শীতলকুচি: চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে কোচবিহারের তিন কৃতি ছাত্রী রয়েছে মেধাতালিকায়। তবে মেধা তালিকা ছাড়াও এমন বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যারা ভাল ফলাফল করেছে। এমনই এক ছাত্রী ডালিয়া রায়। কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমার শীতলকুচি ব্লক। এখানের গোঁসাইরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ডালিয়া তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৯। ডালিয়া পরবর্তীতে নার্সিং নিয়ে পড়ে নার্স হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাঁর লক্ষ্য সমাজের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা। অভাবে পরিবারের ছাত্রীর এমন সাফল্যে রীতিমতো খুশি তাঁর বাবা-মা ও আত্মীয় পরিজনের। এছাড়া খুশি হয়েছেন তাঁর এলাকার মানুষেরাও।
ডালিয়া জানায়, “কোনও বাঁধা নিয়ম ধরে সে পড়াশোনা করতে পারেনি। তবে পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ ছিল অনেকটাই বেশি। দিনের অধিকাংশ সময় পড়াশোনার পিছনেই অতিবাহিত করতে। তার বাবা পেশাগতভাবে একজন সবজি বিক্রেতা। তাই পারিবারিক আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তবে এতকিছুর পরেও তাঁর বাবা তাকে পড়াশোনার বিষয় নিয়ে কোনদিনও বাধা দেননি। তবে তার ইচ্ছে ছিল সাইন্স নিয়ে পড়ার। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তবে সেই আক্ষেপ সেই পূরণ করতে চায়। ভবিষ্যৎ দিনে সে নিজেকে একজন নার্স রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় সমাজের বুকে।”
ডালিয়ার মা মীনাক্ষী রায় জানান, “মেয়ে যা করতে চায় তাতেই তাঁদের মত রয়েছে। ডালিয়ার বাবা সামান্য সবজি বিক্রি করে সংসার চালান। তাইতো অনেকটা কষ্ট করেই সংসার চালাতে হয়। মেয়ের পড়াশোনার পেছনে খরচ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সেজন্য অনেকটাই চিন্তায় রয়েছেন তাঁর বাবা। তবে ডালিয়ার ছোট থেকেই অদম্য ইচ্ছে পড়াশোনার প্রতি। ভবিষ্যতে মেয়ে আরও অনেকটাই সাফল্য অর্জন করুক এমনটাই প্রত্যাশা তাঁদের।”
ডালিয়ার এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তাঁর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তাঁরাও চান আগামী দিনে যেন ডালিয়া আরও অনেকটা সফলভাবে নিজেকে সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তবে শীতলকুচি ব্লকের মধ্যে গোঁসাইরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ডালিয়া সম্ভবত ব্লকের মধ্যে প্রথম হয়েছে। তাইতো ভবিষ্যৎ দিনে ডালিয়াকে দেখে আরও অনেকেই অনুপ্রাণিত হবে। আর্থিক বাধা জয় করে ডালিয়ার এই সাফল্য ভবিষ্যৎ পরীক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণা।
Sarthak Pandit