Tag Archives: Mohammedan SC

Durand Cup: ডার্বি বাতিল হলেও ডুরান্ডের সেমিফাইনাল-ফাইনাল হোক কলকাতাতেই, বার্তা তিন প্রধানের

কলকাতা: নিরাপত্তার স্বার্থে গত রবিবার ডার্বি বাতিল করে দিয়েছিল প্রশাসন। কলকাতা থেকে ডুরান্ড কাপ প্রতিযোগিতা গোটাটাই সরিয়েও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপরে যৌথভাবে কলকাতার প্রধান তিন দল আবেদন জানাল, ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল যেন কলকাতার বুকেই আয়োজিত হয়। এরসঙ্গেই আরজি করের তরুণী চিকিৎসক যেন সুবিচার পান, দোষীর যেন কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি হয় সেই দাবিতেও একযোগে তিন প্রধান বিবৃতি দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডান। এখানেই উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের আবহে নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হতে পারে সেই কারণেই ডুরান্ড কাপের ডার্বি বাতিল করা হয়। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে, রবিবার শামিল হন কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা।
গত রবিবার বহু প্রতীক্ষিত ডার্বিতে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের গ্যালারিতে ‘প্রতিবাদী’ টিফো নামানোর পরিকল্পনা ছিল বাংলার ফুটবল ময়দানের দুই প্রধানের ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের। এর মধ্যেই আচমকা ‘বড় ম্যাচ’ বাতিল করে দেয় বিধাননগর কমিশনারেট। জানানো হয় পুলিশি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে সেই আশঙ্কায় তা বাতিল করা হল। এই প্রসঙ্গে রবিবারই, সাংবাদিক সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জানান, ” কিছু লোক গণ্ডগোল করতে পারে আমরা আগাম খবর পাই। উপস্থিত ৬০-৬২ হাজার দর্শককে নিরাপত্তার কথা ভেবেই ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”

আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে ন্যায়বিচারের দাবি, শামিল ফুটবলাররাও!ময়দানে চলছে প্রতিবাদ
কিন্তু, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ডার্বি না হলেও শহরের রাজপথের দখল নেন ফুটবলপ্রেমীরা। সল্টলেক স্টেডিয়ামের সামনে মিশে যায় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডান মাঠের তিন প্রধানের স্বর। তিন সমর্থকদের হঠাতে লাঠিচার্জও করে পুলিশ। ডুরান্ড কাপ কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও অন্য শহরে গিয়েও আরজি কর নিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়ে যান বাংলার ফুটবলাররা। এহেন পরিস্থিতিতে সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল যাতে কলকাতার বুকে আয়োজিত হয় সেই আবেদন করেছে বাংলার তিন প্রধান ফুটবল দল।

ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে গোল শোধ, আবার কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন মহমেডান

ইস্টবেঙ্গল – ১
( বিবেক সিং)

মহমেডান – ১
( রহমান)

#কলকাতা: দুদিন আগেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সম্মানের ডার্বি হেরে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে সেটা ছিল আইএসএল। আর এটা কলকাতা লিগ। এটা কার্যত ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় সারির দল। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিল মহমেডান। গত শুক্রবার খিদিরপুরের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয়ের পরেই কার্যত খেতাব নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল মহমেডানের।

কারণ, তিন ম্যাচে নয় পয়েন্ট ছিল তাদের। এক ম্যাচ বেশি খেলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভবানীপুর।  ১৯৪০, ১৯৪১ সালের পর আবার টানা দু’বার কলকাতা লিগ জিতেছে মহমেডান। আপাতত সামান্য মিষ্টিমুখ করা হয়েছে। মঙ্গলবারের ম্যাচের পর লিগ জয়ের সেলিব্রেশন হবে। কিন্তু ৩৫ মিনিটের মাথায় কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।

সম্পূর্ণ ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে তৈরি লাল হলুদ ব্রিগেড জেসিন টিকের পাস থেকে বিবেক সিং এগিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গলকে। ওসুমানে, ভাজ বলটা বুঝতেই পারেনি। তবে প্রথমার্ধের শেষ দিকে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ইস্টবেঙ্গলের জেসিনকে। তার জায়গায় নামানো হল বিষ্ণুকে। দেখার ছিল দ্বিতীয়ার্ধে সম্মান রক্ষার ম্যাচে মহমেডান ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা।

ডিমেলোর পরিবর্তে মহমেডান কোচ নিয়ে এলেন অভিষেক হালদারকে। মার্কোস জোসেফ খোলস ছেড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা এদিন মরিয়া ছিলেন। বিশেষ করে ডিফেন্সে কেরলের অতুল উন্নিকৃষ্ণান প্রশংসা করার মতো নেতৃত্ব দিলেন।

সঙ্গে নবি হোসেন, রকিপ লড়াই করলেন লাল হলুদ ডিফেন্সে। ইস্টবেঙ্গলের অনামি ফুটবলাররা সেদিন যেন প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন প্রতিটা বলের জন্য লড়াই করার। কেন লুইসের শট পোস্টে লেগে বেরিয়ে না এলে মহমেডান খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনতে পারত।

তবে প্রশংসা করতে হবে ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ বিনো জর্জের। আজ তুলনায় অনেক শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে যেভাবে ইস্টবেঙ্গলকে পরিচালনা করলেন তিনি সেটা ইস্টবেঙ্গল শিবিরকে অক্সিজেন দেবে খারাপ সময়। ঠিক মনে হচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল যেখানে জয় তুলে নেবে সেখানে ৯০ মিনিটের মাথায় গোল শোধ করে দিল মহমেডান।

ফাসলু রহমান গোল করে গেলেন। বলটা নামিয়ে দিয়েছিলেন ওসমানু।  সুযোগ পেয়েও ম্যাচটা জিততে পারল না ইস্টবেঙ্গল। পরপর দু’বছর চ্যাম্পিয়ন সাদা কালো।

শেষ মুহূর্তে গোল হজম, মুম্বইয়ের কাছে হেরে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় মহমেডানের

মহমেডান স্পোর্টিং -০

মুম্বই সিটি এফসি -১
( বিপিন)

#কলকাতা: কলকাতার দুই প্রধান ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান যা পারেনি, তাই করে দেখিয়েছে মহমেডান স্পোর্টিং। ঐতিহ্যশালী ডুরান্ড কাপের শেষ চারে উঠেছিল তারা। আজ পরীক্ষা ছিল ফাইনালে যাওয়ার। ডুরান্ড কাপে বাংলা ফুটবলের ধ্বজা এখন মহমেডান স্পোর্টিংয়ে হাতে। বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শেষ চারের লড়াইয়ে আন্দ্রে চেরনিশভের দলের সামনে ছিল মুম্বই সিটি এফসি।

আইএসএলের তিনটি ক্লাবকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে উঠে আসা মহমেডান ফুটবলাররা ছিল বেশ ফুরফুরে মেজাজে। তবে মুম্বইকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন মহমেডান কোচ চেরনিশভ। ডুরান্ড কাপে সেমি-ফাইনালে ওঠা চারটি দলের মধ্যে একমাত্র আই লিগের দল মহমেডান স্পোর্টিং। বাকি তিনটি আইএসএলের।

মহমেডানের দুই বিদেশি স্টপার ওসমানে ও শাহির শাহিন ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছেন। এছাড়া তাজিকিস্তান মিডফিল্ডার নুরিদ্দিন ও ফরোয়ার্ড মার্কাস জোসেফ দলের বড় ভরসা। কোয়ার্টার- ফাইনালে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে দু’গোল করে প্রত্যাশার বাড়িয়েছেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার আবিওলা ডাওডা। যদিও আজ যিনি ছিলেন না।

ফয়েজ, আভাস, প্রীতম, আজহারদের মত ভারতীয় ফুটবলাররা প্রথম থেকেই দুর্দান্ত শুরু করলেন। মাটিতে দ্রুতগতির পাস খেলে চাপ তৈরি করা হয়েছিল মুম্বইয়ের ডিফেন্সে। প্রথম কুড়ি মিনিট শুধুই সাদা কালোর দাপট। তবে এরপর ধীরে ধীরে বল ধরে খেলা শুরু করল মুম্বই। স্টুয়ার্ট, চাংতে, বিপিন, যাহু, বিনিথ রাইরা চার পাঁচটা পাস খেলে ঢুকে যাচ্ছিল মহমেডান ডিফেন্সে।

কিন্তু আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ খেলা হলেও কাঙ্ক্ষিত গোল আসছিল না। মার্কস জোসেফ অনেক চেষ্টা করলেন, কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছিল না। যখন মনে হচ্ছিল খেলা যাবে অতিরিক্ত সময়, ৯০ মিনিটের মাথায় তখনই কাজের কাজ করে গেল মুম্বই।

স্টুয়ার্ট বল বাড়িয়েছিলেন চাংতেকে। মিজো ফুটবলারটি নিজে শট না মেরে বুদ্ধি করে বাড়িয়ে দিলেন বিপিনকে। ঠান্ডা মাথায় বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি মনিপুরী ফুটবলার। তীরে এসে তরী ডুবল মোহামেডানের। ফাইনালে চলে গেল মুম্বই।

সবচেয়ে বড় কথা এমন সময় গোল হজম করল সাদা কালো, তখন আর খেলায় ফিরে আসার সময় নেই। তাই গোটা টুর্নামেন্টে চোখ ধাঁধানো ফুটবল খেলেও বিদায় নিতে হল সাদা কালো শিবিরকে।