Tag Archives: Palm

Talpatali Taste: টাটকা তালরস জ্বাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়! গরম থেকে বাঁচতে তালপাটালি যেন অমৃতসমান

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার এক্সক্লুসিভ খাঁটি তালের গুড়। শীত কালে খেজুর গুড়ের মত গরম কালে তালের গুড় স্বাদে যেমন অতুলনীয়, সেইরকমই প্রকৃতিজাত উপকরণ দিয়েই তৈরি হয় এই গুড়। প্রক্রিয়াটা বেশ দীর্ঘ এবং পরিশ্রমের। চৈত্র মাসের পর পর থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত সকাল ৬ টা নাগাদ লম্বা তাল গাছে উঠে পড়তে হবে মাটির কলসি কোমরে বেঁধে। তাল গাছের ছাল বেশ রুক্ষ এবং ছুঁচলো হওয়ার কারণে লম্বা বাঁশের সাহায্যে গাছে উঠতে হয়। এর পর একের পর এক জমে থাকা মোচা ভেঙে রস সংগ্রহ করে, বাকি মাটির হাঁড়ি উপরে বেঁধে দিয়ে নীচে নেমে আসেন রস সংগ্রাহকরা। এই সদ্য পেরে আনা রসের, ভেষজ গুণ বিপুল। তবে বেশিক্ষণ রেখে দিলেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণে, তড়িঘড়ি শুরু হয়ে যায় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া।

গুড় তৈরি করতে সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। তাল রসকে ফুটিয়ে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় গুড়। ব্যবহার করা হয় এক ধরনের বিশেষ অ্যাসিড। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অম্লের প্রয়োগ করে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ফুটিয়ে জ্বাল বন্ধ করে দিতে হবে। এর পর রসটাকে ছাঁকনির সাহায্যে ছেঁকে ফের জ্বাল দিতে থাকতে হবে। এভাবেই দুই তিন ঘণ্টার মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে গুড়। গুড় ছাড়াও পাটালি, গুড়ের গুঁড়ো এবং মিছরি তৈরি হয় তালের রস দিয়ে।

বাঁকুড়ায় হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় তৈরি হয় এই গুড়। বাঁকুড়া এক্সক্লুসিভ তালের গুড় তৈরি করছেন ওন্দা ব্লকের কল্যাণী অঞ্চলের রামবেড়া গ্রামের পিন্টু মণ্ডল। তিনি বেশ অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন এই ব্যবসায়। তিনি বলেন, কলকাতার বাজারে বাঁকুড়ার তৈরি বরফি এবং পাটালি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি দরে। তালের চিনি ২৫০ টাকা প্রতি কেজি। আগের চেয়ে গুণগতমান বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন : মঙ্গল ও বুধ বৈশাখী অমাবস্যা! সন্ধ্যায় করুন এই কাজ, ঘর মোছার জলে দিন এই জিনিস! অভাব কাটিয়ে চুম্বকের টানে পাবেন অর্থসুখ

প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে চোখের সামনে তৈরি করা গুড় খেলে মুখে মিলিয়ে যাচ্ছে। এই ঋতুকালীন সুখাদ্য ধীরে ধীরে বাইরের বাজারকেও দখল করছে।বাঁকুড়ায় বহু ফাঁকা জমি পড়েআছে যেখানে দেখা যাবে প্রচুর পরিমাণ তাল গাছ। ফল থেকে ছাল বাকল, পুরোটাই ব্যবহারযোগ্য এই গাছের নানা অংশ। ব্যবহারের পাশাপাশি তৈরি হতে পারে শিল্প। তার জন্য প্রয়োজন উদ্যোগ এবং সরকারি সহায়তা।