গত ১৬ অগাস্ট সিবিআই-এর স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ নোটিশ দেওয়ার পরেও না আসায় রাস্তা থেকে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে তুলে আনে সিবিআই। সোজা নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায় সিবিআই এর সিজিও দফতরে। এরপর শুরু হয় টানা জিজ্ঞাসাবাদ।

Sandip Ghosh-Rg Kar Case: সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে কোথায় গেল সিবিআই? তুমুল চাঞ্চল্য! আজ রাতেই কি ‘বড়’ কিছু?

কলকাতা: সোমবারই কি আরজি করের ঘটনায় নতুন মোড় আসতে চলেছে? ‘নিয়ম’ মাফিক সোমবারও সিবিআইয়ের সিজিও কমপ্লেক্স দফতরে আসেন সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদই সন্দীপকে নিয়ে বেরল সিবিআই। সূত্রের খবর, সন্দীপকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। তাহলে কি সোমবারই গ্রেফতার হবেন সন্দীপ ঘোষ? পারদ চড়ছে চড়চড়িয়ে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ অগাস্ট কলকাতা হাইকোর্ট দায়িত্ব দিয়েছে সিবিআইকে। তার পর থেকে কেটে গিয়েছে ১৮ দিন। এই ১৮ দিনে ১৫ বার সিবিআইয়ের জেরার মুখোমুখি হয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। সব মিলিয়ে ১৫০ ঘণ্টা মতো জেরা করা হয়েছে তাঁকে। মাঝে একদিন তাঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। সেদিন অবশ্য সন্দীপকে আর সিজিও কমপ্লেক্সে আসতে হয়নি। কিন্তু তারপর দিন থেকে শুরু হয় আবার। অবশেষে এই শনিবার ও রবিবার সেই ‘নিয়মে’ ছেদ পড়ল। শনিবার ও রবিবার সন্দীপকে সিবিআই দফতরে আসতে দেখা যায়নি। তিনি হাজিরা এড়িয়েছেন নাকি তাঁকে ডাকাই হয়নি, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ যে বন্ধ হয়নি, তা স্পষ্ট হয়ে গেল সোমবার। ‘নিয়ম’ মতো সোমবার সকালে ফের সিজিও কমপ্লেক্সে চলে এলেন সন্দীপ ঘোষ।

আরও পড়ুন: রবিতে আরজি করে কী এমন পেল সিবিআই? ফের সোমে সিজিও-তে সন্দীপ ঘোষ! শনি-রবি কোথায় ছিলেন?

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি ওই হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্বও পেয়েছে সিবিআই। দু’টি মামলাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে। প্রথম মামলাটিতে প্রশাসক হিসাবে ঘটনার দায় বর্তেছে তাঁর উপর। দ্বিতীয় মামলায় সরাসরিই অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

সন্দীপের প্রাক্তন সহকর্মী তথা আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি আদালতে জানিয়েছেন সন্দীপের বিরুদ্ধে চিকিৎসার জৈব বর্জ্য দুর্নীতি, সরকারি টাকা নয়ছয়, ভেন্ডার নির্বাচনে স্বজনপোষণ, নির্মাণে আইন ভেঙে ঠিকাদার নিয়োগ ছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের কথা। সেই সূত্রেই তাঁকে জেরা করছে সিবিআই। সম্প্রতি তাঁর বেলেঘাটার বাড়িতে গিয়ে তল্লাশিও চালান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।

আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটে ৯ অগস্ট। তার পর থেকেই আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের পদত্যাগ চেয়ে সরব হন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা। সন্দীপকে তার পরে সরিয়ে দেওয়া হয় ন্যাশনাল মেডিক্যালে। কিন্তু সেই নিয়োগের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে সরব হন রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা। অবশেষে আদালতের নির্দেশে ন্যাশনাল মেডিক্যাল থেকেও সন্দীপকে সরিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়। এর পরে আদালত আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার দেয় সিবিআইয়ের হাতে। গত ১৬ অগাস্ট থেকে তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। প্রতি দিন সকালেই সন্দীপ সিজিও কমপ্লেক্সে যান এবং জেরা শেষে বাড়ি ফেরেন রাতে। শনিবার ও রবিবার সেই ‘নিয়ম’ বদলে গেল। সিজিও-তে দেখা গেল না সন্দীপকে। যদিও সোমবার ফের সিবিআইয়ের মুখোমুখি হলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। আর সোমবার সন্ধ্যেতেই সন্দীপকে নিয়ে সিবিআইয়ের ‘যাত্রা’ নিয়ে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।