Tag Archives: Hanuma Vihari

হনুমা বিহারী: জীবন, কেরিয়ার ও কৃতিত্ব এক ঝলকে

পুরো নাম: গদে হনুমা বিহারী

জন্ম: ১৩ অক্টোবর ১৯৯৩

উচ্চতা: ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার)

জাতীয়তা: ভারতীয়

ক্রীড়াবিদ: ডান-হাতি ব্যাটার, ডান-হাতি অফ ব্রেক বোলার

পরিবার:

পিতা: সত্যনারায়ণ গদে

মাতা: বিজয়ালক্ষ্মী গদে

হনুমা বিহারী জন্মগ্রহণ করেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের কাঁকিনাড়ায়। মাত্র ৫ বছর বয়সে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর আগ্রহ দেখা যায়। এর পর তাঁর মা-বাবা তাঁকে নিয়ে হায়দ্রাবাদে চলে যান। হনুমার বাবা তাঁকে এক বার হায়দ্রাবাদের জিমখানা মাঠে খেলা দেখতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে রায়ডুর ব্যাটিং দেখার পর থেকে তাঁর মধ্যে সারাজীবন ক্রিকেট খেলার খেলার ইচ্ছাটা আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। হায়দ্রাবাদে যাওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে প্রয়াত নাগেশ হ্যামন্ডের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। 

স্কুলজীবনে ক্রিকেট:

হনুমার বাবা-মা ছেলেকে স্কুলে পড়ানোর এবং ক্রিকেট প্রশিক্ষণের খরচ একসঙ্গে বহন করতে পারছিলেন না। ফলে তাঁরা জন সেন্ট অ্যান্ড্রিউ স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। স্কুলের স্পোর্টস ডিরেক্টর মনোজ সব কিছু শোনার পরে হনুমা-কে স্কুলে ভর্তি করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে সক্ষম হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মাত্র ১২ বছর বয়সে হনুমা তাঁর বাবাকে হারান। এর পর সেন্ট অ্যান্ড্রিউজ স্কুলের হয়ে খেলার সময় একটি টুর্নামেন্টের অনূর্ধ্ব-১৪ দলে একটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। এমনকী তাঁর নেতৃত্বে আন্তঃস্কুল চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁদের দল বহু ট্রফি জিতেছিল। মামার সাহায্যে অবশ্য হনুমার মা তাঁকে বড় করে তুলেছিলেন। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও হনুমার মা তাঁকে তাঁর স্বপ্ন পূরণে কোনও দিনই বাধা দেননি। 

কেরিয়ারের সূচনা:

হনুমা বিহারী ছিলেন এক জন ভারতীয় ক্রিকেটার। ২০১০ সালে হায়দ্রাবাদ স্টেট দলের হয়ে খেলা শুরু করেন তিনি। ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেট কিপিংয়েও প্রশিক্ষণ  নিয়েছেন হনুমা। ২০১২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচিত হন তিনি। এই সময় দলের অধিনায়ক ছিলেন উন্মুক্ত চাঁদ। এই টুর্নামেন্টে ভারত জয়ী হলেও বিহারী খুব একটা ভালো খেলতে পারেননি। ৬টি ম্যাচে মাত্র ৭১ রান করেছিলেন তিনি। তাঁর এই ব্যর্থতার পর রাহুল দ্রাবিড় তাঁকে ফের ট্র্যাকে ফিরে আসতে সাহায্য করেন। দ্রাবিড়ের ছত্রচ্ছায়ায় থাকার পর বিহারীর ফর্ম ফিরে আসে এবং রঞ্জি ট্রফিতে তিনি দুর্দান্ত ভালো ফল প্রদর্শন করেন।  

আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্থান:

২০১৮ সালে ভারতের হয়ে খেলার স্বপ্ন সত্যি হয়েছিল হনুমা-র। ওই বছর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনাল ২ টেস্ট ম্যাচের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পঞ্চম টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হয় তাঁর। একই বছরে দেওধর ট্রফিতে ভারতের হয়ে খেলার জন্য নির্বাচন করা হয় তাঁকে। ধারাবাহিক ভাবে তাঁর অসাধারণ পারফরমেন্স মুগ্ধ করে নির্বাচকদের। এর পর আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের টেস্ট স্কোয়াডের জন্য বেছে নেওয়া হয় তাঁকে। ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে হনুমা বিহারী টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবেই বিখ্যাত। 

ক্লাব ক্রিকেট:

২০১৪ সালের আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলার সুযোগ পান হনুমা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অফ-স্পিনার হিসেবে বোলিং করে ক্রিস গেল-কে ১ রানে আউট করেন তিনি। ২০১৭-২০১৮ সালে অন্ধ্র দলের হয়ে ওড়িশার বিরুদ্ধে খেলে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন হনুমা বিহারী।

Hanuma Vihari: নাটক ঘুরছে প্রতি মুহূর্তে, হনুমা বিহারী বনাম অন্ধ্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কোন্দল চরমে

Hanuma Vihari | Andhra Cricket Association : রাজনীতির শিকার ক্রিকেটার? তুলকালাম অন্ধ্র ক্রিকেটে, দেখুন বাংলা নিউজ ভিডিও  (Watch Bangla news video)৷

Hanuma Vihari:ভারতীয় ক্রিকেটে রাজনীতির প্রভাব! বোমা ফাটালেন হনুমা বিহারী, নিলেন বড় সিদ্ধান্ত

অন্ধ্রপ্রদেশ: রঞ্জি ট্রফি থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের বিদায়ের দিনই বোমা ফাটালেন হনুমা বিহারী। ভারতীয় ক্রিকেটে রাজনীতির প্রভাব কতটা, সেটা কীভাবে দলের পরিবেশ ও পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে সেই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন হনুমা। মরশুমের শুরুতে বাংলা ম্যাচের পর হঠাৎই অধিনায়কত্ব ছাড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই সময় হনুমা ব্যক্তিগত কারণ বললেও, এবার পর্দা তুললেন আসল রহস্য থেকে। একই সঙ্গে রাজ্য সংস্থার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে না খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতের হয়ে ১৬টি টেস্ট খেলা ব্যাটার।

ম্যাচের পর ট্যুইট করে হনুমা বিহারী লেখেন,?বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচে দলের ১৭ নম্বর খেলোয়ারের বিরুদ্ধে চিৎকার করেছিলাম। যেই ভাষা প্রয়োগ করেছিলাম তা খেলার মাঠে খুবই প্রচলিত। কিন্তু ওই খোলেয়ার একজন রাজনৈতিক নেতার পুত্র। সে তার বাবাকে গিয়ে বলে। বাংলার বিরুদ্ধে ৪১০ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতর পরও আমাকে অধিনায়ক থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। সেই সময় অপমানিত বোধ করেছিলাম। কোনও কিছু না বলে অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলাম।?

কেন সেই সময় মুখ খোলেননি হনুমা সেই বিষয়েও মুখ খুলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার। হনুমা বিহারী বলেন,?আমি অধিনায়কত্ব ছাড়ার পরও খেলা চালিয়ে গিয়েছি কারণ এই খেলাটা ভালবাসি ও সম্মান করি। তবে আমাদের সংস্থা বিশ্বাস করে তারা যা বলবে সেটাই ক্রিকেটারেরা মেনে চলবে। ওদের জন্য ক্রিকেটারেরা রয়েছে। তাই আজকের পর আমি আর অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।?

আরও পড়ুনঃ Ind vs Eng: তরুণদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত! ভারতের জয়ে কোহলি দিলেন ?বিরাট? বার্তা

প্রসঙ্গত, গত বছর রঞ্জিতে চোট নিয়ে দলের জন্য যে বলিদান দিয়েছিলেন হনুমা বিহারী তা সকলের স্মরণে রয়েছে। দলকে বাঁচাতে বাঁ হাতে ব্যাট করেছিলেন। তাও আবার একহাতে। এহেন ক্রিকেটারের সঙ্গে এমন ব্যবহার মেনে নিতে পারছেন না ফ্যানেরা। সোশ্যা মিডিয়ায় হনুমার পোস্টে সকলেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।