Water Problem: দীর্ঘদিনের অভিযোগের অবসান! অবশেষে মার্চেই জলকষ্ট থেকে মুক্তি শহরের এই ওয়ার্ডের

কলকাতাঃ পর পর সাজানো বালতি ভর্তি জল। বাথরুমের সামনে ছোট মাঝারি রকমের দুটো রিজার্ভার। তাতেও জল ভর্তি। এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কয়েকটা গলি পেরিয়ে আরও একটা বাড়ি। সেখানে কল তলায় তিন তিনটি রিজার্ভার। সব কটি জল ভরে রাখা আছে। ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গলির বাঁক নিতেই দেখা গেল মধ্য চল্লিশের এক গৃহবধূ টিউবওয়েল অর্থাৎ চাপা কল থেকে জল ভরছেন। সঙ্গে দু থেকে তিনটি বালতি। এই ছবিগুলো দেখলে বুঝতে অসুবিধা নেই যে এই মানুষগুলো কাটান তীব্র জলকষ্টে। এই ছবি খাস কলকাতার ব্রহ্মপুর ও সংলগ্ন এলাকার।

আরও পড়ুনঃ বেলগাছিয়ায় বিধ্বংসী আগুন! ঘটনাস্থলে দমকলের ১২টি ইঞ্জিন

জলকষ্টের অভিযোগ বহুবছরের। সেই সঙ্গে পানীয় জলের দাবি বহু দিনের। অবশেষে মিলতে চলেছে পানীয় জল। শুধু তাই নয়, তাঁদের জন্য তাঁদেরই এলাকাতেই তৈরি হয়েছে জলাধার। সব ঠিক থাকলে মার্চের গোড়া থেকেই নতুন জলাধার থেকে জল পাবেন এলাকাবাসী। যে খবরে খুশির ছোঁয়া এলাকায়। ১৯৮৬ সালে কলকাতা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয় গড়িয়ার ব্রহ্মপুর, কামডহরি, আতাবাগনের বিস্তীর্ণ এলাকা। ওয়ার্ড নম্বর ১১১।

বাম আমল হোক বা তৃণমূল সরকারের প্রথম দশ বছর, এলাকায় কান পাতলেই একটি অভিযোগ সবার প্রথমে আসে। অভিযোগ জলকষ্টের। অর্থাৎ কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত হলেও এই ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের মূল সমস্যা পানীয় জলের সমাধান হয়নি দীর্ঘ বছর। দাবির পর দাবি জমা পড়েছে। সমস্যা মেটাতে এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে নলকূপ বা চাপা কল বসানো হয়েছে। অন্য ওয়ার্ড থেকে পাইপের মাধ্যমে জল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু জলকষ্ট মেটেনি।

আজও এলাকার মানুষ বাড়িতে একাধিক রিজার্ভার, বালতি বালতি জল ভরে রাখেন। বাইরের নলকূপ থেকে জল ভরে ব্যবহার করেন দৈনন্দিন কাজে । আর পানীয় জল কিনে নেন। এই সমস্যার এবার সমাধান হতে চলেছে। ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লিতেই তৈরি করা হয়েছে নয়া জলাধার। ৩.২ মিলিয়ন গ্যালন জল ধারন ক্ষমতার এই জলাধার তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৮ কোটি টাকা। যে জলাধারের মাধ্যমে মার্চের শুরু থেকেই ওয়ার্ডের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে পানীয় জল।
যা নিয়ে আশাবাদী এলাকার কাউন্সিলর সন্দীপ দাস। তিনি বলেন, নিজেও এই এলাকার বাসিন্দা তাই জলকষ্ট কী নিজে ভুক্তভোগী। সাধারণ মানুষের প্রধান ও প্রথম চাহিদা জল সমস্যা মেটাতে এই জলাধার করা হয়েছে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও কলকাতা পুরসভার সহযোগিতার ফলেই এই কাজ করা সম্পন্ন হয়েছে ।জল পাওয়ার আশাতে খুশি এলাকাবাসীও।

এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা পাপিয়া দাস বলেন, ‘জল ছাড়া কি কোনও কাজ হয়! কিন্তু এই জলের জন্য কতবার কতজনের কাছে তদবির করতে হয়েছে আমাদের। বালতি বালতি জল ভরে রাখতে হয়। এই কষ্ট মিটবে শুনছি। মার্চ মাস থেকে নতুন জলাধার থেকে আমরা জল পাব। ভীষণ খুশি আমরা।’ রানু কর ওই এলাকার গৃহবধূ। তিনি বলেন, ‘রীতিমতও জল নিয়ে ঝামেলা ঝগড়া বেধে যায়। বাইরের কল থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। এতদিন পর কাউন্সিলর মুখ চেয়ে দেখেছেন । বাড়িতে জল আসবে নতুন ট্যাঙ্ক থেকে। সত্যি আমরা খুশি।’