ফ্যাকাসে, বর্ণহীন, ধূসর চুলের সমাধান আছে কোনও? সাদা চুল কি সত্যিই আবার কালো হতে পারে? আজ এই প্রতিবেদনে তারই উত্তর খুঁজবো আমরা। জেনে নিন আপনার চিরকালীন সমস্যার আসল উত্তর।আজকাল প্রায়ই সবাই সাদা চুল ঢাকতে নানা রকম বাজার চলতি হেয়ার ডাইয়ের শরণাপন্ন হন। কারণ ফ্যাকাসে চুল চোখের নিমেষে বয়স বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুন। তাই ঝটপট সমাধানের জন্য সেই কৃত্রিম রঙই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।কিন্তু জানেন কী সাদা চুল কালো করার উপায় শুধুমাত্র অ্যামোনিয়া ভিত্তিক চুলের রঙ প্রয়োগ করাই নয়। আছে আরও কিছু দুর্দান্ত কার্যকরী উপায়। তাই যদি আপনার চুল সময়ের আগেই ধূসর হতে শুরু করে, তবে আপনি প্রাকৃতিক উপায়েও কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং সাদা চুলকে আবার কালো করতে পারেন চাইলেই।আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীক্ষা ভাবসার তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এমনই ৫টি প্রতিকারের কথা জানিয়েছেন, যেগুলি চুলের অকালপক্কতা রোধ করবে। আসুন জেনে নিই কী ভাবে বানাবেন এই মিশ্রণ। ড ঋষি পরাশর, দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বিভাগ বলেন, “সাধারণত চুলের ফলিকলে মেলানিন পিগমেন্টের অনুপস্থিতির কারণে চুল সাদা হয়ে যায়। এর জন্য ব্যবহার করা যায় নিম্নলিখিত সহজ প্রাকৃতিক প্রতিকার।জেনে নিন দারুণ কিছু ঘরোয়া প্রতিকার-সহ ধূসর চুলের সমাধান: সাদা চুল কালো হতে পারে চুল পেকে যাচ্ছে অকালেই? তাই নিয়ে লজ্জার শেষ নেই? বয়স ঢাকতে নিচ্ছেন নানা বাহারি উপায়। কিন্তু আপনি শুনলে অবাক হবেন আপনি চাইলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার সাদা চুল আবার কালো হতে পারে! বস্তুত চুল কালো হওয়া নির্ভর করে পিগমেন্টেশনের ওপর। যা আপনি সঠিক যত্ন এবং সঠিক খাদ্যের মাধ্যমে একটু একটু করে বাড়াতে পারেন।তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চুল আগের মতো কুচকুচে কালো হয় না। কিন্তু চুল সম্পূর্ণ সাদা আর থাকে না বরং চুলের স্বাভাবিক রং চলে আসে। এ কারণে তাদের আলাদাভাবে নজরে পরে না।জেনে নিন দুটি প্রতিকার আজ আমরা আপনাদের সাদা চুল কালো করার দুটি বিশেষ ঘরোয়া প্রয়াস ও পরীক্ষিত প্রতিকার শেয়ার করছি এই প্রতিবেদনে। আপনি এই প্রতিকারের উপর অন্ধের মতো বিশ্বাস করতে পারেন। কারণ এগুলির কোনও সাইড এফেক্ট নেই।আমলা পাউডার এবং হেনার পারফেক্ট মিক্স কী ভাবে আমলার সঠিক মিশ্রণ তৈরি করবেন? আমলা চুলের প্রাকৃতিক পিগমেন্ট বাড়াতে কাজ করে। রাতে ঘুমানোর আগে ১০ থেকে ১২ চামচ আমলকির গুঁড়ো বা এক মুঠো শুকনো আমলা দুই কাপ জলে ভিজিয়ে একটি লোহার পাত্রে রাখুন। যদি আপনার চুল লম্বা হয় তাহলে সেই অনুযায়ী আমলার পরিমাণ বাড়ান।যদি আপনি শুকনো আমলকি ভিজিয়ে থাকেন তবে সকালে সেগুলি পিষে নিন। যাতে একটি পেস্ট তৈরি হয়। এবার সারারাত ভিজিয়ে রাখা আমলায় ২ চা চামচ কফি পাউডার ও ৩ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন।