বর্ধমান: মহাভারতের গল্পকম বেশি সকলেরই জানা রয়েছে। অনেকেই হয়ত জানেন যে মহাভারতের রচয়িতা বেদব্যাস। কিন্তু জানেন কী মহাভারত বাংলা ভাষায় কে অনুবাদ করেছিলেন? মহাভারত বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন মহাকবি কাশীরাম দাস। আর এই কাশীরাম দাসের জন্মভিটে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার সিঙ্গি গ্রামে। তবে বর্তমানে ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে মহাকবি কাশীরাম দাসের জন্মভিটে!
বাড়ি ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে দরজার উপর লেখা আছে মহাভারত বাংলা রচয়িতা মহাকবি কাশীরাম দাসের জন্মভিটে । এরপর বাড়ির ভিতর উঠোনে প্রবেশ করলে দেখা যাবে একটি মন্দির যেখানে মহাকবি কাশীরাম দাসের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্দিরটিতে রয়েছে মহাকবি কাশীরাম দাসের পিতা এবং দুই ভাইয়ের মূর্তি। গ্রামের বাসিন্দা আশীষ ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, “আমরা গ্রামবাসীরা এখন এই জায়গার দেখাশোনা করি। পঞ্চায়েত থেকেও নজর দেওয়া হয়। কাশীরাম দাসের বংশধরদের কোনও খোঁজ মেলেনি, থাকলেও আমাদের জানা নেই। অনেকেই এখন এই জায়গা দেখার জন্য আসেন।”
আরও পড়ুনঃ ভিন-ধর্মে মা-বাবার বিয়ে! কেমন কেটেছে ছোটবেলা, কত পেতেন অঙ্কে? অমিতাভ বচ্চনের জীবনের অজানা তথ্য
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে বহু মানুষ আসেন। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু লোকজন এসে ভিড় জমান। এখনও বিভিন্ন সময়ে কাশীরাম দাস সম্পর্কে বিভিন্ন-রকম তথ্য বেরিয়ে আসছে। জানা গিয়েছে, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ কাশীরাম দাসের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও হয়ত এই কাশীরাম দাসের জন্মভিটে রক্ষণাবেক্ষণের দিকে এগিয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ ৩১ অক্টোবর নাকি ১ নভেম্বর দীপাবলি? ঠিক কোন সময় লক্ষ্মী-নারায়ণ পুজোর জন্য সেরা? জানুন জ্যোতিষীর মত
কাশীরাম দাসের স্মৃতি উদ্দেশ্যে যে নতুন মন্দির তৈরি করা হয়েছে তার কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে যখন লোকজনেরা এই জন্ম ভিটে দেখতে আসেন তখন এই ভগ্নপ্রায় জন্ম ভিটে দেখেই তাঁদের ফিরে যেতে হয়। সেই কারণেই কাশীরাম দাসের স্মৃতি উদ্দেশ্যে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এখন এখানে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা আশীষ ভট্টাচার্য্য আরও জানিয়েছেন, “থাকা এবং খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এখানে আরও কিছু দেখার জায়গা রয়েছে। কেউ আগে জানিয়ে এলে সমস্ত ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।”
তবে নতুন মন্দির তৈরিহলেও বর্তমানে বাড়ি জুড়ে অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। উঠোনের একাংশ ভরে গিয়েছে আগাছাতে। ফাটল ধরেছে বাড়ির দেওয়ালেও। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়ির একাংশ। যদি অতিসত্ত্বর মহাকবির এই জন্মভিটের উপর নজর না দেওয়া হয় তাহলে বাড়িতে মন্দির থাকলেও বসত ঘরের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। চিরতরে মুছে যাবে কবির বসত বাড়ির স্মৃতি চিহ্ন।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী