রাজবাঁধ 

Weekend Trip: লাল মোরামের মেঠো পথ, সপ্তাহান্তে সামান্য খরচে ঘুরে আসুন ওড়িশা সীমান্তের এই বাঁধে, মুগ্ধ হবেন

ঝাড়গ্রাম: ঘুরতে যাওয়া আপনাদের সকলের কাছে একটি শখ। তাও যদি হয় নিত্যনতুন কোনও ডেস্টিনেশন তবে অন্তত একবার সেই জায়গা থেকে ঘুরে আসতে মন চায়। প্রতিদিনই ভ্রমণ প্রিয় বাঙালিরা নিত্যনতুন ডেস্টিনেশনের জন্য মুখিয়ে থাকেন। যদিও এই বাংলায় রয়েছে নানান সুন্দর সুন্দর ঘোরার জায়গা। শীতের ছুটি হোক কিংবা অন্যান্য সময় একদিনের ছুটিতে ঘুরে আসা যেতেই পারে বাংলা ওড়িশা সীমানায় থাকা এই সুন্দর মনোরম জায়গা থেকে।

নেই কোন যানবাহনের শব্দ, নেই কোনও কোলাহল, যতদূর দুচোখ যায় তত দূরে শুধু সবুজ আর সবুজ। তাই মন ভাল করার শ্রেষ্ঠ ঠিকানা বাংলা ওড়িশা সীমানায় থাকা এই জলা বাঁধ। এখানে এলে দুই রাজ্যের ভাষাকে, তাদের সংস্কৃতি উপভোগ করতে পারবেন। শুধু তাই নয় এখানকার ইতিহাস আপনাকে নিয়ে যাবে সুদূর অতীতে। তাই অন্তত একদিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন এই জায়গা থেকে।

আরও পড়ুনঃ কলকাতা থেকে দার্জিলিং পৌঁছন মাত্র ১৫ মিনিটেই! কীভাবে সম্ভব? পর্যটকদের জন্য দারুন খবর

পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা সীমানা এলাকায় রয়েছে প্রায় ৪ কিলোমিটারে বেশি দীর্ঘ এটি বাঁধ। যেখানে সংরক্ষিত রয়েছে জল। মূলত পানীয় জল এবং চাষির জলের সরবরাহের জন্য উনবিংশ শতকে নির্মিত হয়েছিল, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও সেই প্রাচীনত্বের ধারাকে বজায় রেখেছে বাঁধের পাশে থাকা পুরানো আম গাছগুলি। স্বাভাবিকভাবে তৎকালীন সময়ে রায়বনিয়া দুর্গের অনতি দূরে সেচের কাজ এবং পানীয় জলের জন্য নির্মিত হয়েছিল এই জলা বাঁধটি। এই বাঁধের নাম রাজবাঁধ বা রাজাবাঁধ।

বাঁধের পাশে প্রাচীন আম গাছগুলি প্রাচীন রাজকীয়তা বজায় রেখেছে। লাল মোরাম দিয়ে তৈরি উঁচু একটি বাঁধ। যার এক পাশে পশ্চিমবঙ্গের নয়াগ্রাম ব্লক, অন্যপাশে ওড়িশার জলেশ্বর ব্লক। বাংলা এবং ওড়িশা রাজ্যের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই বাঁধটি বর্তমানে ওড়িশা সরকারের অধীন। বাঁধের একপাশে রয়েছে মোটা মোটা প্রাচীন আম গাছ। যা এই এলাকায় প্রাচীনত্বের ধারাকে অব্যাহত রেখেছে। অপর পাশে নীল জলরাশি। স্বাভাবিকভাবে পর্যটন মানচিত্রে আর অন্যতম দিশা এই জায়গা।

আরও পড়ুনঃ সকাল-বিকেলে পাউরুটি খান? বৃষ্টিতে কিন্তু খুব সাবধান…! প্যাকেট খুলতেই যা মিলল, ভাবলেও ভয়ে সিঁটিয়ে যাবেন

গ্রামের মানুষ জলে জাল পেতে মাছ ধরছে। স্বাভাবিকভাবে শহরের কোলাহল, অফিসের কচকচানি থেকে নিজেকে একটু রেহাই দিতে এই জায়গায় এলে ফুরফুরে বাতাসের সঙ্গে এক আলাদা আমেজ মিলবে। ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম থেকে মাত্র সামান্য কিলোমিটার দূরে এই বাঁধ। একদিকে যেমন গ্রামীণ পরিবেশ, অন্যদিকে দুই রাজ্যের সংস্কৃতি এবং ভাষার মেলবন্ধনের পাশাপাশি এমন সুন্দর একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনার মন ভাল করবে। শুধু তাই নয়, লাল মোরামের রাস্তার উপর দিয়ে আচ্ছাদিত হয়েছে আম গাছের শাখা প্রশাখা, একবার না দেখলে বিশ্বাস হবে না কতটা সুন্দর হতে পারে প্রকৃতি? তাই অন্তত একদিনের ছুটি নেই ঘুরে দেখুন এই জায়গা।

কীভাবে যাবেন এই জায়গা? কলকাতা থেকে ট্রেনে এলে আপনাকে নামতে হবে খড়গপুর রেলওয়ে স্টেশনে। সেখান থেকে আপনাকে বাস কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে কেশিয়াড়ি হয়ে আসতে হবে ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের খড়িকামাথানি। সেখান থেকে মাত্র ৯-১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই জায়গা। বাসে এলে খড়িকাগামী বাসে নামতে হবে খড়িকামাথানিতে। সেখান থেকে টোটোতে আসা যাবে। রয়েছে বাংলার শেষ সীমানা নয়াগ্রাম ব্লকের নেকড়াশোল গ্রাম।

অন্যদিকে, দাঁতন হয়ে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে সামান্য কিছুটা এলেই পড়বে এই জায়গায়। ট্রেনে এলে কলকাতা থেকে আসতে হবে দাঁতন। সেখান থেকে ছোট গাড়ি ধরে সুবর্ণরেখা উপর দিয়ে ফেয়ারওয়েদার সেতু পেরিয়ে ওড়িশা। সামান্য এগোলেই পড়বে এই জায়গা। তবে নয়াগ্রাম দিক দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যন্ত সুলভ।

গুগল লোকেশন : https://maps.app.goo.gl/nHma61FN54XWkEhp6

 রঞ্জন চন্দ