Tag Archives: Vantara

Nita Ambani: কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানির বনতারা উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ! কী বললেন নীতা আম্বানি

মুম্বই: অনন্ত আম্বানির বনতারা হল সকল জীবের প্রতি সহানুভূতি এবং শ্রদ্ধার মূল ভারতীয় দর্শনের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। প্যারিসে ২০২৪ অলিম্পিকসের জন্য ইন্ডিয়া হাউজে সম্প্রতি এমনটাই জানালেন অনন্তের মা তথা রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারপার্সন নীতা আম্বানি।

নীতা আম্বানি বলেন যে, “বনতারার অর্থ হল জঙ্গলের তারকা। আর বনতারা আশা এবং আরোগ্য লাভের ক্ষেত্রে আলোর দিশা দেখাচ্ছে। আমার কনিষ্ঠ পুত্রের দুর্দান্ত নেতৃত্ব এবং আমাদের ফাউন্ডেশনের সহায়তায় বনতারা ভারসাম্য ফিরে পাচ্ছে আর জীবনের মেলবন্ধনও বজায় রাখছে। সারা বিশ্বের প্রায় দু’হাজারেরও বেশি পশু নিজেদের ঘর খুঁজে পেয়েছে বনতারার রেসকিউ এবং রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে।”

ইন্ডিয়া হাউজে বনতারার এক সুন্দর মেলবন্ধন দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন দেশ-বিদেশের অতিথিরা। কিংবদন্তি পার্ক দি লা ভিলেটে অবস্থিত এই ইন্ডিয়া হাউজ। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আইওএ)-এর সঙ্গে পার্টনারশিপের পরিচায়ক হিসেবে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের আইডিয়াতেই তৈরি হয়েছে এটি। যা ভারতীয় সংস্কৃতি, শিল্পকলা, ক্রীড়া, প্রযুক্তি এবং খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করছে। এছাড়া গোটা বিশ্বের দরবারে ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে অনন্য রূপে তুলে ধরছে ইন্ডিয়া হাউজ।

বনতারা কী?

বনতারা হল একটি উচ্চাভিলাষী বন্যপ্রাণ প্রকল্প। যা প্রতিষ্ঠা করেছেন অনন্ত আম্বানি। এই কাজে সহায়তা করেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। রিলায়েন্সের জামনগর রিফাইনারি কমপ্লেক্সের গ্রিন বেল্টের মধ্যে ৩০০০ একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত অনন্ত আম্বানির মস্তিষ্কপ্রসূত বনতারা। মূলত অত্যাচারিত-নিপীড়িত, আহত এবং বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণীদের অভয়ারণ্য হিসেবে কাজ করছে বনতারা। এখানেই শেষ নয়, এটিকে একটি সর্বাঙ্গীণ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারও বলা যেতে পারে। কারণ বনতারার বাসিন্দাদের জন্য সেখানে তৈরি করা হয়েছে প্রাকৃতিক এবং যোগ্য পরিবেশ।

প্রসঙ্গত, বনতারা উদ্যোগ ভারতে এই প্রথম বারের জন্য নেওয়া হল। যা একেবারেই অনন্তের মস্তিষ্কপ্রসূত। শুধু তা-ই নয়, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের বোর্ডের ডিরেক্টর অনন্ত আম্বানির দক্ষ নেতৃত্বে বনতারা দারুণ ভাবে এগিয়ে চলেছে। বনতারার লক্ষ্য হল, সেরা গুণমানসম্পন্ন পশু সংরক্ষণ গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে প্রাণীদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত তৈরি করাও এর অন্যতম লক্ষ্য। যার মধ্যে অন্যতম হল- স্বাস্থ্য পরিষেবা, হাসপাতাল, গবেষণাকেন্দ্র এবং অ্যাকাডেমিক সেন্টার।

আরও পড়ুন: চঞ্চু ভেঙে যাওয়ায় খেতে পারছিল না স্ত্রী হর্নবিল, বনতারার চিকিৎসা আর সেবায় এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে পাখি

আরও পড়ুন: পেটের মধ্যে ছিল ২৭ টি পচা ডিম! ‘শেরা’ নামের বার্মিজ পাইথনটিকে মৃত্যুর মুখ কীভাবে উদ্ধার করে বনতারা? দেখুন

এখানেই শেষ নয়, বনতারার বিভিন্ন কর্মসূচি পরিকল্পনাও রয়েছে। অ্যাডভান্সড রিসার্চও বনতারার অন্যতম লক্ষ্য। ফলে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন) এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউডব্লিউএফ)-এর মতো খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোল্যাবোরেশনও করছে তারা।

বিগত কয়েক বছর ধরে এই কর্মসূচির মাধ্যমে অসুরক্ষিত পরিস্থিতির মধ্যে থাকা ২০০টিরও বেশি হাতি এবং হাজার হাজার পশু, সরীসৃপ ও পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গন্ডার, লেপার্ড এবং কুমীরের মতো মূল প্রজাতির প্রাণীদের রিহ্যাবিলিটেশনের উদ্যোগও গ্রহণ করেছে বনতারা।
চালু করার সময় অনন্ত আম্বানি বলেছিলেন যে, ঠখুব কম বয়সেই আমার শখ থেকেই এটার সূচনা হয়েছিল। কিন্তু এখন বনতারা এবং আমাদের দুর্দান্ত অঙ্গীকারবদ্ধ টিমের সহায়তায় এটা আমার লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।ঠ বনতারায় রয়েছে হাতিদের জন্য বিশেষ কেন্দ্র। এর পাশাপাশি বাঘ, সিংহ, কুমীর, লেপার্ডের মতো বড়-ছোট নানা প্রজাতির প্রাণীর জন্যও রয়েছে সুযোগ-সুবিধা।

Vantara: লড়াই করতে গিয়ে গালে আঘাত লেগেছিল ফিনের, বনতারার পরম যত্নে জীবন পেল কুমিরটি

জামনগর: অনন্ত আম্বানির বনতারায় রয়েছে নোনা জলের কুমিরও। তবে এই প্রজাতির কুমিররা নিজেদের জায়গা কাউকে ছাড়তে চায় না। সেই সঙ্গে এদের মধ্যে অন্যদের প্রতি সহনশীলতাও কম থাকে। আর বনতারার বাসিন্দা নোনা জলের কুমিরদের মধ্যে অন্যতম হল ফিন। রোদ পোহানোর একটি জায়গার জন্য অন্য কুমিরদের সঙ্গে বেশ লড়াই হয় ফিনের।

যার জেরে তার বাম গালে গুরুতর আঘাত লাগে। আর এর ফলস্বরূপ সংক্রমণ এবং অন্যান্য কুমিরদের ফের আক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কুমিরদের অভয়ারণ্যের কেয়ারটেকাররা ফিনের যন্ত্রণা দেখে অবিলম্বে ঝাঁপিয়ে পড়েন। খুব সাবধানে নোনা জলের কুমিরটিকে ধরে চিকিৎসার জন্য একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসেন তাঁরা। পরীক্ষানিরীক্ষা করে পশু চিকিৎসকেরা ফিনের গুরুতর অবস্থার কথা জানতে পারেন।

আরও পড়ুন: জোরকদমে অনন্ত-রাধিকার বিয়ের প্রস্তুতি, প্রি ওয়েডিংয়ে শাহরুখের বিশেষ নাচ! ভিডিও ভাইরাল

বুঝতে পারেন, গুরুতর আঘাতের কারণে ফিনের পেশি এবং গ্ল্যান্ডগুলি একেবারে উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল। এরপর শুরু হয় চিকিৎসা। লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া দিয়ে ক্ষতস্থানটি ভাল করে পরিষ্কার করা হয়েছিল। এবার সন্তর্পণে আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটিকে সেলাই করে দেওয়া হয়েছিল।

এই উপায় অবলম্বনের পরে ফিনকে দীর্ঘ-কার্যকরী অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছিল। যাতে তার সংক্রমণ না ছড়ায় আর ব্যথাও যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে। কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্রাম এবং নজরদারিতে থাকার পরে দারুণ ভাবে সেরে উঠতে থাকে ফিন।

আরও পড়ুন: দামি দামি মশার তেল-ধূপ বাদ দিন, পাতিলেবুতে ?এই? জিনিসটি জ্বালান! মশার বংশ খুঁজে পাবেন না

ক্ষতস্থান পুরোপুরি সেরে যায় এবং তাকে নিজের এনক্লোজারে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ধীরে ধীরে সে জলেও ফিরে যায়। শুধু ফিন নয়, ফিনের মতো আরও অনেক প্রাণীর চিকিৎসার সাফল্যের গল্প বোনা হচ্ছে বনতারায়। গত সোমবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের বোর্ডের ডিরেক্টর অনন্ত আম্বানির চালু করা বনতারা উদ্যোগের লক্ষ্য হল, দেশ-বিদেশের আহত, অত্যাচারিত এবং ঝুঁকির মুখে থাকা প্রাণীদের উদ্ধার, চিকিৎসা, যত্ন এবং পুনর্বাসন দেওয়া।

রিলায়েন্সের জামনগর রিফাইনারি কমপ্লেক্সের গ্রিন বেল্টের মধ্যে ৩০০০ একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত অনন্ত আম্বানির মস্তিষ্কপ্রসূত বনতারা। এখানে অত্যাধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র, বৈজ্ঞানিক ভাবে ডিজাইন করা দিন ও রাতের এনক্লোজার, হাইড্রোথেরাপি পুল, জলাশয় এবং হাতিদের আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসার জন্য একটি বড় এলিফ্যান্ট জ্যাকুজি-সহ একটি হস্তী কেন্দ্রও রয়েছে।

সার্কাসে নিযুক্ত অথবা ঘিঞ্জি চিড়ায়াখানা থেকে উদ্ধার করে আনা অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের জন্যও তৈরি করা হয়েছে ৬৫০ একরের একটি রেসকিউ এবং রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। যেখানে ভারত তথা সারা বিশ্ব থেকে বিপর্যস্ত এবং বিপজ্জনক পরিবেশের প্রাণী উদ্ধার করে তাদের অত্যাধুনিক বড় এনক্লোজার এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়। প্রসঙ্গত, বনতারা যেখানে অবস্থিত, সেই জামনগরেই আগামী ১ মার্চ থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত বসতে চলেছে অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা মার্চেন্টের তিন দিন ব্যাপী প্রাক-বিবাহ উৎসবের আসর।