পেটে এক আর মুখে এক নয়। মনে যা আসত, ঋষি কাপুর খোলাখুলি বলে দিতেন। ঢাকঢাক গুড়গুড় তাঁর স্বভাব নয়। আত্মজীবনীর নামও তাই ‘খুল্লামখুল্লা: ঋষি কাপুর আনসেন্সরড’। ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবন থেকে শুরু করে স্ত্রী নীতু কাপুরের সঙ্গে সম্পর্ক এবং অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তাঁর ‘দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা’ নিয়ে খোলাখুলি লিখেছেন তিনি।
আত্মজীবনীতে ঋষি কাপুর লিখেছেন, অনেক অভিনেতাই অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করতেন না। কারণ “পরিচালক এবং লেখকরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী চরিত্রগুলো তাঁকেই দিত”।
আরও পড়ুন: ফোনের স্টোরেজ ফুল? হ্যাং করছে ফোন? খালি করার ৫ সেরা উপায় জেনে নিন, ঝড়ের গতিতে ছুটবে মোবাইল
ঋষির নিজের জবানিতে, “আমি স্বীকার করে নিচ্ছি অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে আমার দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা রয়েছে। তখনকার দিনে অল স্টার মুভিতে কাজ করার সবচেয়ে বড় অসুবিধা ছিল, সবাই শুধু অ্যাকশন ফিল্ম বানাতে চাইত। ফলে যে অভিনেতা অ্যাকশন দৃশ্যে সাবলীল সেই ভাল পার্টটা পেট। তাই ‘কভি কভি’-র মতো রোম্যান্টিক ফিল্ম বাদে যে ক’টা মাল্টি স্টার মুভিতে কাজ করেছি, কোনওটাতেই ভাল রোল পাইনি। পরিচালক এবং লেখকরা অমিতাভকেই মুখ্য চরিত্র দিত। শুধু আমি নয়, শশী কাপুর, শত্রুঘ্ন সিনহা, বিনোদ খান্না, ধর্মেন্দ্ররাও একই সমস্যায় পড়েছে”।
অমিতাভের প্রশংসাও করেছেন ঋষি। তিনি লিখেছেন, “অমিতাভ নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত অভিনেতা, অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং সেই সময় বক্স অফিসের নাম্বার ওয়ান তারকা। তিনি একাধারে অ্যাকশন হিরো এবং রাগী যুবক। তাঁর কথা ভেবেই চরিত্র লেখা হত। আমরা ছোট তারকা, কিন্তু অভিনয় ক্ষমতা কম ছিল না। এটা সত্যি তাঁর সঙ্গে ম্যাচ করার জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমার সময় মিউজিক্যাল বা রোম্যান্টিক নায়কের কোনও জায়গা ছিল না”।
অমিতাভ বচ্চন তাঁর সাফল্যের জন্য কখনও সহ-অভিনেতাদের কৃতিত্ব দেননি। এমনই অভিযোগ ঋষি কাপুরের। তাঁর স্পষ্ট কথা, “অমিতাভ কখনও সহ-অভিনেতাদের যথাযথ কৃতিত্ব দেননি। সব কৃতিত্ব দিয়েছেন লেখক ও পরিচালকদের। সেলিম-জাভেদ, মনমোহন দেশাই, প্রকাশ মেহরা, যশ চোপড়া এবং রমেশ সিপ্পি। কিন্তু তাঁর সাফল্য যে সহশিল্পীদের ভূমিকা ছিল, সেটা স্বীকার করতেই হবে। যেমন ‘দিওয়ার’ ছবিতে শশী কাপুর, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’ এবং ‘কুলি’তে ঋষি কাপুর বা বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা এবং ধর্মেন্দ্র সকলেই তাঁর সাফল্যে অবদান রেখেছিলেন, মুখ্য চরিত্রে না থেকেও। এটা স্বীকার করতে হবে। তবে আমরা এসব গায়ে মাখিনি”।