বাঁকুড়া: বাজারে দু ধরনের লক্ষ্মী ঠাকুর পাওয়া যাচ্ছে। একটা প্যাকেট বন্দি হয়ে রেডিমেড আসছে বাইরের জেলা থেকে, অপর লক্ষ্মী ঠাকুরটি কষ্ট করে বানাচ্ছেন কুমোরটুলির কুমোররা। বাইরের জেলা থেকে আগত লক্ষী ঠাকুর গুলি দেখতে বেশ আকর্ষণীয়, ফিনিশিং ভালো সঙ্গে প্লাস্টিকে মোড়া। দামও ১৫০-৩০০ টাকা।অপরদিকে কুমোরটুলির মা লক্ষ্মীগুলি হাতে তৈরি বলে রয়েছে ভালোবাসার ছোঁয়া তবে দামের কারণে পিছিয়ে পড়ছে মার্কেট থেকে। এমনকি, বাঁকুড়া জেলার, বাঁকুড়া শহরে কয়েকজন মৃৎশিল্পী এই বছর লক্ষ্মী ঠাকুর তৈরি করেননি, বিক্রি হবে না বলে।
এরকম চিত্র শেষ কবে দেখেছেন? লক্ষ্মীপুজো মানেই লক্ষ্মী ঠাকুরের মূর্তি সারি সারি রাখা থাকবে। যেখান থেকে মানুষ দাঁড়িয়ে কিনবে লক্ষ্মী ঠাকুর। সারি সারি রাখা রয়েছে, তবে সেগুলি আসছে বর্ধমান জেলার নীলপুর থেকে। বাইরের জেলা থেকে এসে ধরে ফেলেছে বাঁকুড়ার লক্ষ্মী পুজোর বাজার। এদিকে মাথায় হাত ঘরের মৃৎশিল্পীদের।
আরও পড়ুন : বাংলার পাহাড়ে দুর্লভ জিনিসের খোঁজ, নড়েচড়ে বসলেন ঐতিহাসিকরা! দেখলে চমকে যাবেন
অভিজ্ঞ মৃৎশিল্পী মনোরঞ্জন চন্দ, মূর্তি বানাচ্ছেন ১৮ বছর। গেল দুর্গাপুজোয়, প্রায় আটটি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে বিক্রি করেছেন তিনি। দুর্গা প্রতিমা দিয়েছেন বাঁকুড়া সংশোধনাগারে। তবে লক্ষ্মী ঠাকুর বানাবার সাহস পাননি এই মৃৎশিল্পী। তিনি জানান বাজারে রেডিমেড লক্ষ্মী ঠাকুর গুলি একেবারে খেয়ে ফেলেছে কুমোরটুলির লক্ষীর চাহিদা। ভয়ে কাঁচামাল কিনতে বাজার পর্যন্ত যাননি তিনি। একদিকে যেরকম রেডিমেড লক্ষ্মী ঠাকুর কিনতে ভিড় দেখা গেল দোকানের সামনে। অপরদিকে মাছি তাড়াচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা।
আরও পড়ুন : মাটির ভাঁড়ে ধোঁয়া ওঠা মালাই চা, আর সঙ্গে…! স্বাদের টানেই উপচে পড়ছে ভিড়, কোথায় পাওয়া যাচ্ছে?
প্রতিটা পুজোই মানুষের মনে আনন্দ এনে দেয়। ব্যবসার সমৃদ্ধি ঘটে, মিলন হয় মনের। তবে কারোর পৌষ মাস তো কারোর সর্বনাশ , এমন চিত্রই ধরা পড়ল বাঁকুড়া শহরে। লক্ষ্মী পুজোর বাজার একদিকে যেমন অগ্নিমূল্য। ঠিক তেমনই রেডিমেড লক্ষ্মীর সামনে হার মেনে গেল বাঁকুড়ার হাতে তৈরি মাটির লক্ষ্মী ঠাকুর।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী