জুলফিকার মোল্যা, বসিরহাট: জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা অন্তরায় জীবনে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেও এখনও আর তার উচ্চতা একটি ছোট্ট শিশুর মতোই। ঘাড়ের নীচ থেকে কার্যত অসাড়। নিজে স্নান করতে পারে না, চলাফেরা খাবার খাওয়ার জন্য মায়ের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। হাঁটাচলা তো দূর অস্ত, সরু ও রুগ্ন হাত দিয়েও তেমন কিছু করতে পারে না। শুধুমাত্র কোনওরকমে কলম চালাতে শিখেছে।
আর সেই কলমের জোরে উচ্চ মাধ্যমিকে সফল উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের চাঁপাপুকুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী দিশানী সাহা। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় দিশানী প্রায় ৫৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে সে মায়ের কাছে রপ্ত করেছে কবিতা আবৃতি। কবিতা আবৃতিতে দিশানীর ঝুলিতে আছে একাধিক পুরষ্কার।
আরও পড়ুন : বাবা লটারিবিক্রেতা, মা বন্ধ চাবাগানের শ্রমিক, অভাবের সংসারে মেয়ে মাধ্যমিকে বাজিমাত করে মনোবিদ হতে চান
যেন অসম্ভবকে সম্ভব করা। শরীর সায় দেয় না, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ১০০ শতাংশ । তবে অদম্য জেদ ও ইচ্ছে শক্তির কাছে হার মানেনি সে। বাবা অনাথ সাহা পেশায় কৃষক, মা অতসী সাহা গৃহবধূ। তিন সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খান। বিশেষভাবে সক্ষম হওয়ার পরও এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে মায়ের কোলে চেপেই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন দিশানি। দিশানী ছোট থেকে পড়াশোনার প্রতি অতি আগ্রহ। পড়াশোনা সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করেছে শিক্ষক শিক্ষিকারা। আগামিদিনে শিক্ষিকা হতে যান তিনি। দিশানীর সাফল্যে খুশি পরিবার-সহ স্কুলের শিক্ষক মহল।