আমঘাটা: দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার অবশেষে অবসান। দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর অবশেষে গড়ালো আমঘাটা স্টেশন থেকে ট্রেনের চাকা। প্রথমে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি ডিভিশনের আধিকারিকরা ট্রলি করে কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটা স্টেশন। তারপর বিকেল প্রায় পৌনে চারটে নাগাদ হুইসেল বাজিয়ে কৃষ্ণনগর থেকে নতুন লাইনের গতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে একটি ইঞ্জিন সহ ১২ বগির ট্রায়াল ট্রেন আমঘাটা হল্ট স্টেশনে পৌঁছাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য মানুষজন।
পূর্ব রেলের পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হতেই সকাল থেকেই দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করে আমঘাটা হল্ট স্টেশনে। কখন আসবে সেই সন্ধিক্ষণ। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হল বুধবার বিকেলে। ইঞ্জিন সহ ১২ বগি একটি ট্রেন যখন প্রবেশ করল আমঘাটা হল্ট স্টেশনে। এ বিষয়ে শিয়ালদা ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম জানান, আজ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি ডিভিশনের আধিকারিকরা নতুন রেলপথের গতির পরীক্ষার নিরীক্ষা চালালেন। খুব শীঘ্রই তারা রিপোর্ট জমা দেবেন।
কবে থেকে এই রেলপথ চালু হবে, এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, অনুমোদন পেলেই চালু হয়ে যাবে আমঘাটা হল্ট থেকে কৃষ্ণনগর রেল পরিষেবা। রেল ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর হয়ে নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত ন্যারোগেজ রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। তার আগেই, ৭ জানুয়ারি তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ন্যারোগেজ লাইনকে ব্রডগেজে পরিবর্তন করার প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। প্রায় ২৭ কিলোমিটার এই লাইনের জন্য রেল বাজেটে অর্থ অনুমোদনও করা হয়। শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ব্রডগেজের কাজ শেষ করে কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত কাজ শুরু হয়।
কিন্তু এই পথেই প্রথম বাধার সম্মুখীন হতে হয় ফকিরতলার কাছে। নানা কারণে ওই এলাকায় জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি উঠতে থাকায় আমঘাটা পর্যন্ত রেললাইন তৈরি হয়ে প্রকল্প থমকে যায়। সেই থেকে বেশ কয়েক বছর থমকে থাকার পরপুনরায় শুরু হয় কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটা হল্ট লাইনের কাজ। এদিকে কাজ শুরু হতেই সেদিন থেকেই এলাকার বহু মানুষ দিন গুনতে শুরু করে,কবে চালু হবে এই রেলপথ।
অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে আর কিছুদিনের মধ্যেই সাধারণ মানুষদের জন্য খুলে দেওয়া হবে আমঘাটা হল্ট স্টেশন। তবে এরই মাঝে খানিকটা আক্ষেপের সুর দেখা গেল স্বরূপগঞ্জবাসীদের মনে। নবদ্বীপ ঘাট স্টেশন থেকে কবে তারা সরাসরি ট্রেন ধরে চলে যেতে পারবেন শিয়ালদা সেই প্রতীক্ষাতেই রয়েছেন তারা!
Mainak Debnath