Tag Archives: nalanda university

Nalanda University: বিশ্বের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে তৈরি? কার হাতে ধ্বংস? জানুন ইতিহাস

বিহার: প্রাচীন ভারতের একটি প্রধান এবং ঐতিহাসিক শিক্ষাকেন্দ্র ছিল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বিশ্বের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে একই ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা থাকতেন। আর এর প্রাচীন ইতিহাসও রয়েছে। বহু গ্রন্থেই তা উল্লিখিত রয়েছে। অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬০০ বছর আগে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

গুপ্ত সম্রাট কুমার গুপ্ত প্রথম ৪৫০ খ্রিস্টাব্দে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। হর্ষবর্ধন এবং পাল শাসকরাও পরবর্তী কালে এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০০টি কক্ষ, ৭টি বড় কক্ষ এবং অধ্যয়নের জন্য একটি বিশাল ৯-তলা লাইব্রেরি বা গ্রন্থাগার ছিল। আর সেই গ্রন্থাগারে ছিল ৯০ লক্ষেরও বেশি বই।

এক সময় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করতেন। আর শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য ছিলেন দেড় হাজারেরও বেশি শিক্ষক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হত পড়ুয়াদের। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এখানে শিক্ষা, বাসস্থান এবং খাবার সবই ছিল বিনামূল্য। এখানে শুধু সারা দেশ থেকে নয়, কোরিয়া, জাপান, চিন, তিব্বত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, গ্রিস, মঙ্গোলিয়ার মতো দেশ থেকেও শিক্ষার্থীরা পড়তে আসতেন।

আরও পড়ুন: শুধু পুজোয় বা সৌন্দর্য বাড়াতে নয়, গাঁদা ফুলের উপকার জানলে চমকে না উঠে পারবেন না!

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে সারা বিশ্বে জ্ঞানের ভান্ডার বলে অভিহিত করা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় গ্রন্থ, সাহিত্য, ধর্মতত্ত্ব, যুক্তিবিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, দর্শন, জ্যোতির্বিদ্যার মতো অনেক বিষয় পড়ানো হত। আর তখন সেখানে যে বিষয়গুলো পড়ানো হত, তা অন্য কোথাও পড়ানো হত না। প্রায় ৮০০ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বকে জ্ঞানের পথ দেখিয়েছিল। তবে ১২ শতকে বখতিয়ার খিলজি এই বিশ্ববিদ্যালয় পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
২০১৪ সালে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় একটি অস্থায়ী অবস্থান থেকে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর ২০১৭ সালে নতুন ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভুটান, চিন, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ড-সহ অন্যান্য ১৭টি দেশ দ্বারা সমর্থিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। আসলে এই দেশগুলিই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১৩৭টি বৃত্তি প্রদান করে। আর্জেন্তিনা, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ঘানা, কেনিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জিম্বাবোয়ের শিক্ষার্থীরা ২০২২-২৪ এবং ২০২৩-২৫ ​​সালের জন্য স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম এবং ২০২৩-২৭ সালের জন্য পিএইচডি প্রোগ্রামে নথিভুক্ত হয়েছেন।

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি অ্যাকাডেমিক ব্লক রয়েছে। যেখানে ৪০টি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে। এখানে মোট ১৯০০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দু’টি অডিটোরিয়াম রয়েছে। যেখানে ৩০০টি আসন রয়েছে। এছাড়া একটি আন্তর্জাতিক কেন্দ্র ও অ্যাম্পিথিয়েটারও নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে দুই হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ফ্যাকাল্টি ক্লাব ও স্পোর্টস কমপ্লেক্স-সহ শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস একটি নেট জিরো ক্যাম্পাস। পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম এবং শিক্ষা এখানকার মূল আকর্ষণ। ক্যাম্পাসে জল রিসাইকেল করার জন্য একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।