ওলা বুক করতেই গাড়ি নিয়ে এলেন মহিলা চালক; লড়াইয়ের কাহিনি শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন যাত্রীও (Photo: Facebook/Ojas Desai)

অ্যাপ ক্যাব বুক করতেই গাড়ি নিয়ে এলেন মহিলা চালক; লড়াইয়ের কাহিনি শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন যাত্রীও

আহমেদাবাদ: বাধ্য হয়ে মানুষকে কঠিন চ্যালেঞ্জেরও সামনে দাঁড়াতে হয়। আর সেই সময় প্রতিকূল পরিস্থিতিও তাঁর সাহসের কাছে হার মানে। সম্প্রতি এক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে, তিনি গুজরাতের আহমেদাবাদে ছিলেন। একটি ওলা ক্যাব বুক করেছিলেন। এরপর তিনি দেখেন যে, তাঁকে পিক-আপ করতে এসেছেন এক মহিলা ক্যাবচালক। আর মহিলা চালক দেখে তাজ্জবই হয়ে যান ওই যাত্রী। তাঁর বক্তব্য, মহিলাদের অটো রিকশা চালাতে তিনি দেখেছেন। কিন্তু কোনও মহিলাকে গাড়ি চালাতে দেখেননি। ফলে খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন ওই যাত্রী। মহিলা ক্যাবচালকের প্রশংসাও করেন তিনি।

আরও পড়ুন– ‘ব্ল্যাক ম্যাজিক’ হোটেলে কী করছিলেন? কীভাবে মৃত্যু হল প্রিসিলিয়ার? ২২ বছরের তরুণী খুনে উঠছে একাধিক প্রশ্ন

ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন ওজস দেশাই। মহিলা ক্যাবচালকের ছবিও শেয়ার করেছেন তিনি। যা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সুরাতের বাসিন্দা ওজস জানান, রেলস্টেশনে যাওয়ার জন্য অ্যাপ ক্যাব বুক করেছিলেন তিনি। আর ক্যাব বুক করার সময় লক্ষ্য করেন, চালকের নামের জায়গায় লেখা রয়েছে – ‘অর্চনা পাটিল’। এরপর ওই মহিলা ক্যাবচালকের বিষয়ে ওজস বলেন যে, অর্চনা খুবই প্রতিশ্রুতিশীল গাড়ি চালক। কারণ আহমেদাবাদের পুরনো ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে দিয়ে দক্ষ হাতে এবং সতর্ক ভাবেই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন– ভয়ঙ্কর কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছিল নাম, মুখ থুবড়ে পড়েছিল নামীদামি তারকাদের কেরিয়ার; জেনে নিন বিশদে

ওজস বলেন, সুরাতে তিনি মহিলা অটোচালক দেখেছেন। কিন্তু এই প্রথম কোনও মহিলাকে তিনি ক্যাব চালাতে দেখলেন! সেই কারণে তিনি অর্চনার সঙ্গে বাক্যালাপ করতে শুরু করেন। এরপর ওজস জিজ্ঞাসা করেন, কেন অর্চনা ক্যাব চালাচ্ছেন? জবাবে অর্চনা বলেন, তাঁর স্বামী ছিলেন ক্যাবচালক। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনি আর ক্যাব চালাতে পারছিলেন না। আর তিনি ক্যাবটি কিনেছিলেন লোন নিয়ে। ফলে প্রতি মাসে ইএমআই শোধ করতে হত। এদিকে অর্চনা শুনেছিলেন যে, ক্যাব চালিয়ে ভাল পরিমাণ অর্থ রোজগার করা সম্ভব। তাই তিনি গাড়ি চালানো শিখতে শুরু করেন। অথচ সাইকেলও চালাতে জানতেন না তিনি। কিন্তু মাস ছয়েকের মধ্যে গাড়ি চালানো শিখে ফেলেন অর্চনা। এরপর লাইসেন্সও পেয়ে যান। তবে ওজস বলেন যে, “যাঁরা গুজরাতে থাকেন, তাঁরা জানেন এখানে পার্মানেন্ট লাইসেন্স পাওয়াটা কতটা কঠিন!” আর সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, দিনে ১৩-১৪ ঘণ্টা ক্যাব চালান অর্চনা। সেই সঙ্গে দু’টি বাড়িতেও কাজ করেন তিনি।

অর্চনার প্রশংসা করে ওজস বলেন যে, সকলের জন্য জীবনটা সহজ নয়। কিন্তু অর্চনা হাল ছাড়েননি। বরং তিনি চ্যালেঞ্জের সঙ্গে লড়াই করছেন। ওই ক্যাবচালকের সঙ্গে মজা করেছেন ওজসও। অর্চনাকে জানিয়েছেন যে, তিনি অর্চনার নম্বর সেভ করে নিচ্ছেন। এরপর আহমেদাবাদ এলে অর্চনার সঙ্গেই যোগাযোগ করবেন। কিন্তু জবাবে অর্চনা বলেন যে, ওজস এভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না। কারণ যোগাযোগ করতে হলে তাঁকে শুধুমাত্র ওলার মাধ্যমেই করতে হবে। এর থেকেই বোঝা যায় যে, নিজের নিরাপত্তা নিয়েও বেশ সচেতন অর্চনা! ওজসের এই পোস্টে লাইকের সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ পোস্টটি শেয়ার করেছেন। এমনকী কমেন্ট বাক্সেও জমা পড়েছে হাজার হাজার মানুষের মন্তব্য।