দুর্ঘটনা এড়ালো ধর্মনগর - আগরতলা প্যাসেঞ্জার ট্রেন

Train Accident: ১০০০ যাত্রী নিয়ে ছুটছিল ধর্মনগর-আগরতলা প্যাসেঞ্জার, ট্র্যাকে বাধা! লোকো পাইলট যা করলেন অভাবনীয়!

আগরতলা: ত্রিপুরায় প্রতিকূল আবহাওয়া এবং অবিরাম বৃষ্টির মধ্যে, রেলওয়ে লোকো পাইলট, লোকো ইন্সপেক্টর, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এবং স্টেশন কর্মীদের সতর্কতার মাধ্যমে রেল যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা জানিয়েছেন ২১.০৮.২০২৪ তারিখে, লোকো পাইলট শ্রী আর.এন. কুমার এবং সহকারী লোকো পাইলট শ্রী সুরজিৎ দেবনাথ ট্রেন ০৫৬৭৬ আপ ধর্মনগর – আগরতলা প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যালে কর্মরত সময়ে একটি সম্ভাব্য দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করেন। ট্রেনটি প্রায় ১০০০ যাত্রী নিয়ে বারামুড়া পাহাড়ি এলাকা দিয়ে ধীরে ধীরে যাচ্ছিল। তেলিয়ামুড়া স্টেশন পার হওয়ার পর লোকো পাইলট এবং সহকারী লোকো পাইলট-এ সকাল ১০-১০ টায় আগরতলা থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরে কি.মি. ১৪৯/০২-এ হঠাৎ রেলপথে বাধা লক্ষ্য করেন।

আরও পড়ুন: আরজি কর-কাণ্ডে গোয়েন্দাদের নজরে সন্দীপ ঘোষ, এবার গোপন জবানবন্দির তোড়জোড় CBI-এর

তাঁরা কোনও সময় নষ্ট না করেই জরুরি ব্রেক কষে ট্রেন থামিয়ে দেয়। ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশনে তাঁরা লক্ষ্য করেন যে পাশের পাহাড়ি ঢাল থেকে বিশাল ভূমিধস হচ্ছে, যেখানে রেলওয়ে ট্র্যাকের উপর কাদা ও গাছ রয়েছে। সেই সময় প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ায়, তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে বরিষ্ঠ আধিকারিকের কাছে ফোনে পরিস্থিতি বিষয়ে অবগত করেন। যথাসময়ে জরুরি ব্রেক প্রয়োগ করে যাত্রী ভর্তি ট্রেনটিকে ভূমিধসের ধ্বংসাবশেষের প্রায় ১০০ মিটার আগে থামতে সক্ষম হন।

আরও পড়ুন: নেমপ্লেট আছে, মানুষটাই আর নেই! খাঁখাঁ করছে সোদপুরের চেম্বার, হাওয়ায় শুধু ভাসছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’!

একই রকমের আরেকটি ঘটনায়, তেলিয়ামুরা এবং জিরানিয়া স্টেশনের মধ্যে কিমি. ১৪৬/১-২-এ রেলওয়ে ট্র্যাকের উপর গাছ পড়ে রেলপথ অবরোধের খবর পাওয়ার পর ট্রেন নং. ১৩১৭৪ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে কিমি. ১৪৬/৮-এ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বন্যার জন্য ত্রিপুরার একাধিক বন্যাক্রান্ত অঞ্চলের জনগণ নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই বন্যার সময় বন্যাক্রান্ত মানুষের জন্য উদয়পুর এবং অন্যান্য স্টেশন নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্টেশনগুলিতে বন্যাক্রান্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমস্ত ওয়েটিং রুম, শৌচালয় এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সহ বন্যাক্রান্ত এই মানুষগুলির জন্য দিন রাত ২৪ ঘণ্টা পানীয় জলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থা ঘুরে না আসা পর্যন্ত স্টেশনে আশ্রয় গ্রহণ করা বন্যাক্রান্ত মানুষদের পাশে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে রয়েছে।​

ট্র্যাকের নিকটবর্তী অঞ্চলগুলিত ভূমিধসের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেন পরিচালনের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি প্রতিহত করতে সীমিত গতির সঙ্গে ট্রেনগুলি পর্যবেক্ষণ এবং পরিচালনা করা হচ্ছে। লোকো পাইলট, গার্ড, ট্র্যাকম্যানদের সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে এবং ট্র্যাকের পাশে যে কোনও ধরনের বাধা-বিপত্তির জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত ব্যক্তিতে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আবীর ঘোষাল