কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে ফের মুখ খুললেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের বর্তমান ডেপুটি সুপার আখতার আলি। আগে তিনি আরজি করেই ছিলেন। সুপারের দাবি, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ হাসপাতালেই মাফিয়ারাজ চালাতেন। এরই বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয় বলে জানালেন আখতার আলি। তিনি অভিযোগ করেন, “বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। বেআইনি কাজে জোর করে সই করতে বলতেন।”
আরও পড়ুন- পাচ্ছেন না রোগী! হাসপাতালগুলির হাল ফেরাতে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক মমতার
সেই কাজ তিনি না করায় তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আকতার আরও জানান, বিভিন্ন টেন্ডারে দুর্নীতি, ছাত্রদের কাছে টাকা তোলা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। শুধু তাঁকে নয় আরও বেশ কয়েকজন কর্মচারী ও চিকিৎসককে বদলি করে দেওয়া হয় আর জি কর মেডিক্যাল থেকে, জানালেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের অনেক আধিকারিক সন্দীপ ঘোষের ঘরে এসে চিকিৎসকদের বদলি করার তালিকা তৈরি করতেন। সন্দীপ ঘোষের মাথায় কারও বড় হাত রয়েছে বলে মনে করেন বর্তমান মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার আকতার আলি।
এ দিকে, হাই কোর্টের নির্দেশে চাপে রয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। সোমবার তিনি স্বেচ্ছায় আরজি করের অধ্যক্ষের পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে আরজি করের বদলে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হয়। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার হাই কোর্টে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষকে সুযোগ দিচ্ছে আদালত। উনি ছুটির আবেদন করুন আজই, না হলে আদালত সরানোর নির্দেশ জারি করবে।” অধ্যক্ষকে লম্বা ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
আদালতের পরামর্শের পরেই নাকি পদক্ষেপ করেন সন্দীপ। আদালতে রাজ্যের আইনজীবী জানায়, আদালত ইচ্ছেপ্রকাশের পরপরই ছুটির আবেদন করে দিয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। এই প্রসঙ্গে আদালত সন্দীপ ঘোষের আরজি কর থেকে পদত্যাগ পত্র এবং ন্যাশনালের নতুন নিয়োগপত্র জমার নির্দেশ দেয়।
সন্দীপ ঘোষকে পদত্যাগের ৪ ঘণ্টার মধ্যেই ন্যাশনালের দায়িত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে শুনানিতে। রাজ্যের এই পদক্ষেপের পরেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। জুনিয়র ডাক্তার এবং পড়ুয়ারা জানিয়েছিলেন তাঁরা নতুন অধ্যক্ষ হিসাবে সন্দীপ ঘোষকে চান না, অধ্যক্ষের ঘরে তালাও ঝুলিয়ে দেন। বিক্ষোভ সামলাতে ন্যাশনালে যান রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান এবং বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা।