সিবিআই রিপোর্টের বিষয়বস্তু বাইরে না এলেও খুন এবং ধর্ষণের মামলায় সন্দীপ যে সিবিআই -এর র্যাদারেই ছিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর শেষ পর্যন্ত এই মামলায় গতকাল গ্রেফতার হন সন্দীপ ঘোষ।

Sandip Ghosh-RG Kar Case: গ্রেফতার হয়েও ‘ভাঙছেন’ না সন্দীপ ঘোষ, এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ! চমকে দিয়ে দুই ‘বড়’ দাবি

কলকাতা: আরজি কর দুর্নীতির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তোলার আগে তাঁর বক্তব্য শোনেনি হাইকোর্ট। এই মর্মে অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন সন্দীপ ঘোষ। আগামী ৬ তারিখ তাঁর এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করে নিজের আর্জিতে সন্দীপ ঘোষ আরও অভিযোগ করেছেন, ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে দুর্নীতিকে কোনও কারণ ছাড়াই যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টে।

যদিও আইনজীবীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, গ্রেফতারের আগেই সিবিআই তদন্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। একক বেঞ্চ, ডিভিশন বেঞ্চে কোনও সুরাহা না পাওয়ায় ২৭ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টে জেনারেল ডায়েরি হয়। এসএলপি দায়ের হয় ৩১ অগাস্ট। যদিও এই দুর্নীতি মামলাতেই ২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন সন্দীপ। যদিও সন্দীপ যে আবেদন সুপ্রিম কোর্টে করেছেন, তার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর।

প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় আরজি কর আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধষর্ণ ও খুনের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারদ বাড়ছে, রাগে ফুঁসছে গোটা রাজ্য। সেই সূত্রে মঙ্গলবার সন্দীপ ঘোষকে আদালত চত্বরে সপাটে চড় মেরেছেন এক বিক্ষোভকারী।

আরও পড়ুন: বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়া হোক! দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই বড় নির্দেশ হাইকোর্টের

গত ১৬ অগাস্ট থেকে টানা ১৫ দিন সিবিআই জেরা করে সন্দীপকে। সোমবার ফের তাঁকে তলব করা হয়েছিল সিজিও কমপ্লেক্সে। সন্ধ্যায় সেখান থেকে সিবিআই আধিকারিকেরা সন্দীপকে নিয়ে যান নিজাম প্যালেসে। তার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, সন্দীপ ঘোষকে আরজি কর দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে।

হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডার দুর্নীতি থেকে সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও রয়েছে তার মধ্যে। অভিযোগ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে বেশির ভাগ ‘অনিয়ম’ই হয়েছে সন্দীপ অধ্যক্ষ থাকাকালীন। গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় এক চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ। ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। এই আবহে আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও উঠতে শুরু করে। তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে তাঁর ইস্তফার দাবি তোলেন সেখানকার জুনিয়র ডাক্তারেরা।

আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট সিট গঠন করে রাজ্য সরকার। সেই সিটের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। এই আবহে মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে আরও একটি মামলা করেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। এরপর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। এফআইআর করা হয় সন্দীপের বিরুদ্ধে।