বীরভূম: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লাল মাটির শহর বোলপুর শান্তিনিকেতন। ভ্রমণ পিপাসু বাঙালি হাতে এক অথবা দুই দিনের ছুটি পেলেই চলে আসেন বোলপুর শান্তিনিকেতন ভ্রমনে। কলকাতা,শিয়ালদাহ,অথবা হাওড়া স্টেশন থেকে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই বোলপুর শান্তিনিকেতনে আর সেই কারণেই পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এইখানে একদিকে যখন বিশ্বকবির বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে ঠিক অন্য জায়গায় দাঁড়িয়ে পর্যটকদের কাছে এখন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় ভ্রমণের জায়গা বোলপুর শান্তিনিকেতন থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সোনাঝুরির হাট।
সোনাঝুরিহাট বা খোয়াই মেলা হল লাল মাটিতে কোনও আচ্ছাদিত স্টল ছাড়াই একটি উন্মুক্ত মেলা। মেলাটি পুরোপুরি সোনাঝুরি, শাল, সেগুন এবং ইউক্যালিপটাস গাছ দ্বারা বেষ্টিত। এখানের দোকানের অধিকাংশ মালিক মহিলা। মূলত মহিলারা এখানে বিভিন্ন হস্তশিল্পের সম্ভার বিক্রি করে থাকেন। সোনাঝুরি গাছ এবং লাল মাটির সঙ্গেএখানে বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে। সোনাঝুরি আক্ষরিক অর্থে সোনার ফোঁটা, কারণ শীতের মৌসুমে সোনাঝুরি গাছে তাদের ছোট ছোট হলুদ ফুল ঝরে যায় এবং পুরো বনে সোনার বর্ষণ হয়।
আরও পড়ুন: কালীপুজোর দিন মা হংসেশ্বরীকে সাজানো হয় কালী রূপে! জানুন অজানা কাহিনি
ফ্যাশন হোক বা দিনে গিয়ে দিনে ফেরা, নতুনত্বের নিরিখে নিজের আকর্ষণবাড়িয়ে চলেছে সোনাঝুরির হাট।আনুমানিক প্রায় ২০ বছর আগে শান্তিনিকেতনের পাশে বনদফতরেরজমিতে হাট চালু হয়েছিল নিছকই কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসীর উদ্যোগে।এখন শান্তিনিকেতন না ঘুরে পর্যটকরা পড়ে থাকছেন হাটেই। কারণ এখানে গেলেই মিলবে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন আকর্ষণীয় জামাকাপড় থেকে শুরু করে অলঙ্কার।
আরও পড়ুন : ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা, নিজের গাড়িতে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করলেন মন্ত্রী
পর্যটকদের কথায়, শান্তিনিকেতন নতুন কিছু নয়, সে চিরকালের। মানুষ চাইছেন নতুনত্ব কিছু, সঙ্গেবিনোদন। সেই সম্ভারের ডালি সাজিয়েছে সোনাঝুরির হাট। আর এই হাটকে কেন্দ্র করে স্থানীয় গ্রামবাসীদের অনেকে আয়ের নতুন পথ খুঁজে পেয়েছেন।বল্লভপুর গ্রামের কিছু বাসিন্দা স্থানীয় জঙ্গল থেকে বিভিন্ন গাছেরশিকড়, বুনো ফলফুল দিয়েঅলঙ্কার তৈরি করছেন। নাগালের মধ্যে দাম এবং নতুন সেই সম্ভারের চাহিদা মেটাতে এখন নাকাল গ্রামবাসীরা।এছাড়াও হাটে পাওয়া যায়একতারা বাঁশি থেকে শুরু করে নানা হস্তশিল্পের সম্ভার, এমনকি পিঠে-পুলিও।তবে সব কিছু ছাপিয়ে চলছে এখন সেলফি বাজার।
সৌভিক রায়