পাঁচমিশালি, ব্যবসা-বাণিজ্য Knowledge Story: স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছিলেন? ইনিই ভারতের সবচেয়ে ধনী সোনার ব্যবসায়ী, নাম জানেন? কোথায় কোথায় রয়েছে সংস্থার আউটলেট? Gallery July 5, 2024 Bangla Digital Desk *কঠোর পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। কঠোর পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই। তবে পরিশ্রমের পাশাপাশি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াও প্রয়োজন। অর্থাৎ, সাফল্য=কঠোর পরিশ্রম+সঠিক সিদ্ধান্ত। এই ফর্মুলা অনুসরণ করে দেশের সবচেয়ে ধনী স্বর্ণকার হয়েছেন আলুক্কাস ভার্গিস জয়। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১০০-২০০ কোটি নয়, ৩৬,৫২০ কোটি টাকা। সংগৃহীত ছবি। *আলুক্কাস ভার্গিস জয়ের জন্ম ১৯৫৬ সালে কেরলে। বাবার ত্রিশূরের হাই রোডে ২২০ বর্গফুটের গয়নার দোকান ছিল। এ ছাড়াও পরিবারের টেক্সটাইল ব্যবসায় ছিল। তবে জয়ের মনে ধরেছিল সোনার উজ্জ্বলতা। তাই তিনি গয়নার ব্যবসায় যোগ দেন। সংগৃহীত ছবি। *ব্যবসায় হাত দেওয়ার পরে জয়ের প্রথম সুযোগ আসে আরবে যাওয়ার। তখন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে তেলের জন্য সংবাদ শিরোনামে থাকছিল, ভারতীয়রা কাজের সন্ধানে ক্রমাগত সেখানেই পাড়ি দিচ্ছি। ভারতের ঐতিহ্যবাহী গয়নার ডিজাইন সেখানে তেমন পাওয়া যেত না। সেই সুযোগই কাজে লাগান তিনি। এই পরিস্থিতিতে জয় প্রথম ভ্রমণেই আবুধাবিতে একটি স্টোর খোলেন। সেই শুরু, তারপরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সংগৃহীত ছবি। *প্রথম স্টোর খোলার পর ১৯৮৮ সালে দুবাইয়ের ‘দ্য গোল্ড স্যুক’-এ আরেকটি স্টোর খোলেন জয়। ২০০১ সালে জয় গ্রাহকদের মধ্যে ভাগ্যবান বিজয়ীকে একটি ‘রোলস রয়েস’ গাড়ি উপহার দেন। দাবানলের মতো সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে, একটি জুয়েলারি লাকি ড্রয়ের মাধ্যমে কোটি টাকার গাড়ি উপহার দিয়েছে তার গ্রাহককে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, কিন্তু এরপরই গল্পে আসে ট্যুইস্ট। সংগৃহীত ছবি। *আলুক্কাসরা পাঁচ ভাই। ২০০২ সালে এই পাঁচজন জুয়েলারি ব্যবসা ভাগ করে নেন। তাঁর নিজের হাতে তৈরি করা গোটা ব্যবসা ভেঙে পাঁচ টুকরো হয়ে যায়। এরপরই কঠিন পথ বেছে নেন জয় আলুক্কাস। কেরলের কোট্টায়ামে ৫৮০০ বর্গফুটের একটি হেডকোয়ার্টার স্টোর খোলেন তিনি। এর পরে কোয়েম্বাটুরে (তামিলনাড়ু) দ্বিতীয় স্টোর খোলেন। জয় চেয়েছিলেন তাঁর নতুন কাজ শুরু হোক নতুন নামে। নিজের নামের সঙ্গে সংস্থার নাম জড়িয়ে দেন। ২০০৫ সালে পথ চলা শুরু করে জয় আলুক্কাসের নয়া সংস্থা জয়ালুক্কাস। সংগৃহীত ছবি। *নতুন সংস্থা গড়ে ব্যবসা শুরু করলেও তাঁর পথ তখন আর কঠিন হয়নি। স্বর্ণ ব্যবসায় বিপ্লব নিয়ে আসেন জয়। জয়ের ব্যবসায়িক বোঝাপড়া ছিল একেবারে অন্য ধারার। নিজের সোনার ব্যবসাকে তিনি অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। জয়ালুক্কাস ক্যারেটমিটার চালু করেছিলেন, যার মাধ্যমে গ্রাহকরা নিজেরাই দেখতে পেতেন যে তাদের গয়নায় কত ক্যারেট সোনা ব্যবহার হয়েছে। তারাই সেই সোনার দাম নির্ধারণ করতেন, যা জনপ্রিতার শীর্ষে নিয়ে যায় তাঁর ব্র্যান্ডকে। ধীরে ধীরে তামিলনাড়ু থেকে দিল্লি ও লন্ডনে আরও ৬টি স্টোর খোলেন। সংগৃহীত ছবি। *জয়ালুক্কাস ভারতের প্রথম জুয়েলারি সংস্থা যারা আইএসও ৯০০১ এবং ১৪০০১ শংসাপত্র পেয়েছিল। ২০০৮ সালের ১৬ মার্চ চেন্নাইয়ে দেশের বৃহত্তম জুয়েলারি মলে (প্রশান্ত রিয়েল গোল্ড টাওয়ার) ৭০ হাজার বর্গফুটের দোকান খোলে জয়লুক্কাস। এটি ছিল প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বড় স্টোর। এমনকি এটাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোনার শোরুম বা আউটলেট। ৪০০০ কোটি টাকার রাজস্ব অতিক্রম করে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানির তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছে জয়ের জয়ালুক্কাস। সংগৃহীত ছবি। *জয় ধাপে ধাপে ব্যবসার জন্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতেই সফল হয়েছেন।তিনি যে স্টাফ রেখেছেন তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। গয়নার মানের সঙ্গে কখনও আপস করেননি। ২০০৯ সালে ফের সংবাদ শিরোনামে আসে জয়ালুক্কাস। তিনি একটি লাকি ড্র করেন ক্রেতাদের মধ্যে। উপহার হিসেবে দেওয়া হয় ১০টি বিএমডব্লিউ বিলাসবহুল গাড়ি। সংগৃহীত ছবি। *জয়ালুক্কাসের কোনও ছোট দোকান নেই। তবে ছোট ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির সহায়তায় সংস্থার মর্যাদা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে তিনি কল্যাণ জুয়েলার্স এবং সেনকোর মতো বড় ব্র্যান্ডকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন। জয়ালুক্কাসের রিটার্ন অন ইক্যুইটি (আরওই) দাঁড়ায় ৩১.৩ শতাংশ। ২০২১ সালের মধ্যে কোম্পানির রাজস্ব ৮০৬৬ কোটি টাকায় পৌঁছে যায় এবং মুনাফা দাঁড়ায় ৪৭২ কোটি টাকা। সংগৃহীত ছবি। *আজ, জয়লুক্কাসের আয় ১৪,৫১৩.৪২ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা ৮৯৯ কোটি টাকা। সারা দেশে ১৬০টিরও বেশি দোকান রয়েছে। ব্র্যান্ডের উপস্থিতি রয়েছে ১১ দেশে। ধীরে ধীরে, সংস্থাটি আরও ব্যবসায় প্রবেশ করছে। জয় আলুক্কাসের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৬,৫২০ কোটি টাকা এবং তিনি ভারতের সবচেয়ে ধনী সোনা ব্যবসায়ী। ফোর্বসের ৫০ জন ভারতীয় ধনকুবেরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন জয় আলুক্কাস। সংগৃহীত ছবি।