আরজিকর কাণ্ডে সিবিআইয়ের অন্যতম হাতিয়ার থ্রিডি লেজার স্ক্যানিং! তদন্তে কীভাবে ব‍্যবহার করা হবে? জানলে অবাক হবেন

R G Kar Murder: আরজি কর কাণ্ডে সিবিআইয়ের অন্যতম হাতিয়ার থ্রিডি লেজার স্ক্যানিং! তদন্তে কীভাবে ব‍্যবহার করা হবে?

উত্তর ২৪ পরগনা: হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করেছে সিবিআই। একদিকে যেমন প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ-সহ সেদিন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স এবং নিরাপত্তা কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই।

অপরদিকে, ঘটনাস্থল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘুরে দেখেছেন ইতিমধ্যেই। তবে ঘটনাস্থলে এমন অনেক জিনিসই থাকে যা খালি চোখে ধরা পড়ে না। সে ক্ষেত্রে তদন্তের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির থ্রিডি লেজার স্ক্যানার মেশিন। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনাস্থলের ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের ডিজিটাল ছবি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। ফলে খালি চোখে না দেখা নানা সুখ্যাতি সুখ্য জিনিসও তদন্তের ক্ষেত্রে ফরেনসিক ও তদন্তকারীদের পরবর্তীতে সাহায্য করে থাকে অনেকাংশেই।

এই তথ্য থাকলে বারংবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের খুব বেশি প্রয়োজন পড়ে না তদন্তকারীদের। একবারেই ঘটনাস্থলের পুরো তথ্য থাকে হাতের নাগালে। আরজি কর কাণ্ডে শুধু সেমিনার হলই নয়, পরবর্তীতে দেখা যায় যে সেমিনার হল থেকে নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হয়েছিল তার থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরত্বে একটি ঘরে হঠাৎই ঘটনার পর শুরু হয় সংস্কারের কাজ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয় সেখানে শৌচালয় তৈরি করা হবে।

আরও পড়ুন: হোটেলে থাকছেন? বিছানার নীচে জলের বোতল ফেলতে ভুলবেন না! ৯৯% শতাংশ লোকজনই জানেন না কারণ

ঘটনাস্থলের কাছেই হঠাৎ এভাবে সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তোলা হয় আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে। যদিও পরবর্তীতে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় পুলিশের নির্দেশে। তবে সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে কোন কিছুই চোখের আড়াল করবে না, আর তাই ঘটনার স্থল থেকে শুরু করে গোটা ওই বিল্ডিং এর থ্রিডি লেজার স্ক্যানিং করে রাখছেন তারা। সিবিআই সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের লেজার স্ক্যানার সাধারণত বড় কোনও অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর আগে বাংলায় এই মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল বগটুই কাণ্ডে।

এই যন্ত্র চালাতে বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন তদন্তকারী দলও আর জি কর হাসপাতালে কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে। এই থ্রিডি লেজার স্ক্যানার গুলি অত্যন্ত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ডেটা কালেক্ট করায় নির্ভুলতার সঙ্গে উচ্চ বাস্তবতার ভার্চুয়াল কপি তৈরি করতেও সক্ষম। যা ফরেনসিক বৈজ্ঞানিকদের কাছে, একটি অপরাধের দৃশ্য খুব কম সময়ে এবং অনেক বেশি বিশদে খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন: সিজিও কমপ্লেক্সে চিকিত্‍সক তরুণীর দুই বন্ধু! এলেন ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার, আরজি করে এখন কী পরিস্থিতি?

যে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখতে একাধিক তদন্তকারীদের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে হয়, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একটি বোতামের স্পর্শেই কয়েক মিনিটের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা যেতে পারে। একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হোক বা তদন্তকারীরা, যে কোনও সময় এই নথি দেখেই প্রমাণ পর্যালোচনা করে নিতে পারেন।

লেজার স্ক্যানার দ্বারা ক্যাপচার করা পয়েন্ট ক্লাউড ডেটা থেকে ব্লাড স্প্যাটার, বুলেট ট্র্যাজেক্টোরি এবং খালি চোখে না দেখা শিক্ষাতেই সূক্ষ্ম বস্তু ও পরীক্ষা করে বের করা যেতে পারে। শুধু তাই নয় আদালতে পরবর্তীতে বিচারের ক্ষেত্রেও এই ডিজিটাল ডাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মুহূর্তেই যে কোন জায়গায় ঘটনাস্থলকে তুলে ধরতে পারে এই ডেটা।

আরও পড়ুন: খাঁ খাঁ করছে গোটা হাসপাতাল, মুখ ফেরালেন রোগীরাও! চেনা আরজি করকে এখন চেনাই দায়

কোনও বস্তু কত দূরে রয়েছে, ঘটনাস্থলে কীভাবে পৌঁছনো যায় কিংবা সেখান থেকে বাইরে যাওয়ার রাস্তা কতগুলো, এধরনের নানা তথ্য পাওয়া যায়। ফলে লক্ষাধিক টাকার অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আগামী দিনে আরজি করে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে সিবিআই আধিকারিকদের কাছে এই রহস্য সমাধানে।

Rudra Narayan Roy