West Bengal Police

West Bengal Police fighting with decoits: ৭ বোপরোয়া ডাকাতের সঙ্গে একা লড়ে নায়ক হয়েছিলেন সাব-ইন্সপেক্টর মেঘনাদ, গ্রেফতার এখনও দুই

আসানসোল: রামায়ণে মেঘের আড়াল থেকে লড়াই করেছিলেন মেঘনাদ। বাস্তবের মেঘনাদ লড়েছেন বিদ্যুৎ পোস্টের আড়াল থেকে। সামনে সাত জন বেপরোয়া রিভলভারধারী ডাকাত। বিপরীতে বিদ্যুৎ পোস্টের আড়াল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে একা মেঘনাদ। সাত বনাম এক। ভরদুপুরে গুলির লড়াই চলছে, আতঙ্কিত এলাকার মানুষ, ঠিক যেন সিনেমা মতো!

মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই রানিগঞ্জের একটি সোনার দোকান থেকে লুট চার কোটি টাকার বেশি মূল্যের গয়না। পালানোর পথে বাঁধা হয়ে দাড়ান এক পুলিশ কর্মী। জামুরিয়া থানার শ্রীপুর পুলিশ আউটপোস্টের ওসি, সাব-ইন্সপেক্টর মেঘনাদ মণ্ডল। ঘটনাস্থলের থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে আরেকটি দোকানে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন মেঘনাদ। এসেছিলেন সাধারণ পোশাকে। টানা লড়াই চালান সশস্ত্র ছয় দুষ্কৃতীর সঙ্গে। যাদের লক্ষ্য করে ইলেকট্রিক পোলের আড়াল থেকে তখন পাল্টা গুলি চালাচ্ছেন অসমসাহসী মেঘনাদ।

আরও পড়ুন: বড় বিপর্যয়, বন্ধ করে দেওয়া হল সিকিম-বাংলা সংযোগকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক

ডাকাতদের একজনের গায়ে মেঘনাদের চালানো গুলি লাগতেই চাপে পড়ে তারা। কোনও মতে জখম সঙ্গীকে টেনেটুনে বাইকে তুলে, নিজেদের একটি বাইক ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে, ১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার সোনা ও হীরের গয়না ব্যাগে পুরে নিয়ে দু’টি বাইকে করে পালায় সাতজন। বাইক ছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায় জামাকাপড় ভর্তি দুটি ব্যাকপ্যাক, ৪২ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, এবং ২ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার গয়না সমেত একটি ব্যাগ।

এত সহজে হার মানেননি প্রাণের ঝুঁকিকে থোড়াই কেয়ার করে সোজা বাইকের পিছনে ছুটতে শুরু করেন মেঘনাদ। ততক্ষণে পিছনে ধাওয়া করা মেঘনাদকে লক্ষ্য করে উড়ে আসছে গুলি। হার না মেনে ছুটে চললেও শেষমেশ মেঘনাদের নজরের বাইরে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। তবে শেষমেশ ঝাড়খণ্ড পুলিশের সহযোগিতায় গ্রেফতার হয় ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলার গোপালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সূরজ সিং। সেই সঙ্গে বিহারের সিওয়ান এলাকায় আটক হয় গুলিতে জখম সোনু সিং, আপাতত ধানবাদের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিদের গ্রেফতার এবং লুটের মাল উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলশ।

নায়কের মতো কাজ করেও নির্বিকার মেঘনাদ। আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি, বাইক ভেদ করেছে গুলি, কিন্তু খুঁটির আড়াল থেকে আগাগোড়া লড়ে গেছেন বাস্তবের ‘মেঘনাদ’, জীবনের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করেই। তাঁর সেই কাহিনি অনেকেই শুনতে চাইছেন, কিন্তু তিনি নির্বিকার। হেসে বলছেন, ‘আমি তো স্রেফ ডিউটি করেছি আমার।’