বসিরহাট: বসিরহাট শহরের কিছু দূরে একটি জনপদ ধান্যকুড়িয়া। বলা যেতে পারে এটি বসিরহাটের ইতিহাসের একটি খনি। ধান্যকুড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী এলাকা পরিদর্শন করলে পরতে পরতে চোখে পড়বে ঐতিহাসিক নিদর্শন, যার মধ্যে অন্যতম ধান্যকুড়িয়ার এই গাইন গার্ডেন।
বারাসাত থেকে বসিরহাটগামী টাকি রোড়ের পাশে এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সুবিশাল ফটক। সেই ফটকের দু’দিকে বৃত্তাকার দু’টি স্তম্ভ, তার মাঝে ধনুকাকৃতি ঝুলন্ত ছাদ। মনে করা হয়, প্রায় ৩০০ বছর আগে গ্রামটি সুন্দরবনের অংশ ছিল যদিও পরে পরে এখানে বসতি করে ওঠে। তাদের মধ্যে গাইন, সাউ এবং বল্লভ পরিবার ছিল। এই ধনী পরিবারের সদস্যরা ব্রিটিশদের সঙ্গে ব্যবসা করত এবং তাঁরাই প্রাসাদ নির্মাণ করে। ধান্যকুড়িয়ার এই সমস্ত জমিদারদের হাতে বসিরহাটের একাধিক ঐতিহাসিক স্থাপত্য তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: পরকীয়ায় লিপ্ত স্ত্রী! সন্দেহের বশেই বউয়ের দু’হাত কেটে দিল স্বামী
ধান্যকুড়িয়ার জমিদারদের উদ্যোগে এলাকার প্রথম স্কুল ও হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্বও ছিল তিনটি পরিবারের সদস্যদের। ধান্যকুড়িয়ার সুবিশাল রাজবাড়ি বানিয়েছিলেন জমিদার মহেন্দ্রনাথ গায়েন। সেই সময় ধান্যকুড়িয়ার জমিদারের পাটের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছিল। ইংরেজদের সঙ্গেই চলত তাঁর ব্যবসা, সেই সুবাদেই উত্তর ২৪ পরগণার এই প্রান্তিক অঞ্চলেও নিত্যদিন লেগে থাকত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহেবদের আনাগোনা। তাঁদের বিলিতি সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে উস্কে দিতেই ইউরোপীয় দুর্গের আদলে এই রাজবাড়ি নির্মাণ করেন মহেন্দ্রনাথ।
আরও পড়ুন: রাজ্যের নয়া মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, গোপালিকার মেয়াদবৃদ্ধিতে অনুমোদন দিল না কেন্দ্র
উল্লেখ্য ধান্যকুড়িয়ার গায়েন, বল্লভ, সাউ তিন জমিদাররা মিলে একটি সংস্থা তৈরি করেন। তাঁদের উদ্যোগে তৈরি হয় ধান্যকুড়িয়া হাই স্কুল, একাধিক প্রাইমারি স্কুল, বসিরহাটের টাউন হল, তৎকালীন প্রাচীন হাসপাতাল- বর্তমানে যা পোস্ট অফিস ভবন, ধান্যকুড়িয়া হাসপাতাল। পাশাপাশি, বসিরহাট শহর থেকে গ্রামের বেশ কিছু জায়গায় সেই সময়ের জমিদারদের বেশ কিছু ফলক তৎকালীন সময়ের ইতিহাসের ও ঐশ্বর্যের প্রমান্য দেয়।