পূর্ব বর্ধমান : চাহিদা থাকলেও যোগান নেই। ফলে ছাড়তে হচ্ছে লক্ষাধিক টাকার অর্ডারও। পুজোর আগে ঠিক কি জানাচ্ছেন শোলা গ্রামের শিল্পীরা ? চলুন জেনে নেওয়া যাক। পূর্ব বর্ধমান জেলা তথা রাজ্যের শিল্প মানচিত্রের অন্যতম একটি নাম বনকাপাসী। পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্তর্গত এই গ্রামে সারা বছরই চলে শোলার কাজ। জেলা ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যেও পাড়ি দেয় মঙ্গলকোটের এই গ্রামের শিল্পীদের হাতের কাজ। সারা বছর কম বেশি কাজ হলেও, মূলত বছরের এই সময়টায় শোলা শিল্পীদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। অর্ডার সামলাতে গিয়ে রীতিমত নাভিশ্বাস অবস্থা হয় শোলা শিল্পীদের।
কিন্তু বর্তমানে বেশ কিছুটা সমস্যায় রয়েছেন এই শোলা শিল্পীদের একাংশ। শিল্পীরা জানাচ্ছেন, আসলে এই বছরে যোগান নেই শোলার। ফলে চাহিদা থাকলেও, সেই চাহিদা মেটাতে পারছেন না শিল্পীরা। এমনকি অধিক পয়সা দিয়েও মিলছে না পর্যাপ্ত পরিমাণ শোলা। যার জেরে ছাড়তে হচ্ছে লক্ষাধিক টাকার পুজোর অর্ডার। এই প্রসঙ্গে অভিজিৎ সাহা নামের এক শোলা শিল্পী জানান, “যতটা চাহিদা ততটা শোলা পাওয়া যাচ্ছেনা। শোলা নেই বলে আমরা অর্ডার ধরার সাহস পাচ্ছিনা। গতবছর শোলা পাওয়া গিয়েছিল , কিন্তু এবছর সেভাবে শোলা পাওয়া যাচ্ছেনা। গতবছর যে শোলা ৬০ টাকা বান্ডিল হিসেবে পাওয়া গিয়েছিল , সেই একই জিনিসের দাম এবছর ২০০ টাকা।”
আরও পড়ুন : বৃষ্টিপাতের জেরে বন্ধ তাঁতের কাজ, পুজোর আগে চিন্তায় তাঁতিরা
জানা গিয়েছে বনকাপাসি গ্রামের শোলা শিল্পীদের একটা বড়ো অংশ দিনাজপুর থেকে শোলা আমদানি করেন। কিন্তু এই বছর ভাটা পড়েছে সেই শোলা আমদানিতে। তাদের কথায়,পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টির অভাবে শোলা চাষ কম হয়েছে। যার জেরে এই মরশুমে যোগান কমেছে শোলার।আরও জানা গিয়েছে, গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি দাম দিয়ে শোলা কিনতে হচ্ছে শিল্পীদের। ফলে এই বছরে গ্রামের প্রায় অধিকাংশ শিল্পীদের অবস্থাই কার্যত একই রকম। এই প্রসঙ্গে ওই শিল্পী আরও বলেন, “আমাদের গ্রামের প্রত্যেকটা কারখানার একই অবস্থা। অর্ডার ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ওদিকে দিনাজপুরের পাইকাররাও সেভাবে শোলা পাচ্ছেনা। টাকা বেশি দিয়েও শোলা পাওয়া যাচ্ছেনা। বৃষ্টি কম হওয়ার কারণেই এই সমস্যা। “
আরও পড়ুন : কারোর পৌষ মাস, কারোর সর্বনাশ! জলে ডোবা এলাকায় মাছ ধরার হিড়িক
আর দুমাস পরেই বাঙালির দুর্গা পুজো। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা, সবেতেই শোলার কাজের চাহিদা থাকে বেশ ভালো।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
কিন্তু চলতি মরশুমে শোলার যোগান কম হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন শোলাগ্রামের শোলা শিল্পীরা।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী