হুগলি: ছেলেবেলায় অঙ্ক করতে গায়ে জ্বর আসেনি এমন মানুষ সংখ্যায় দুনিয়ায় বেশ কম। অথচ অঙ্ক ঠিকঠাক না জানলে জীবনের অনেকটাই বৃথা। অঙ্কের ভীতি ছোটবেলাতেই কাটিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। আর তা কিন্তু খুব কঠিন কাজও নয়। আপনার সন্তানের ক্ষেত্রেও কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই মুশকিল আসান হতে পারে। তবে এর জন্য প্রয়োজন অভিভাবকদের ধৈর্য এবং সহানুভূতি।এই বিষয়ে স্কুলের শিক্ষক অরূপ চক্রবর্তী দিলেন সহজ কয়েকটি টিপস! জানুন
শিশু অঙ্কে কাঁচা হলে তার সামনে গণিত-ভীতি তুলে না ধরাই ভাল। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনার সন্তান কিন্তু আপনাকেই ভরসা করে আর সাহায্যের জন্যেও আপনার দিকেই হাত বাড়াবে। এই সময় তাকে নানা ভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টাই হবে আপনার প্রধান লক্ষ্য। ফলে যদি আপনি নিজেও মনে মনে এখনও অঙ্ককে ভয় পান, তবে তা বাচ্চাকে কখনও বলবেন না বা অঙ্ক বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না।
আরও পড়ুন: আপনার বাচ্চা কী অল্পতেই মেজাজ হারাচ্ছে? বাচ্চার মন বোঝেন তো? না হলেই বিপদ! জানুন
খেলাধূলার মাধ্যমে অঙ্কের প্রতি শিশুর আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলুন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ব্লক, ধাঁধা, কার্ড গেম এবং এমনকি ভিডিও গেম থেকেও অঙ্ক করতে ক্রমশ আগ্রহ জন্মাতে পারে বাচ্চার। অভিভাবকদের সঙ্গে গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করতে চেষ্টা করান তাকে। খেলার আনন্দে ক্রমশ অঙ্কের প্রতি টান তৈরি হবে। এই ধরনের খেলা মস্তিষ্ককে অনেক সতর্ক এবং বেশি সচল করে তোলে। তা ছাড়াও যত বেশি বাচ্চারা লুডো, দাবা এবং সংখ্যাযুক্ত যে কোনও খেলা খেলবে, অঙ্ক করার ব্যাপারে এক সময় নিজেই আড়ষ্টতা কাটিয়ে উঠবে সে।
আরও পড়ুন: শীতে স্নান না করলে কী হয়? সপ্তাহে ক’দিন স্নান না করে থাকা যায়? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত
এছাড়াও বাড়ির বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে আস্তে আস্তে গণিত-ভীতি কাটিয়ে ফেলা যায়। একটি নির্দিষ্ট আয়তনের কেক তৈরি করতে কত কেজি ময়দা, বেকিং পাউডার, ক’টি ডিম লাগবে তা নির্ণয় করতে দিন শিশুকে। কিংবা মেঝের জন্য কার্পেট প্রয়োজন হলে কত বর্গফুটের কার্পেট দরকার তা খেয়াল রাখতে পরামর্শ দিন। এই ধরনের কাজের মধ্যে দিয়ে যেমন বয়সে ছোট হলেও সন্তানকে আপনি গুরুত্বহীন ভাবছেন না বলে বুঝবে সে, তেমনই মাথা খাটাতে থাকবে অঙ্ক নিয়েও। এতেই নিজের অজান্তে মুখে মুখে হিসাব কষার অভ্যাস হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় শরীর গরম রাখবে এই পাঁচ উপাদান! জানুন বিশেষজ্ঞের মত
বাজার করার সময়েও সঙ্গে নিন আপনার সন্তানকে। কত কেজি খাবার বা সব্জি কেনা হল, কিংবা রসিদে লেখা মূল্য সঠিক ভাবে যোগ করা হয়েছে কি না তা নিয়ে সতর্ক থাকতে বলুন ওকে। এই ভাবে শুধু অঙ্কের ভীতিই যে দূর হবে, তা-ই নয়। সন্তান ও অভিভাবকের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়াও বৃদ্ধি পাবে কয়েক গুণ।এই অভ্যাস গুলি করলেই সহজেই আপনার শিশু কাটিয়ে উঠতে পারবে অঙ্কের ভীতি।
শুভজিৎ ঘোষ