মুর্শিদাবাদ: গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হরিহরপাড়া থানার গজনীপুর এলাকায়। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম সনাতন ঘোষ। জানা যায়, কয়েকজন দুষ্কৃতী সনাতন ঘোষের মোটরবাইক ঘিরে ধরে খুব কাছে থেকে গুলি করে।
ভোট পর্ব শান্তিপূর্নভাবে মিটে গেলেও ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন জায়গা। জানা যায়, রবিবার রাত ১২টা নাগাদ সনাতন ঘোষ-সহ আরও কয়েকজন দুগ্ধ ব্যবসায়ী গজনীপুর থেকে পাড়াগ্রামে বাড়ি ফিরছিলেন মোটরবাইকে করে। গজনীপুর ও শ্রীপুরের মধ্যবর্তী মাঠ এলাকায় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাদের মোটরবাইক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর খুব কাছে থেকে সনাতন ঘোষকে এলোপাথারি গুলি করে।
গুলির আওয়াজ শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে গুলিবিদ্ধ সনাতন ঘোষকে উদ্ধার করে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রত্যক্ষদর্শী মেঘনাদ ঘোষ বলেন, সনাতন ঘোষের সঙ্গে আমরা দুটো মোটরবাইকে ৬ জন বাড়ির দিকেই যাচ্ছিলাম। আর তখনই মাঠের মধ্যে একটা চারচাকা গাড়ি এসে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। আমরা মোটরবাইক থেকে পড়ে যায়। তারপরেই কয়েকজন দুষ্কৃতী সনাতন ঘোষকে গুলি করতে শুরু করে। আমরা আতঙ্কে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসি। তবে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই খুন করেছে। গজনীপাড়া এলাকাতে বছর দেড়েক আগে বাদলচন্দ্র ঘোষ নামে এক ব্যক্তি খুন হয়। সেই খুনের প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন সনাতন ঘোষ। জমি জায়গা সংক্রান্ত কারণেই সে খুন হয়।
সনাতন ঘোষের পরিবার বেশ কিছুদিন ধরে গ্রামছাড়া ছিল। লোকসভা ভোটের আগে তারা গ্রামে ফিরে আসে পুলিশি তৎপরতায়। সেই খুনের ঘটনায় সনাতন ঘোষ বেশকিছুদিন জেলবন্দী ছিল। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে সেই খুনের বদলায় এই খুন। গ্রামের মধ্যে তল্লাশি চলছে। যেখানে খুন হয়েছে সেখানে গুলির খোল ও তাজা বুলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রামে উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
মৃত সনাতন ঘোষের মা চঞ্চলা ঘোষ বলেন, আমার ছেলেকে মিথ্যা খুনের ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছিল। সেই কারণে আমার ছেলে একবছর জেলেও ছিল। আমরা অনেকদিন গ্রামছাড়া ছিলাম। বাড়ি ফিরে আসার পরেও জমি সংক্রান্ত কারণে আমাদের সঙ্গে আবার বাদলচন্দ্র ঘোষের পরিবারের অশান্তি হয়। ওরাই আমার ছেলেটাকে খুন করেছে। আমি বিচার চাই। মৃত বাদলচন্দ্র ঘোষের স্ত্রী শিলা ঘোষ বলেন, জামি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে দেড় বছর আগে আমার স্বামীকে খুন করা হয়। সনাতন ঘোষ ছিল মূল অভিযুক্ত। নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পন করেছিল সনাতন। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে আসার পরেও জমি নিয়ে আমাদের অশান্তি করত। আমি থানায় সব জানিয়েছি। আমাদের পরিবারের কেউ সনাতন ঘোষকে খুনের ঘটনায় জড়িত নেই।