জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ধীরে ধীরে প্রকট হচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর উষ্ণতম এবং শুষ্কতম জায়গাগুলি মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ভবিষ্যদ্বাণী, ২০৫০ সালের মধ্যে সাহারা মরুভূমির আয়তন ৬০০০ বর্গ কিলোমিটার বেড়ে যাবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যান বলছে, আর মরুভূমির সম্প্রসারণের ফলে জমিহারা হবেন প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন মানুষ। যা বেশ উদ্বেগজনক। Photo- Collectedযদিও ইতিমধ্যেই আশ্চর্য এক নমুনা প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, একটা মরুভূমি ভবিষ্যতে আমূল বদলে যাবে। যা বেশ চমকপ্রদ। জানা যাচ্ছে, এই মরুভূমিটির সবুজায়ন হতে পারে। কিন্তু কোন মরুভূমিতে এহেন আশ্চর্য দৃশ্য দেখা যাবে? এমন আশ্চর্যের সাক্ষী হতে পারে থর মরুভূমি। যা গ্রেট ইন্ডিয়ান ডেজার্ট নামে পরিচিত। Photo- Collectedউত্তর-পশ্চিম ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব পাকিস্তানের ২০০০০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে এই মরুভূমি। যার ৬০ শতাংশই রয়েছে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য রাজস্থানে। এই মরুভূমিতে পরিলক্ষিত হয় বিক্ষিপ্ত গাছপালা, চরম তাপমাত্রা এবং সীমিত বৃষ্টিপাতের মতো বৈশিষ্ট্য। Photo- Collectedফলে এটি দীর্ঘকাল ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় পরিবেশগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি এখানে প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের বাস। ফলে এটাই বিশ্বের সবথেকে জনবহুল মরু অঞ্চল। Photo- Collectedএদিকে ভারতের ঠিক অন্য প্রান্তে একই অক্ষাংশে অবস্থিত মৌসিনরাম। বিশ্বের রেকর্ড বৃষ্টিপাত এখানেই হয়। এখানকার গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১১ ৮৭২ মিলিমিটার। ফলে বোঝাই যাচ্ছে এই দেশের ভূপ্রাকৃতিক অবস্থান অনন্য। যার জেরে দেশের পূর্ব প্রান্তে দক্ষিণ এশীয় বর্ষার আগমন ঘটে। অন্যদিকে দেশের পশ্চিম প্রান্ত থেকে যায় শুষ্ক। Photo- Collectedকিন্তু কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদদের বিশ্বাস, এই পরিস্থিতি শীঘ্রই বদলাবে। কারণ বর্ষাকে একেবারে পশ্চিম প্রান্তে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে জলবায়ু পরিবর্তন। Photo- Collectedবিগত ৫০ বছরের আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে গবেষকরা দেখেছেন দক্ষিণ এশিয়া বরাবর কীভাবে ইতিমধ্যেই বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তিত হয়েছে। গবেষণায় তাঁরা লক্ষ্য করেছেন যে, পশ্চিম ভারত এবং পূর্ব পাকিস্তানের শুষ্ক অঞ্চলগুলিতে বৃষ্টিপাত প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে দেশের আর্দ্র পূর্ব প্রান্তে বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ। Photo- Collectedজলবায়ুবিদ ভূপেন্দ্র গোস্বামীর মতে, এই শতকের শেষের দিকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫০-২০০ শতাংশ বাড়তে পারে। আসলে তিনি এবং তাঁর সহকর্মীরা লক্ষ্য করেছেন যে, গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলি আরও বেশি করে নির্গত হবে এবং পৃথিবী আরও গরম হবে। এমনকী ভারত মহাসাগরও অ-সম ভাবে উত্তপ্ত হবে। যার জেরে পশ্চিম প্রান্তও গরম হয়ে উঠবে। আর এই ভারসাম্যহীনতার দরুন বর্ষাও অন্য প্রান্তে সরতে থাকবে। Photo- Collectedতাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে আর্থস ফিউচার জার্নালে। তাতে বলা হচ্ছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ আরও সবুজ হয়ে উঠবে। যদিও এহেন গবেষণা এই প্রথম প্রকাশিত হয়নি। Photo- Collectedএর আগে ২০১৭ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সেন্টার ফর গ্লোবাল চেঞ্জ সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন যে, ২০০২ সাল থেকে ভারতীয় গ্রীষ্মকালীন বর্ষা যেন একটি পুনরুজ্জীবন পেয়েছে – প্রায় ৫০ বছরের শুষ্ক অবস্থার ক্ষেত্রে একটা বড়সড় পরিবর্তন। Photo- Collected