করলা নদী দূষণ 

Bangla Video: উত্তরের ‘টেমস’ করলা যেন আজ সবুজ ঘাসে ভরা মাঠ!

জলপাইগুড়ি: ক্রমেই বাড়ছে দূষণ। কচুরিপানা, টোপা পানা, আবর্জনায় পরিপূর্ণ জলপাইগুড়ির হৃদয় করলা নদীর বক্ষ। কমছে গভীরতা। স্রোতবিহীন অবস্থায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে উত্তরের ‘টেমস’নামে পরিচিত জলপাইগুড়ির করলা নদী।

শহরের ফুসফুসের বিপন্ন দশা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের তরফে প্রকাশিত তালিকাতেও। যা জলপাইগুড়িবাসীর জন্যে সুখকর খবর নয়।
অথচ এক সময়ের এই করলার জল ছিল স্বচ্ছ, পরিস্কার। যে কারণে এই করলাকে ইংল্যান্ডের ‘টেমস’ নদীর সঙ্গে তুলনা করা হতো। এখন সেখানে দূষণের মাত্রা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। নদী এখন কচুরিপানা, আবর্জনায় পরিপূর্ণ। করলা নদীর জলের মাঝখানে রয়েছে পুকুরের মত আস্তরণ।

আরও পড়ুন: অঞ্জনা নদীর তীরে বসে কবিতা লিখেছিলেন রবি ঠাকুর, সেই স্মৃতি ধরে রাখতে…

থার্মোকল, নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের মত আবর্জনায় ভরা নদীবক্ষ। স্রোত হারানো নদীতে বেড়েছে শ্যাওলার সংসার। দূর থেকে দেখলে মনে হবে নদীর চেহেরা বিকৃত হয়েছে। হারাচ্ছে নদীর নাব্যতাও। বলাই বাহুল্য, শহরের নিকাশি নালা দিয়ে বয়ে আসা গরলের ছোঁয়ায় সুন্দরী করলা কৃশ হয়ে এখন ধুঁকছে। নদীর পরিষ্কার রাখতে বা নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এর আগেও জেলা প্রশাসনের তরফে আলোচনা হয়েছিল। কথা হয়েছিল করলা অ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ভোট আসে ভোট যায়, এই নদীকে বাঁচিয়ে রাখার কথা কেউ ভাবে না। এমনটাই অভিযোগ জানান নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। বর্তমানে জলপাইগুড়ি শহরের বাবুঘাট থেকে শুরু করে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত করলা নদীর বুক নোংরা আবর্জনায় ভরা। বারংবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত নদীর কোনও সংস্কার হয়নি। তাই সকল মানুষই চান এবার অন্তত নদীর সংস্কার হোক। তা না হলে করলা নদীকে বাঁচিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।

এই বিষয় নিয়ে সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক তথা পরিবেশপ্রেমী রাজা রাউত উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, করলা নদী যদি এইভাবেই কচুরিপানা, আবর্জনায় ভরে থাকে তবে দ্রুত এই নদী মুছে যাবে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে। তাই নিজেদের স্বার্থেই এগিয়ে আসতে হবে করলাকে বাঁচাতে। নোংরা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সুরজিৎ দে