন্দ্র ওঝাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। জানা যাচ্ছে, দু’জনকেই গ্রেফতার করে লখনউ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সূত্র মারফত খবর মিলেছে, চুক্তি ভিত্তিক কর্মী নিয়োগের সময় কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে অনিল কুমারের বিরুদ্ধে। তিনি মোহনগঞ্জ সাব পোস্ট অফিসের ডাক সহকারী পদে কর্মরত। কিন্তু কারও চাকরি হয়নি। এখন তাঁরা টাকা ফেরত চাইছেন। কিন্তু অনিল কুমার টাকা ফেরত দেননি। এরপরই ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ। মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই।

প্রতাপগড়ের এসপি জানিয়েছেন, সিবিআই তল্লাশির খবর পুলিশ জানত না। সিবিআই নিজে থেকেই এই অভিযান চালিয়েছে। গ্রেফতারির পর পুলিশকে গোটা বিষয়টা জানানো হয়। ঘটনার পর রাঘবেন্দ্রর বাড়িতে যায় পুলিশের একটি দল। তাঁরা তদন্ত করেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানান, কয়েকজন অপিচিরত ব্যক্তি লখনউ সিবিআই পরিচয় দিয়ে রাঘবেন্দ্রকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন।