এটাহ, উত্তর প্রদেশ: মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল মায়ের৷ এই নিয়ে অশান্তির জেরে নিজের মেয়েকেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মা৷ সেই মতো ৫০ হাজার টাকায় সুপারি কিলারও ভাড়া করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু ওই মহিলা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি, মেয়েকে খুনের সুপারি যাকে দিচ্ছেন, সেই ব্যক্তিই আসলে মেয়ের প্রেমিক! শেষ পর্যন্ত মেয়ের প্রেমিকের হাতে খুন হতে হল ওই মহিলাকেই৷ মাকে খুন করার বিনিময়ে পাল্টা ওই সুপারি কিলারকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেয় ওই মহিলারই মেয়ে!
চাঞ্চল্যকর এমনই ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশের এটাহ জেলার জসরথপুর থানা এলাকায়৷ গত ৬ অক্টোবর একটি ক্ষেতের ভিতর থেকে ৪২ বছর বয়সি অলকা দেবী নামে স্থানীয় এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়৷ এর পরেই পুলিশি তদন্তে গোটা ঘটনা সামনে আসে৷ ইতিমধ্যেই সুভাষ নামে ওই সুপারি কিলার এবং মৃতার মেয়েকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷
গত ৫ অক্টোবর অলকা দেবী নামে ওই মহিলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান৷ দেহ উদ্ধারের পর মহিলার স্বামী রমাকান্ত দেহ শনাক্ত করেন৷ স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে অখিলেশ এবং অনিকেত নামে দু জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান তিনি৷
অতীতে এই দু জন মিলে অলকা দেবী নামে ওই মহিলার মেয়েকে অপহরণ করেছিল৷ এই ঘটনায় পুলিশ অখিলেশকে গ্রেফতারও করে৷ নিরাপদেই উদ্ধার করা হয় অলকা দেবীর মেয়েকে৷ এই ঘটনায় ভয় পেয়ে গিয়েই সম্ভবত মেয়েকে ফারুখাবাদ জেলায় সিকন্দরপুর খাস গ্রামে নিজের মেয়েকে পাঠিয়ে দেন অলকা দেবী৷
কিন্তু সেখানেই তৈরি হয় বিপত্তি৷ মামা বাড়িতে গিয়ে ৩৮ বছরের সুভাষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় অলকা দেবীর মেয়ে৷ এই সুভাষ আবার অতীতে দশ বছর জেল খাটা আসামী৷ কথা বলার জন্য নিজের প্রেমিকাকে একটি মোবাইল ফোনও দেয় সুভাষ৷
মেয়ের এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরেই রেগে আগুন হয়ে যান অলকা দেবী৷ এমন কি, মেয়েকে প্রাণে মারারই সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ মেয়েকে মারার জন্য সুভাষকেই ভাড়া করেন অলকা দেবী৷ মেয়েকে খুন করতে পারলে সুভাষকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার টোপ দেন তিনি৷ ওই মহিলা জানতেও পারেননি, এই সুভাষই আসলে তাঁর মেয়ের প্রেমিক! সুভাষও অলকা দেবীকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি৷ উল্টে অলকা দেবীর গোটা পরিকল্পনার কথা তাঁর মেয়ের কাছে গিয়ে ফাঁস করে দেয় সুভাষ৷
মা তাকে খুন করার ছক কষেছে জেনে পাল্টা চাল দেয় অলকা দেবীর মেয়ে৷ মাকে খুন করার জন্য সুভাষের সঙ্গেই ষড়যন্ত্র করে সে৷ বিনিময়ে সুভাষকে বিয়ে করবে বলে কথা দেয় সে৷ এর পরেই খুনের সাজানো ছবি পাঠিয়ে অলকাদেবীকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে সুভাষ এবং তার প্রেমিকা৷ কিন্তু তার পরেও অলকাদেবী সুভাষকে প্রতিশ্রুতি মতো ৫০ হাজার টাকা দেননি৷ এর পরেই অলকাদেবীকে মেয়েকে নিয়ে আগ্রায় আসতে বলে সুভাষ৷ গোটা পরিকল্পনার কথা জানত অলকা দেবীর মেয়েও৷ এর পর আলিয়াগঞ্জের নাগলা চন্দন এলাকায় নিয়ে গিয়ে অলকাদেবীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দু জন৷ তদন্তে নেমে সুভাষ এবং তার প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