Tag Archives: Letter Writing

Letter Writing: চিঠি লেখাই নেশা, দেশবিদেশের বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে চিঠি লিখে উত্তর পেয়েছেন অসিতবরণ

বনোয়ারীলাল চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের এই ব্যক্তির রয়েছে এক সম্পূর্ণ ভিন্ন শখ। তাঁর সংগ্রহে থাকা জিনিস অবাক করবে সকলকেই। বিগত কয়েক দশক ধরে পূর্ব বর্ধমান জেলার এই ব্যক্তির শখ চিঠি লেখা। হ্যাঁ , বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যেখানে একরকম হারিয়ে যেতে বসেছে চিঠি লেখার রেওয়াজ। সেখানে এই ব্যক্তির শখই হলচিঠি লেখা। আর তার লেখা চিঠি জেলার সীমানা পার করে পৌঁছে গিয়েছে দেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির কাছে। এমনকি তাঁর লেখা চিঠির উত্তর এসেছে বিদেশ থেকেও। শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। পূর্ব বর্ধমান জেলার এই ব্যক্তির নাম অসিতবরণ দত্ত। বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরের ঘোষহাট এলাকায়। বছর ষাটেকের এই ব্যক্তি ছেলেবেলা থেকেই ভালবাসেন চিঠি লিখতে।

এই প্রসঙ্গে কাটোয়া শহরের বাসিন্দা অসিতবরণ দত্ত জানান, ‘‘চিঠি লিখি ছোটবেলা থেকেই। প্রথম দিকে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল চিঠি। আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ চিঠির মাধ্যমেই হত। চিঠি লেখার অভ্যাস ছোট থেকেই। একদিন মনে হল পরিচিতির বাইরে অপরিচিত খ্যাতনামা ব্যক্তিদের লিখলে কেমন হয়। তারপর আমি খ্যাতনামা ক্রিকেট প্লেয়ার সুনীল গাভাসকরের চিঠি পেয়েছিলাম সর্বপ্রথম।”

বর্তমানে অসিতবাবুর সংগ্রহে রয়েছে একাধিক বিখ্যাত ব্যক্তির চিঠি। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী , অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্নার মত অভিনেতা। এছাড়াও রয়েছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বাপ্পি লাহিড়ি, ঊষা উত্থুপ, প্রমুখ বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী। এমনকি মাদার টেরিজার পাঠানো চিঠির উত্তরও রয়েছে অসিতবাবুর কাছে।

আরও পড়ুন : ইউরিক অ্যাসিডের যন্ত্রণা হবে ভ্যানিশ! রোজ এভাবে খান এতগুলি কলা

তবে জানলে আরও অবাক হবেন। শুধু দেশের না। অসিতবরণ দত্তের কাছে রয়েছে ফ্রান্স, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইওয়ান-এই তিন দেশের ত‍‍ৎকালীন প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি মারফত পাঠানো চিঠির উত্তরও। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘একবার আমার একটা ভ্যাকিউম ক্লিনার খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একাধিকবার সেই সংস্থাকে জানানো হলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তখন আমি বাধ্য হয়ে ওই কোম্পানিকে চিঠি লিখেছিলাম। চিঠি করার পরবর্তীতে আমার বাড়িতে লোক এসেছিল কোম্পানি থেকে সমস্যার সমাধানের জন্য। তবে শুধু এটাই নয় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নাম গোপনে রেখে আমি বিভিন্ন জায়গায় চিঠি লিখি।’’

বিগত কয়েক দশক ধরে দেশ বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চিঠি লিখে আসছেন অসিতবাবু। এমনকি চিঠির মাধ্যমে মিটেছে তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যাও। তেমনই এক অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন বছর ষাটের এই ব্যক্তি। তাঁর কথায়, চিঠি তাঁর আবেগ। চিঠি কেবল চিঠি নয়, অনেক সময় তা সাহিত্যের পর্যায়েও পৌঁছে যায় বলে মত অসিতবাবুর। তাই তিনি চান আগামী প্রজন্মও চিঠি লিখুক। আর এভাবেই ছাত্র জীবন থেকে এখনও পর্যন্ত চিঠি লেখাকে ভালবেসে ধারাবাহিক ভাবে চিঠি লিখে আসছেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার অসিতবরণ দত্ত।