Sandeshkhali Video Controversy: ধর্ষণের ‘ভুয়ো’ অভিযোগ তোলার চেষ্টা করতেই খুনের হুমকি! সন্দেশখালি নিয়ে এবার বিস্ফোরক অভিযোগে সরব তৃণমূল

দক্ষিণবঙ্গ: ধর্ষণের ‘ভুয়ো’ অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাওয়ায় দেওয়া হচ্ছে খুনের হুমকি, এই অভিযোগ সামনে এনে এবার সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস। গত ৪ মে সন্দেশখালি ষড়যন্ত্র নিয়ে স্টিং ভিডিয়োটি দেশজুড়ে রাজনৈতিক ভাবে ঝড় তুলেছে। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরে সন্দেশখালির বাসিন্দারা দাবি করেন, ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাওয়া মহিলাদের খুনের হুমকি দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা।

অভিযোগ, গত শনিবার সন্দেশখালির ভিডিয়োটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বহু মহিলা রাস্তায় বেরিয়ে এসে বলছেন যে, তাঁরা প্রতারিত হয়ে জাতীয় মহিলা কমিশন এবং স্থানীয় বিজেপি নেতাদের দ্বারা ‘ভুয়ো’ ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুন: বামদের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় হঠাৎ বাজল ‘খেলা হবে’! বিক্ষোভে পথ অবরোধ কর্মী-সমর্থকদের

সন্দেশখালির এক মহিলা তাঁর অভিযোগে বলেন, স্থানীয় বিজেপি নেত্রী তাঁকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিলেন এবং পরে পুলিশ তাঁদের বাড়িতে পৌঁছনোর পরে মামলার বিস্তারিত বিবরণ জানতে পেরেছিলেন।

গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, “স্থানীয় বিজেপি নেত্রী আমাদের একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেছিলেন। দিল্লি থেকে মহিলা কমিশন এখানে আসার পর এই ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে জানতে পারি, আমার নাম নিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে মধ্যরাতে লোকজন আমাদের বাড়িতে ঢুকে পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে। এরকম কিছু কখনও ঘটেনি। আমি এই মামলা প্রত্যাহার করে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি চাই। এই ঘটনার পরে পাড়ায় কেউ আমাদের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলছে না। আমরা যখন অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলি, তখন তিনি আমাদের ‘ছোটলোক’ বলে তাড়িয়ে দেন এবং তিনি আরও বলেন যে আমরা যাতে আর বাড়ি না পাই, তা নিশ্চিত করবেন।”

আরও পড়ুনঃ লালে লাল কলকাতার রাজপথ, হাজরা মোড় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আজ ৫ বাম প্রার্থীর মনোনয়ন

৪ মে একটি ভাইরাল ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে বিজেপি মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল স্বীকারকে বলতে দেখা গিয়েছে, বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক স্বার্থ চরিচার্থ করার জন্য সন্দেশখালির ষড়যন্ত্র করেছিলেন। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি নিউজ ১৮ বাংলা৷

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডঃ শশী পাঁজা বলেছেন: “যে মহিলারা মিথ্যে ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চান, তাঁরা বিজেপির তরফ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন। বাংলা-বিরোধী বিজেপি যেভাবে মহিলাদের মর্যাদা নিয়ে খেলা করেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মহিলারা তাদের জবাব দেবেন!”

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, “যে মহিলারা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে তাঁদের ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করা হয়েছে, তাঁদের কাছে এখনও হুমকি ফোন আসছে। এই বিষয় পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন তাঁরা, এবং জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাওয়ায় তাঁদের ২০ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছে। বিজেপির মিথ্যার রাজনীতি বারবার মানুষের সামনে আসছে। আশা করি, সন্দেশখালির মহিলাদের যারা হুমকি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে বাংলার পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, “আজ পর্যন্ত সন্দেশখালিতে মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনা আমরা দেখিনি। আমরা আগেও নিরাপদ ছিলাম, এখনও নিরাপদ আছি।” গঙ্গাধর কয়ালের বক্তব্য সত্যি বলে উল্লেখ করে তিনি আরও জানিয়েছেন, “তারা আমাদের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমরা সত্যের পথেই অটল থেকেছি এবং কোনও টাকা নিইনি।”

যদিও গঙ্গাধর কয়াল গোটা বিষয়টিকে আগেই অস্বীকার করেছেন৷ তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন৷