সুপ্রিয়া বর্মন, বেনু বর্মন এবং সুব্রতরাজ বর্মন

Cooch Behar News: থার্মোকলের কার্টন দিয়ে তৈরি ঘরেই থাকার জায়গা! এই পরিবারের কষ্টের কাহিনী চোখে জল আনবে

তুফানগঞ্জ: জেলার বিভিন্ন প্রান্তে উন্নয়ন হয়েছে বেশ কিছু। তাই তো মানুষের প্রাথমিক তিনটি চাহিদা অন্ন, বস্ত্র এবং বাসস্থান নিয়ে চিন্তার অনেকটাই অবসান হয়েছে। তবে এই সময়ে দাঁড়িয়েও তুফানগঞ্জের এক পরিবারের আর্থিক দুর্দশা চোখে জল আনবে যেকোনও মানুষের। তুফানগঞ্জ মহকুমার ১ নং ব্লকের ধলপল ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। এখানেই তুফানগঞ্জ-ভাটিবাড়ি রাজ্য সড়কের ধারে অস্থায়ী বাড়ি করে বসবাস করছে এই পরিবার। অস্থায়ী কারণ, এই জমি পূর্ত দফতরের। আর সেখানেই মাছের কার্টন ও বাঁশ দিয়ে ঘর তৈরি করে থাকছেন তাঁরা। এছাড়া সেই কার্টনের উপর কালো ত্রিপল দেওয়া রয়েছে। তবে সবটাই শক্ত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ শসা নয়, শসার খোসাতেই আছে জাদু! দৃষ্টিশক্তি হবে তুখোড়, ভিটামিন এ-তে ভরপুর

বাড়ির মালিক একজন অতি ক্ষুদ্র মানের মাছ বিক্রেতা। এই মাছ বিক্রি করে সারাদিন যেটুকু রোজগার হয়। সেটা দিয়েই সংসার চলে তাঁদের। বেনু বর্মন জানান, “দীর্ঘ সময় ধরে এই দুটি অস্থায়ী ঘর তাঁদের একমাত্র ঠিকানা। রোদ, ঝড় ও বৃষ্টিতে কোন রকমে মাথা গুঁজে থাকতে হয় এখানে। তাঁর নিজের কোন জমি না থাকায় রাস্তার ধারের জমিতে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। এই জায়গা পূর্ত দফতরের অধীনে রয়েছে। তাই যেকোনও দিন রাস্তা বড় হলে তাঁদের থাকার এই জয়গাটুকুও চলে যাবে। তখন মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও থাকবে না। বর্তমানে তাঁর মাছ বিক্রির টাকায় কোন রকমে সংসার চলে। দুই সন্তান মেয়ে সুপ্রিয়া ও ছেলে সুব্রতরাজ কে নিয়ে থাকেন তিনি।”

সুপ্রিয়া ধলপল হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। এবং সুব্রতরাজ বর্মন চলতি বছরে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। সুব্রতরাজ বর্মন জানান, “১৫ থেকে ১৬ বছর আগে তাঁর বাবা এখানে ঘর বানিয়ে থাকা শুরু করেন। হঠাৎ করেই একদিন তাঁর মা নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর থেকে তাঁর বাবা কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। এখন মাছ বিক্রি করে যা জোটে তা দিয়েই সংসার চলে। দিনে দু’বার, কোনও দিন একবার খেয়েই দিন কাটে পরিবারের। শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই। শোওয়ার জন্য বাঁশের মাচা রয়েছে। মোমবাতির আলোয় আবার কখনও পাশের গ্যাস অফিসের আলোয় তাঁদের পড়াশোনা চলে।” এত কষ্ট করেও তবুও দুই ভাইবোন পড়াশোনার কাছে হার মানেনি। জীবন সংগ্রাম প্রতিনিয়ত তাঁদের কাছে পরীক্ষা নিয়েই চলেছে।

Sarthak Pandit