পাঁচমুড়ার ঘোড়া এবং শিল্পী

Terracotta: ৯৪ বছরেও শিল্পী তৈরি করছেন বাঁকুড়ার বিখ্যাত হাতি-ঘোড়া! ধন্য এই গ্রাম

বাঁকুড়া: পুরানো বর্ধিষ্ণু ও টেরাকোটা শিল্পীদের গ্রাম হল পাঁচমুড়া। খাতড়া মহকুমার তালড্যাংরা ব্লকের পাঁচমুড়া ‘টেরাকোটা’ গ্রাম নামে পরিচিত। মৃৎশিল্পীদের গ্রাম হিসেবে তালড্যাংরার পাঁচমুড়া গ্রামের নাম-ডাক সর্বত্র ছড়িয়েছে।

বাঁকুড়ার পরিচিত মাটির হাতি, ঘোড়া, মনসার চালি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমা ও গৃহসজ্জার নানান সামগ্রী, মাটি দিয়ে এই সব কাজ করতেই সিদ্ধহস্ত শিল্পীরা। পাঁচমুড়ার টেরাকোটা পেয়েছে জিআই স্বীকৃতি। পাঁচমুড়ার ঘোড়ার নাম পৌঁছে গেছে বিশ্বের দরবারে।

আরও পড়ুন: যুগের ধাক্কায় অস্তিত্ব সঙ্কটে শতাব্দী প্রাচীন ‘সব পেয়েছির’ হাটে

এখানকার শিল্পী রাসবিহারী কুম্ভকার রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লাভ করেন ১৯৬৯ সালে। স্বাভাবিকভাবেই শিল্পের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় পাঁচমুড়ার মানুষের। এর পরে একাধিক শিল্পী ভারত সরকার ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এই মুহূর্তে গ্রামে প্রায় ৮০ টি কুম্ভকার পরিবার রয়েছে। প্রত্যেকেই টেরাকোটা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। মৃৎশিল্পী সমবায় সমিতি রয়েছে গ্রামের প্রাণকেন্দ্রে। মৃৎশিল্পী বলেন, পাঁচমুড়ার মাটি অনেক বেশি টেকসই। অন্যান্য মাটি কিছুদিন পর ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তবে পাঁচমুড়ার মাটিতে রয়েছে অসাধারণ বাইন্ডিং কোয়ালিটি।

বাঁকুড়া জেলার হাতি ঘোড়ার ঐতিহ্য ধরে রাখার নেপথ্যে এই গ্রামের ভূমিকা অপরিসীম। তিনটি পাড়ায় বিভক্ত এই মৃৎশিল্পী পরিবারগুলি। মূল জীবিকা পোড়া মাটির শিল্প দ্রব্য তৈরি করা। বছরে বারো মাসের মধ্যে এগারো মাস কাজ চলে এই গ্রামে। বিরতি থাকে বৈশাখ মাসে। তবে বাঁকুড়ার পোড়া মাটির ঐতিহ্য যেন এখনও এককভাবে ধরে রেখেছে এই গ্রাম।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী