হুগলি: জমিদারির পতন ঘটেছে অনেক বছর হল, মল্লরাজাদের জমিদারি ছেড়ে চলে এসেছিলেন আরামবাগের ভালিয়া গ্রামে। সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন নিজেদের বংশের কূলদেবতাকে। আর নিয়ে এসেছিলেন বাংলার এক প্রাচীন শিল্পকলা, টেরাকোটা মন্দির। ভালিয়া গ্রামের সরকার পাড়ায় রয়েছে সেই প্রাচীন টেরাকোটা মন্দির।
বাংলার প্রায় ১৬৯৪ শকাব্দ, ইংরেজির প্রায় ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দ সময়ে তৈরি হয় এই মন্দির। গোটা মন্দির জুড়ে রয়েছে রামায়ণ-মহাভারত কৃষ্ণ লীলার কাহিনির বিবরণ। ব্রিটিশ লেখক ডেভিড জে. ম্যাককাচিয়ন সাহেব তার গ্রন্থে পরিবারের রঘুনাথ মন্দিরটিকে ট্রিপল আর্চওয়েতে বারান্দা-সহ একটি চালা হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তিনটি খিলান বিশিষ্ট এই মন্দিরটি একেবারে ভগ্ন দশা হয়ে গিয়েছিল একসময়। পরিবারের উদ্যোগেই আবারও সংস্কার করা হয়েছে। মূলত চুনসুরকির তৈরি এই মন্দিরের পুরানে বিভিন্ন কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মাত্র ৫ উপায়ে হরমোনজনিত সমস্যা থাকবে বশে! রইল জলের মত সহজ ৪-৫ টোটকা, হাতেনাতে পাবেন ফল
পরিবারের বর্তমান সদস্য সাযুজ্য সরকার বলেন, তাদের এই মন্দিরের বর্তমান যে পরিস্থিতি তা এক বছরের মধ্যেই হয়েছে। আগে একেবারে ভগ্ন দশা হয়ে গিয়েছিল। কারণ সাড়ে ৩০০ বছরের এই মন্দির এই প্রথমবার সংস্কার করা হয়েছে। মন্দিরে ঠিক যেভাবে টেরাকোটার কাজ আগে ছিল তারই সংস্করণ হয়েছে। তাদের এই মন্দির তাদের কুলদেবতা রঘুনাথ জিউ-এর মন্দির। মন্দিরের ভিতরে গর্ব গৃহে রাখা রয়েছে সেই শিলা। তার বাহন গরুর দেবের মূর্তিও রয়েছে সেখানে। গোটা মন্দির জুড়ে রামায়ণ মহাভারতের বিভিন্ন কাহিনী দৃশ্য টেরাকোটায় রয়েছে।
মূলত পোড়া মাটি চুনসুরকি দিয়ে এই টেরাকোটা তৈরি হত। তারা এখনও অষ্টম প্রজন্ম। আগামী প্রজন্মের মানুষের কাছে এই টেরাকোটা শিল্পের মন্দির যাতে তারা দেখতে পারেন সেই কারণেই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাহী হালদার