রানীবালা সরকার 

Lok Sabha Election 2024: বাড়িতে বসে নয়, ১০৪ বছরে লাইনে দাঁড়িয়েই ভোট দেবেন আমডাঙার রানিবালা!

উত্তর ২৪ পরগনা: হাতে পায়ের জোর কমেছে বয়সের ভারে। পাল্লা দিয়ে কমেছে চোখের দৃষ্টিশক্তিও। তবুও আজ বাড়িতে বসে নয়, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা ১০৪ বছরের এলাকার সবচেয়ে প্রবীণ এই বৃদ্ধার। লাঠি হাতে গণতন্ত্রের উৎসবে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে গিয়েই দেবেন ভোট দাবি আমডাঙার মরিচার বাসিন্দা রানিবালা সরকারের। বর্তমানে তার বয়স ১০৪ বছর।

তবুও তিনি জানান, “আমি নিজেই ভোট দিতে যাব, লাঠি হাতে।” কথা বলে জানা যায়, স্বামী নরেন সরকার মারা যান বহুবছর আগে। তাঁদের ছয় ছেলেমেয়ে। এক ছেলে মারা গিয়েছেন, আর একজন নিখোঁজ। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে বর্তমান। নয় জন নাতি, আর ছয় জন নাতনি নিয়ে রানীবালা দেবীর ভরা সংসার। আমডাঙার পশ্চিম মরিচা এলাকায় বড় মেয়ে বাসন্তী দাসের বাড়িতেই থাকেন তিনি। আর এখানেই দেন ভোট। ১০৪ বছরে আজ কানেও অনেকটা কম শোনেন। কাছে গিয়ে জোরে কথা বললে তবেই শুনতে পান। তবে রোগভোগ খুব একটা নেই বলেই জানালেন পরিবারের সদস্যরা।

 

স্বাভাবিক ভাবেই খাওয়া দাওয়াও করেন রানিবালা দেবী। প্রতি সন্ধ্যায় নিয়ম করে টিভিতে বাংলা সিরিয়ালও দেখেন এখনও। তবে লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারেন না। রাজ্য সরকারের তরফে বিধবা ভাতা পান। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় ৯৯ বছরে ছিলেন রানীবালা। সেই সময় কিছু সমস্যার জন্য ভোটগ্রহণ কেন্দ্র পর্যন্ত যেতে পারেননি। নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপে বাড়িতে বসেই ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর গত বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়েই। শতবর্ষ পার করে এবারই তার প্রথম লোকসভার ভোট। তাই বাড়ির পাশে মরিচা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রানীবালা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমডাঙা তল্লাটে রানীবালা সরকারের মতো প্রবীণ ভোটার নেই বললেই চলে।

তাই সব রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাই ভোট চাইতে আসছেন তাঁর বাড়িতে। অস্পষ্ট ভাষায় রানীবালা বলেন, “গতবার লোকসভা বাড়িতে বসেই ভোট দিয়েছি। এবার লাঠি হাতে গিয়ে ভোট দিতে যাব। বাড়িতে বসে আমি ভোট দেব না। মেয়ে জামাইকে সঙ্গে নিয়ে আমি ভোট দেব।” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই বৃদ্ধা জানান, “দিদি অনেক কাজ করে শুনেছি। ওঁর সরকারি ভাতা আমি পাই”!

বড় মেয়ে বাসন্তী দাস জানান, এ তল্লাটে মায়ের বয়সী ভোটার নেই। মা এবার বুথে গিয়েই ভোট দেওয়ার কথা বলেছে। আমি সঙ্গে যাব। ভোট দেওয়ার প্রতি মায়ের বড্ড ঝোঁক। আগের নির্বাচনগুলিতে লাঠি হাতে ভোট দিয়েছেন আর এবারও দেবে। ভোটদানে উৎসাহ জোগাতে বৃদ্ধার এমন আগ্রহ নতুন ভোটারদেরও উদ্বুদ্ধ করবে বলেই মত ভোটের দায়িত্বে থাকা জেলার ভোট কর্মীদের।

Rudra Narayan Roy