এক কাপ আমলা মিশ্রণের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ কফি এবং লেবু নিতে হয়। অর্থাৎ, আপনি যদি এক কাপের বেশি আমলার মিশ্রণ নিয়ে থাকেন, তাহলে প্রতি কাপের জন্য দুই চা চামচ কফি পাউডার এবং তিন চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন।কী ভাবে সঠিক পরিমাণে মেহেন্দি পাউডার মেশাবেন? প্রতি কাপে ৩ থেকে ৪ চামচ মেহেন্দি পাউডার নিন। সামগ্রিকভাবে, আপনাকে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে, যা আপনি চুলে লাগাতে পারেন।জলের পরিমাণ সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে। কারণ এটি নির্ভর করে আপনি আমলা গুঁড়ো ভিজিয়েছেন নাকি শুকনো আমলা। অতএব, সেই অনুযায়ী মেহেন্দির পরিমাণ ব্যালান্স করুন যাতে একটি পেস্ট তৈরি হয়।দু’ ঘণ্টা পেস্ট লাগিয়ে রাখতে হবে এই পেস্টটি আপনার চুলে এমনভাবে লাগান যাতে গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত চুলে পেস্টটি ভাল ভাবে লাগানো হয় এবং পুরো মাথা ঢেকে যায়। এটি করার পরে আপনি একটি শাওয়ার ক্যাপ পরে নিতে পারেন।যাতে পেস্টের কারণে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখবেন। কারণ এতে আপনার জামা কাপড় এবং ত্বক নষ্ট হওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। এইভাবে দুই ঘণ্টা পেস্টটি চুলে লাগিয়ে রাখুন তারপর ফ্রেশ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই সময় আপনাকে শ্যাম্পু করতে হবে না।পরের দিন এই পদ্ধতিতে শ্যাম্পু করুন চুল শুকানোর পর মাথায় চুলের তেল লাগান। সারারাত রেখে পরের দিন সকালে শ্যাম্পু করে ফেলুন। শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন এবং এটি তিন মাস একটানা করুন। আপনি দ্রুত পার্থক্য দেখতে শুরু করবেন চুলের রঙে। আপনি যদি এই প্রতিকারের নিয়মিত ব্যবহার আরও চালিয়ে যেতে পারেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনার মাথায় সাদা চুল চোখেই পড়ছে না মোটে। ট্রাই করেই দেখুন।চুল কালো করার আরেকটি উপায় হল পেঁয়াজের রস পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে মিক্সারে দিয়ে পিষে নিন। এবার ছেঁকে এর রস বের করুন। এই রস আপনার চুলের গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত সপ্তাহে তিনবার লাগান এবং ২০ থেকে ৪০ মিনিট রাখার পর শ্যাম্পু করুন।এই রেসিপিটি নিয়মিত অবলম্বন করলে আপনার চুল স্বাভাবিকভাবেই কালো হতে শুরু করবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে। আপনি একবারেই পর্যাপ্ত রস তৈরি করতে পারেন এবং এটি সারা সপ্তাহ ব্যবহার করার জন্য ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন।মানে একবারেই তিনবারের জুস বানাতে পারেন। তাই এটি করতে বড় কোনও ঝঞ্ঝাট ও নেই। প্রতিবার লাগানোর পর শ্যাম্পু করতে হবে এমন নয়। মাত্র দুবার শ্যাম্পু করুন এবং একবার সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কোনও সমস্যা হবে না। হাতেনাতে পাবেন রেজাল্ট।দাবিত্যাগ: প্রিয় পাঠক, আমাদের এই প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুধুমাত্র আপনাদের সচেতন করার উদ্দেশ্যেই এটি লেখা হয়েছে। আমরা এই লেখায় ঘরোয়া প্রতিকার ও সাধারণ তথ্যের সাহায্য নিয়েছি। এটি গ্রহণ করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
