বন্যপ্রাণের হামলা নিয়ে জরুরি বার্তা

Purulia News: বন্যপ্রাণীর হামলায় মৃতদের পরিবারের জন্য অভিনব সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের, খুশি বহু পরিবার

পুরুলিয়া: বন্যপ্রাণ বা হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনা প্রায়শই শোনা যায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পরিবারের একমাত্র রোজগারের সদস্য কখনও হাতি, বাঘ, কুমির, লোপার্ড-এর মতো বন্যপ্রাণীর হামলায় মারা যান। আর সেই সকল পরিবারের সদস্যরা একেবারেই দিকশূন্য হয়ে পড়ে। ‌

সূত্র মারফর জানা গিয়েছে, দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছরে বিভিন্ন জেলায় বন্যপ্রাণের হামলায় মৃত্যু হয়েছে ৬৭৫ জনের। ‌এবার সেই সকল পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। মৃতের পরিবারের একজন করে সদস্যকে ফরেস্ট ভলেন্টিয়ারের চাকরি দিচ্ছে রাজ্য। নতুন বছর থেকেই বনদফতর শুরু করে দিয়েছে এর প্রক্রিয়াকরণ। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলার ওই পরিবারের একজন করে সদস্যকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক এই কাজে ফরেস্ট ভলান্টিয়াররা জঙ্গল এবং বন্যপ্রাণ রক্ষায় মূলত কাজ করবেন।

আরও পড়ুন: দুই ঘূর্ণাবর্তের ধাক্কায় ধেয়ে আসছে ঝোড়ো হাওয়া! ঘনঘন বজ্রপাতে ফালাফালা হবে ১০ জেলা, চলতি সপ্তাহেই ফের বৃষ্টির দাপট

তবে এই কাজ ছাড়াও রেঞ্জ বা বিটের অন্যান্য কাজও তাঁদের করতে হতে পারে। আপাতত মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতন মিলবে। তবে তাঁদের ইউনিফর্ম কী হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে রাজ্যের বনবিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, বন্যপ্রাণ বা হামলায় মৃতের পরিবারের আর্থিক ক্ষতিপূরণ তো দেওয়া হয়। এছাড়াও রাজ্য সরকার ওই পরিবারের একজন করে সদস্যকে ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের কাজ দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই ঘোষণা মতো কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বন্যপ্রাণের হামলায় মৃত্যু হওয়া সেই পরিবারে যাতে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকে সেই কথা মাথায় রেখেই ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের কাজ নিয়োগ শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই সবুজ সংকেত দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে আদেশনামাও জারি হয়। সম্প্রতি বনদফতর ওই ৬৭৫ জনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। ওই তালিকায় বন্যপ্রাণ হামলায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে উত্তরের জেলা আলিপুরদুয়ারে। ওই জেলায় মোট ১৬৩ জন ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের চাকরি পাবেন। এছাড়া জঙ্গলমহলের চার জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরেও একাধিক জনকে এই চাকরি দেওয়া হচ্ছে। রয়েছে সুন্দরবন ছুঁয়ে থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাও। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মোট ১৭টি জেলায় বন্যপ্রাণ হামলায় মৃতের পরিবারের একজন সদস্যকে এই চাকরি দেওয়া হচ্ছে।

গত বছর মাঠা বনাঞ্চলের কুদনাতে জ্বালানির জন্য কাঠ কুড়াতে গিয়ে দাঁতালের মুখোমুখি পড়ে প্রাণ হারান বাঘমুন্ডির মাদলা গ্রামের বাসিন্দা ৪৩ বছরের মঙ্গল মুড়া। তাঁর ছেলে সাগর মুড়াকেই বনদফতর ফরেস্ট ভলান্টিয়ারের নিয়োগপত্র দিয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি তিনি বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলে কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে খুশি পরিবারের সদস্যরা।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি