আবীর ঘোষাল, কলকাতা: লক্ষ্য ছিল নিচুতলায় মানুষের মন বুঝে নেওয়া। লোকসভা ভোটের পরে সংগঠনে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের মেদ!নাকি আরজি কর আবহে কিছুটা হলেও চিন্তা! বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে সেই মন বোঝার কাজ করল তৃণমূল কংগ্রেস।
১৭ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর ১৪ দিনে ধরে কয়েক শো বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল শাসক দল। আর সেই জনসংযোগ কর্মসূচির মাধ্যমেই সংগঠনের জল মেপে নিল তারা। সূত্রের খবর, ভিড়, যোগদান, পুরনো-নতুন সমন্বয় আর গোঁসা করে বসে থাকা ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেখানো, মুখ ফিরিয়ে রাখা সবটাই বুঝে নিতে চেয়েছে শাসক দল।
আরও পড়ুন– কালীপুজোয় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা কোন কোন জেলায়? ভাইফোঁটার দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে?
আসল লক্ষ্য ২০২৬, আসল লক্ষ্য সংগঠন আরও ধারালো করা।সেই আবহেই বিজয়া সম্মিলনীর চেহারা বুঝে নিল শাসক দল। সূত্র বলছে, উত্তরবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেসকে কয়েক বছর ভাল ফল না দিলেও কোচবিহারকে ভাল নম্বর দিচ্ছে নেতারা। প্রসঙ্গত, এই জেলায় লোকসভার পরে প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে যোগদান হয়েছে, বিরোধী শিবির ছেড়ে এসে।
আসন হারলেও জলপাইগুড়ি হতাশ করেনি শাসক দলকে। তবে শিলিগুড়ি সমতল আর আলিপুরদুয়ার নিয়ে আরও সক্রিয়তা চাইছে শাসক দল।দক্ষিণ দিনাজপুর লোকসভা হার, তার পরেও সেখানে বেশ কয়েকটি জায়গায় ছোট ছোট দ্বন্দ্ব-দূরত্ব নজর এড়ায়নি দলের।তবে উত্তরের সবচেয়ে মাথাব্যথা মালদহ জেলা নিয়ে। লোকসভার দুটো আসন হাতছাড়া। তারপরে গা-ঝাড়া দিয়ে শাসক দলের নেতারা উঠুক চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। বহরমপুর লোকসভার মধ্যে কিছু জায়গায় মন কষাকষি। সাংসদ বনাম নেতা। বীরভূমের দূরত্ব ঘোচাতে খোদ শীর্ষ নেতৃত্ব হাত বাড়িয়েছে। কোর কমিটি না একক দায়িত্ব এই সমস্যা যাতে না ঘটে, সেদিকে কড়া নজর আছে।
বাঁকুড়া লোকসভা আসন শাসক দল জিতেছে। সেখানে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কাজ করছে। তাই সাবধানে আরও যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। বিশেষ করে কয়েকজনের ব্যাপারে নির্দিষ্ট রিপোর্ট এসেছে।বাকি জঙ্গলমহলে জনসংযোগে নেতারা পাস মার্ক পাচ্ছেন। তবে মেদিনীপুর পশ্চিমে ঠান্ডা ঘর ছেড়ে নেমে আরও লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবার বার্তা দিতে পারে শীর্ষ নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর রাজনৈতিক ভাবে চ্যালেঞ্জিং। তবে সেই জেলার বিজয়া সম্মিলনী কেন্দ্রিক রিপোর্ট আশানুরুপ।
হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, দুই বর্ধমান নিয়েও শাসক দল আশ্বস্ত। তবে উত্তর ২৪ পরগণা ও নদীয়ার মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।আর এসবের মধ্যেও পুর এলাকা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেছে শাসক দল। কারণ লোকসভায় কমতে থাকা পুরভোটকে বাড়াতে আগ্রহী তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, প্রাথমিক রিপোর্ট নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে। জনসংযোগে খামতি আর ফাঁক রাখতে রাজি নয় শাসক দল।