আবীর ঘোষাল, কলকাতা: আরজি কর আবহে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে সাংগঠনিক দক্ষতা বুঝে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে চলতি বছরে প্রচুর জায়গায় স্থানীয় নেতৃত্বকে ব্যবহার করা হয়েছে।
এর মধ্যে দিয়েই নিচু তলায় জনসংযোগে নেতারা কতটা পারদর্শী তা বুঝে নিচ্ছে শাসক দল। বহু জায়গায় ব্লক সভাপতি হোক বা দায়িত্বশীল নেতার ভূমিকা নিয়ে নানা তথ্য এসেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে। এরকম বাছাই করা একাধিক জায়গায় শাসক দল বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে রিপোর্ট নিচ্ছে দল। শশী পাঁজা, পার্থ ভৌমিক, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কুণাল ঘোষের মতো নেতা-নেত্রীদের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। আবার যুব, ছাত্র, শ্রমিক সংগঠনের নেতাদেরও একাধিক জায়গায় পাঠানো হয়েছে। সকলের থেকে সম্মিলিত রিপোর্ট নিচ্ছে শাসক দল।
১) লোকসভার পরে তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে মানুষের ধারণা কি রকম?
২) হাতছাড়া হওয়া পুর অঞ্চলে ভীড় কেমন হচ্ছে?
৩) পিছিয়ে থাকা এলাকায় দলের সকলেই নেমেছে কিনা?
৪) স্থানীয় নেতৃত্ব সকলকে নিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচী করছেন কিনা?
সূত্রের খবর, ২০২৬-কে সামনে রেখে সংগঠনে বদল আসতে পারে। সংগঠনে নিচু তলায় বিশেষ নজর দিচ্ছে তারা। তাই আরজি কর আবহের এই জনসংযোগ কর্মসূচীতে নজর শাসক দলের নেতাদের। এই প্রসঙ্গে দলের নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, নিশ্চিত ভাবে সাংগঠনিক ক্ষমতা যাচাই হচ্ছে। একটা এলাকা চালাতে অবশ্যই নেতার প্রয়োজন। সেটাও ধরা পড়ছে। নতুন বক্তা উঠে আসছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবনী শক্তির মিশেল তাতে থাকছে। গঠনমূলক বিষয় এর মধ্যে থাকছে।
রাজ্য জুড়ে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে লড়াইয়ের মাঠ বুঝে নিতেই অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই ঝাঁপাতে শুরু করছে রাজ্যের শাসক দল। এ ব্যাপারে রাজ্যের সমস্ত জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল। গত ১৭ অক্টোবর থেকেই এই বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটিগুলিতে।
জনসাধারণের মন বুঝে নিতে এবং সংযোগ বজায় রাখতে উৎসবের মাসের শুরু থেকেই মাঠে নেমেছে তৃণমূল। দুর্গাপুজোর পর এবার জেলায় জেলায় বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন রাজ্যের শাসক দলের। বিজয়া সম্মিলনীর দৌলতে আগামী নির্বাচনের আগে জনমতের ভিত আরও মজবুত করতেই এই আয়োজন বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এই বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করছে তৃণমূল। উত্তর থেকে দক্ষিণ সবকটি জেলাতেই অঞ্চল ভিত্তিক এই সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মিলনীর মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আগামী লোকসভার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা পাশাপাশি অ্যাসিড টেস্ট করে নেওয়ার জন্যে এখন থেকেই ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমত অবস্থায়, জনসমর্থন কোনও ভাটা পড়ছে কিনা, পড়লে সেটা রোখার কী উপায় রয়েছে, সমস্ত কিছু বুঝে নিতেই মাঠে নামছেন তৃণমূল নেতারা। ইতিমধ্যেই জেলা স্তরের সমস্ত নেতৃত্বকে বিজয়া সম্মিলনী সূচি অনুযায়ী পালন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এই মরশুমের পরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজয়া সম্মলনীতে নেমে পড়েছেন। নিবিড় জনসংযোগ করছেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ভাল কাজগুলি আর একবার জনগণকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারও কোনও প্রস্তাব থাকলে তা গ্রহণ করে নেওয়া। বিরোধীরা যে কুৎসার চক্রান্ত করছে সেগুলিকে ব্যর্থ করতে জনসাধারণকে বাম জমনার অবস্থা ও বিজেপি যে রাজ্যে রয়েছে সেখানকার অবস্থা বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে তুলে ধরছেন।”