বাড়িতে ইঁদুর, টিকটিকি বা পিঁপড়ে থাকা খুবই সাধারণ ব্যাপার। সকলের বাড়িতেই এরা কমবেশি বাসা বাধে৷ এদের বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। পিঁপড়ে তাড়ানোর জন্য অনেক ধরনের স্প্রে এবং পাউডার ব্যবহার করা হয়।ইঁদুর ও ছুঁচোর জন্য খাঁচা কিংবা ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তবে আপনি কি জানেন,যে বাড়িতে থাকা ইঁদুর এবং ছুঁচো থাকলে আপনার উপর দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ বর্ষণ করতে পারে৷ভোপালের বাসিন্দা জ্যোতিষী এবং বাস্তু পরামর্শক পণ্ডিত হিতেন্দ্র কুমার শর্মার মতে , ঘরে ইঁদুর এবং ছুঁচো আপনাকে অনেক শুভ এবং অশুভ লক্ষণ দেয়। এগুলো অর্থের আগমন নির্দেশ করে। এমনও বলা হয় যে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ইঁদুর দেখতে পেলে তা অশুভ লক্ষণ।হিন্দু ধর্মে ইঁদুরকে ভগবান গণেশের বাহন হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং বাড়িতে তাদের পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু ঘরে ইঁদুরের ক্রমাগত বৃদ্ধি বা বড় বড় গর্ত তৈরি করা অশুভ বলে মনে করা হয়।বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, যদি আপনার বাড়িতে ইঁদুর শব্দ করে তবে এটি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার ইঙ্গিত দেয়।ইঁদুর বারবার কোনও জিনিস কাটলে তা আপনার জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি হ্রাসের লক্ষণ।এটা বিশ্বাস করা হয় যে ইঁদুরের উৎপাতে বিরক্ত হলে তাদের ঘর থেকে বের করে দিতে পারেন, তবে তাদের হত্যা করা উচিত নয়। এটি করলে ভগবান গণেশ রেগে যেতে পারেন।হিন্দু ধর্মে ছুঁচোকে দেবী লক্ষ্মীর রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং বাড়িতে এর উপস্থিতি একটি শুভ লক্ষণ হিসাবে বিবেচিত হয়।সন্ধ্যায় যদি আপনার ঘরে ছুঁচো প্রবেশ করে তবে এটি সুখ এবং সমৃদ্ধির চিহ্ন। যদি ছুঁচো কোনও ব্যক্তিকে ঘিরে থাকে তবে এটি ভবিষ্যতে সেই ব্যক্তির জন্য কোনও বড় উপকারের লক্ষণ।বাস্তু অনুসারে, দীপাবলির রাতে আপনি যদি একটি ছুঁচো দেখতে পান তবে এটি আপনার ভাগ্যের দরজা খোলার লক্ষণ। আপনার ঘরে যদি ছুঁচো থাকে, তবে তাকে কখনওই ক্ষুধার্ত রাখবেন না, কিছু খাবার দিতে থাকুন, এটি করলে আপনি শুভ ফল পেতে পারেন।
গরমকাল আসছে। আর গরম পড়তে না পড়তেই ঘরে ঘরে ইঁদুরের উৎপাত নাজেহাল হাল গৃহস্থের। ইঁদুর একদিকে যেমন খাবারে মুখ দেয় তেমনই আবার জামাকাপড় কেঁটে জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে।আর আলো নেভালেই কার-ই বা ভাল লাগে ঘরের মধ্যে ইঁদুরের ছোটাছুটি। খাবার নষ্ট করা থেকে শুরু করে কাপড়চোপড়, কাগজপত্র কাটাকাটিতে এই ছোট্ট প্রাণীটি ওস্তাদ।রোগের জীবাণু বয়ে বেড়ানো ছাড়াও ইঁদুরের নানা ভোগান্তির কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই ইঁদুর তাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠেন অনেকেই। কিন্তু ইঁদুর বিষ দিয়ে ইঁদুর মারতে কারই ভাল লাগে আর।আসলে ইঁদুর মারার হ্যাপা কিছু কম নয়। বাজারে ইঁদুর মারার বিষ কিনতে পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু বিষ খাইয়ে ইঁদুর মারা আরেক ঝামেলায় ফেলতে পারে। সেই ইঁদুর খুঁজে বের করে বাইরে না ফেলতে পারলে বিকট গন্ধে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়।তাই বিষ খাইয়ে ইঁদুরকে মারার পরিবর্তে বরং বিরক্তিকর প্রাণিটিকে আপনার বাড়ি দূরে রাখাটাই শ্রেয়। সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষ একটি উপায়ে ঘর থেকে ইঁদুর তাড়ানো সম্ভব। তবে বিশেষ সেই উপায়টি কেবল পুরুষ ইঁদুরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, নারী ইঁদুরের ক্ষেত্রে না।আর সেই বিশেষ উপায়টি হল, কলা। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। এই ফলের মাধ্যমেই পুরুষ ইঁদুরকে বাড়ি থেকে তাড়ানো সম্ভব। কারণ, গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে পুরুষ ইঁদুর কলা দেখলে পালিয়ে যায়।২০২২ সালে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, পুরুষ ইঁদুর কলাকে ভয় পায়। গবেষণাটিপত্রটি গত বছরের ২০ মে তারিখে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।বিজ্ঞানীরা গর্ভবতী ইঁদুরের কাছাকাছি থাকা পুরুষ ইঁদুরের স্ট্রেস হরমোন কেন বেড়ে যায়, তার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়েই অভিনব এই বিষয়টি আবিষ্কার করেন।এ প্রসঙ্গে গবেষণাপত্রটির সিনিয়র লেখক ও ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জেফরি মোগিল বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটা আমাদের জন্য আশ্চর্যজনক ছিল। কারণ আমাদের গবেষণার লক্ষ্য এটি ছিল না, কিন্তু ঘটনাক্রমে আমরা এ বিষয়টি আবিষ্কার করেছি।’বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গর্ভবতী ইঁদুর তার বাচ্চাদের পুরুষ ইঁদুরের কাছ থেকে নিরাপদ রাখতে তাদের প্রস্রাবে একটি বিশেষ রাসায়নিক ক্ষরণ করে। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী ইঁদুরের প্রসাবে এন-পেন্টাইল অ্যাসিটেট নামক রাসায়নিকের কারণে বাচ্চাদের কাছে ঘেষে না পুরুষ ইঁদুর।এই যৌগ ইঁদুরের মানসিক চাপ তৈরি করে। গবেষণাতে দেখা গিয়েছে এন-পেন্টাইল যৌগ কলাতেও পাওয়া যায়। যার কারণে পুরুষ ইঁদুর কলাকে ভয় পায়। কলা দেখলে পালিয়ে যায়।টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, এ কারণে বাড়িতে কলা রেখে ইঁদুরের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব। কলা বাড়িতে রেখে দিলে ইঁদুর আসার সম্ভাবনা কম।বাড়িতে যদি আগে থেকেই ইঁদুর থাকে, তাহলে সেই জায়গায় পাকা কলা রেখে দিতে পারেন। ইঁদুরকে না মেরে তার থেকে বাঁচার একটা ভাল উপায় হতে পারে এই সস্তার ফল, কলা।
